পাইকারি বাজার পেরুলেই দাম বেড়ে দ্বিগুণ
মাছ-মাংস, শাক-সবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে প্রতিদিন কারওয়ান বাজারে ভিড় জমান রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। খুচরা ক্রেতাদের পাশাপাশি পাইকারি দরে বাজার করতে এখানে আসেন খুচরা ব্যবসায়ীরাও। তারা কারওয়ান বাজার থেকে পণ্যসামগ্রী কিনে নগরীর অন্যান্য বাজারে বিক্রি করেন খুচরা দামে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ পাইকারি বাজার থেকে বের হলেই পণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে পণ্যের দাম আর খুচরা ব্যবসায়ীদের হাত বদলে যাওয়া দামে বিস্তর ফারাক দেখা যায়।
পাইকারি সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাইকারি দরে পটল কেজি ১৫ টাকা কিন্তু খুচরা বিক্রি ৪০ টাকায়। একইভাবে কচু লতি ২৫ টাকা কিনে খুচরা বিক্রি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, চালকুমড়া প্রতি পিস ১০ টাকা দরে কিনে বিক্রি হয় ২০/২৫ টাকায়, কাঁচাকলা হালি ১৫ টাকায় কিনে বিক্রি ২৫ টাকায়, করলা প্রতি কেজি ১৫ টাকায় কিনে বিক্রি ৩০/৩৫ টাকা, লাউ ২০ টাকায় কিনে বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।
তবে লাগামহীন বৃদ্ধি পেয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। পাইকারি বিক্রেতাদের থেকে প্রতি কেজি ৩৫/৩৬ টাকায় কেনা মরিচ খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ৭০ টাকারও বেশি দরে।
বাজার সূত্রে জানা যায়, কারওয়ান বাজারের পাইকারি বেচাকেনা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে পাশেই শুরু হয় খুচরা বিক্রি। রাতভর যেখানে পাইকারি বিক্রি হয়েছে সেখানে সকাল থেকে চলে খুচরা বিক্রি। রাতের ফুরিয়ে সকাল হতেই দাম বেড়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ। কারওয়ান বাজারে পাইকারির চেয়ে দ্বিগুণ দামে কাঁচাবাজার করেও অনেক ক্রেতা স্বস্তি প্রকাশ করেন। কারণ, কারওয়ান বাজার থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে গেলেই কোনো কোনো পণ্যের দাম তিন থেকে চার গুণ বেশি হয়ে যাবে।
নিয়মিত কারওয়ান বাজারে আসেন সরকারি কর্মকর্তা শাহজাহান সরকার। বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, আমি বনশ্রীতে থাকি, সময় সুযোগ পেলেই সকালে চলে আসি কারওয়ান বাজারে। এখানে যে সবজির মূল্য ৩০ টাকা বনশ্রীতে গেলে তার মূল্য দাঁড়ায় ৫০ টাকার বেশি।
ঈদের পরে প্রথম দিন বাজারে এসেছেন জানিয়ে শাহজাহান বলেন, রোজায় যে দামে সবজি কিনলাম ভেবেছিলাম এখন তার চেয়ে কম দামে পাওয়া যাবে। এসে দেখি দামটা আগের মতোই।
কারওয়ান বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিদিন ইজারা তুলেন হাজী মোহাম্মদ জাকির হোসেন। বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, পাইকারি বাজার শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টায়, শেষ সকাল ৭টায়। এরপর পাইকারি বিক্রি আর থাকে না। সকালের পর বাজার মূল্যের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে। তারা তাদের মতো দাম রাখেন।
সবজির পাইকারি ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, আমরা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছি। বলতে গেলে অনেকটা কেনা দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে ছেড়ে দিচ্ছি। এখন বাজারে তেমন মানুষ নাই। সবজির যোগান প্রচুর। সে দিক থেকে ক্রেতা নেই বললেই চলে।
দাম নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানান খুচরা ব্যবসায়ীরা। মোহাম্মদ মঞ্জিল নামে এক খুচরা ব্যবসায়ী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঈদের পরে সব মানুষ এখনও ঢাকায় ফেরেনি। দুই-একদিনের মধ্যেই মানুষ ফিরবে, আমাদের বিক্রিও বেড়ে যাবে।