জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে হবে ১০ তলা ভবনের বিদ্যালয়

  • ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ভবন জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ক্লাসরুমের সংকট দীর্ঘদিনের। আর সে সংকট সমাধানে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংকট দূর করতে গৃহীত এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা পর্যায়ে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো হবে ৬ তলা ভবনের। আর জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ের বিদ্যালয় হবে ১০ তলা ভবনের।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের মোট ৩৩৫টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১২টি বিদ্যালয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের অধীন ভিন্ন একটি প্রকল্পের মাধ্যমে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত আছে। অবশিষ্ট ৩২৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। কারণ এরমধ্যে বেশিরভাগ ভবন জরাজীর্ণ। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আসন সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে জরাজীর্ণ ভবনসহ নানা সমস্যা দূর করতে উপজেলা পর্যায়ে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় হবে ৬ তলা এবং জেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে হবে ১০ তলা ভবনের বিদ্যালয়। ফলে প্রকল্পভুক্ত বিদ্যালয়গুলোতে প্রতি বছর ৭৬ হাজার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীসহ ২ লাখ ৮২ হাজার ২শ জন অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি হবে। এবং ৯ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২৪টি ছাত্রাবাস নির্মাণ হবে।

বিজ্ঞাপন

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন প্রকল্পটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য হলো, শিক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহে বিরাজমান আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করা, ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থীর চাহিদা পূরণ করা এবং অধিকতর শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার মানোন্নয়ন করা, যাতে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে একাডেমিক ভবন নির্মাণ, দুর্গম এলাকায় ছাত্রাবাস নির্মাণ, আসবাবপত্র, কম্পিউটার সামগ্রী, বই, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করা হবে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে থাকবে মাল্টিমিডিয়া ও স্মার্ট ক্লাসরুম। সেই সঙ্গে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৩২৩টি নতুন একাডেমিক ভবনের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৪৯টি। যার মধ্যে ১২৪টির দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৪১টির। আর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ২৫টির। এছাড়াও ১৭৪টি ভবন নির্মাণের কাজ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে হওয়ায় ডিপিপি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত সেগুলোর দরপত্র আহ্বান করা যাচ্ছে না। ২০২১ সালের মধ্যে এর কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রফেসর মো: নাসির উদ্দিন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, সরকারি মাধমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্পের কাজ চলছে। আমরা ইতোমধ্যে অনেকগুলোর দরপত্র অনুমোদন করেছি। বাকিগুলোও শীঘ্রই হয়ে যাবে। এ প্রকল্পের মাধ্যেম আমরা উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে একাডেমিক ভবন নির্মাণ করব। যেখানে ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম থাকবে। মাল্টিপারপাস হল, আইসিটি ল্যাব, লাইব্রেরিতে বই, সব ধরনের আসবাবপত্রসহ সবকিছুই আমরা সেখানে দেব। খেলাধুলার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও বিতরণ করা হবে। আর শিক্ষকদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে যাতে করে তারা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে শিক্ষা প্রদান করতে পারে। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২৪টি ছাত্রাবাস নির্মাণ হবে।

এ বিষয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরি নওফেল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলোর সার্বিক উন্নয়ন করা হবে। এর মধ্যমে আমদের বিদ্যালয়গুলোর ধারণ-ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। খেলার মাঠ, অডিটোরিয়াম, ল্যাবসহ সব সুবিধাই সেখানে থাকবে। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থার উন্নয়ন হবে বলে আমরা আশা করছি।