সপ্তাহ জুড়ে দরপতন, পুঁজি কমেছে ১৮ হাজার কোটি টাকা

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর

দরপতনের মধ্য দিয়ে অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পার করল দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ। প্রত্যাশার এই সপ্তাহেও সূচক, লেনদেন ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। আর তাতে নতুন করে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে ১৮ হাজার কোটি টাকা।

বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল নতুন সপ্তাহে পুঁজিবাজারে উত্থান হবে। তারা হারানো অর্থ ফিরে পাবেন। কিন্ত হলো ঠিক তার উল্টো। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে চারদিন লেনদেন হয়েছে। চারদিনই বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে।

বিজ্ঞাপন

ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, বর্তমানে দুই পুঁজিবাজারে ২৫ লাখ ৬৪ হাজার বেনিফিশিয়ারি ওনার্সধারী (বিও) বিনিয়োগকারী রয়েছে। এর মধ্যে গেল সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর বিনিয়োগকারীদের মূলধন অর্থাৎ পুঁজি কমেছে ৯ হাজার ৩৮৮ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং সিএসইর বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে ৮ হাজার ৭১৬ কোটি ৫০ লাখ ৮ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে পতন অব্যাহত

বিজ্ঞাপন

প্রতিনিয়তই পুঁজি হারিয়ে চরম হতাশায় দিন পার করছেন বিনিয়োগকারী, ব্রোকারেজ হাউস কর্তৃপক্ষসহ শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই।

ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ উদ্যোগের পর মনে হয়েছিল বাজার ভালো হবে। কিন্তু আবারও দরপতন হচ্ছে। এখন বাজার তলানিতে আছে। শেয়ারবাজার কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরিচালক বলেন, ‘বাজার একটি সিন্ডিকেটের হাতে। গত ৫ মাস ধরে প্রত্যাশায় আছি বাজার ভালো হবে, কিন্তু কোনো সুখবর দেখছি না। আমার মনে হয়, বর্তমান কমিশনের (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খায়রুলে হোসেনের পদত্যাগ ছাড়া বাজার ভালো হবে না।’

দুর্গাপুজা উপলক্ষে গত মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ থাকায় বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট চার কার্যদিবস ৩৫৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কেনা বেচা হয়েছে। তাতে মোট ১ হাজার ২৭৬কোটি টাকা ৮৭ লাখ ৮ হাজার ৩০৩ টাকা লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৬৮২কোটি ৮১ হাজার ২০৫ টাকা কম। শতাংশের হিসেবেও ৩৪ দশমিক ৮২ শতাংশ কম। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৯৫৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮৯ হাজার ৫০৮ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে দিনে গড় লেনদেন হয়েছে ৩১৯কোটি ২১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এর আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৩৯১কোটি ৭৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।

আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে সূচক নিম্নমুখী

লেনদেনের পাশাপাশি ডিএসইর প্রধান সূচক আগের সপ্তাহের ১২৭ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮১০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সূচক ৫২ পয়েন্ট কমে ২ বছর ১০ মাস ১০ দিন বা ৬৯৩ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে গেছে। অর্থাৎ বাজার সামনে বাড়ার পরিবর্তে প্রায় বছরের পুরনো অবস্থায় ফিরে গেছে। ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৮০১ পয়েন্টে।

এছাড়া ডিএসইর অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে ৩০ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক কমেছে ২৫ পয়েন্ট। বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ৩০৫টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২টির।

অপর বাজার সিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৫২ কোটি ৯৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৫ টাকা। লেনদেন হওয়া ৩০০ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৫টির, কমেছে ২৪৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টির। আর তাতে সিএসইর প্রধান সূচক ৩৬৭ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ৬৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।