ঢাকায় বসবে ২২টি কোরবানির পশুর হাট

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা: আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন স্থানে মোট ২২টি কোরবানির পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে গাবতলী হাট স্থায়ী, বাকিগুলো অস্থায়ী। ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষ আগ্রহী হাট উদ্যোক্তাদের মধ্যে ইজারা চুক্তি সম্পন্ন করেছে। তবে দক্ষিণ এলকার কয়েকটি এবং উত্তরে একটি হাটের ইজারা বাকি রয়েছে।

ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুল মালেক এবং ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

কোরবানি পশুর চিকিৎসা সেবা দিতে ঢাকার গাবতলী হাটে ৪টি মেডিকেল টিম থাকবে। এছাড়া রাজধানীর প্রতিটি হাটে চিকিৎসা টিমে ১জন ভেটেরিনারি সার্জন, ১জন টেকনিক্যাল কর্মী (ভিএফএ/ইউএলএ) এবং একজন করে শেরেবাংলানগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্র্নি ভেটেরিনারি সার্জন থাকবেন বলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। 

হাট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকায় গবাদি পশুর ব্যাপারি ও খামারিরা ঈদের সপ্তাহখানেক আগ থেকে হাটে আসলেও আনুষ্ঠানিক বিক্রি শুরু হবে ঈদের চারদিন আগ থেকে এবং ঈদের দিনও এ বিক্রি চলবে। এসব হাটে পাওয়া যাবে গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, উট এবং দুম্বা।

বিজ্ঞাপন

প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এবং মাংস ব্যবসায়ী সমিতির তথ্যমতে (আনুমানিক) ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীতে ৫ লাখের বেশি গবাদি পশু কোরবানি হয়। এর সিংহভাগ গরু। 

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে গাবতলী স্থায়ী হাট, উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্বর পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের খালি জায়গা, মিরপুর ডিওএইচ এর উত্তর পাশের সেতু প্রোপার্টি সংলগ্ন খালি জায়গায়, মিরপুর সেকশন-২ (ইস্টার্ন হাউজিং) এর খালি জায়গা, মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়ক সংলগ্ন (বছিলা) পুলিশ লাইনের খালি জায়গা, আশিয়ান সিটি হাউজিং, খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা, ভাটারা এবং উত্তর খান হাট।

দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার অস্থায়ী হাটের মধ্যে মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠ সংলগ্ন খালি জয়গা, ব্রাদার্স ইউনিয়নের বালুর মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, কমলাপুর স্টেশনের আশপাশের খালি জায়গা, ঝিগাতলার হাজারীবাগ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যানের বাড়ির মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ সংলগ্ন খালি জায়গা, আরমানিটোলা খেলার মাঠ সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা (গুলিস্তান মাওয়া মহাসড়ক ও গুলিস্তান সদরঘাট সড়ক ব্যতীত), ধূপখোলা ইউ অ্যান্ড ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গা, পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন খালি জায়গা, দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, শ্যামপুর খালি জায়গা সংলগ্ন খালি জায়গা এবং সাদেক হোসেন খোকা মাঠের পাশে ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খালি জায়গা।

ঈদ-উল-আজহায় কোরবানির হাটে ‘ভেটেরিনারি-সেবাসংক্রান্ত’ আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে।

সভা থেকে জানানো হয়েছে, এ বছর সারাদেশে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ১ কোটি ১৬ লাখ। এর মধ্যে গরু-মহিষ ৪৪ লাখ ৫৭ হাজার এবং ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ৭১ লাখ। গতবছর এ সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৪ লাখ। তবে এবছর কোরবানিযোগ্য হৃষ্টপুষ্ট গরু-মহিষের সংখ্যা প্রায় ২৯ লাখ ২০ হাজারের অধিক এবং ছাগল-ভেড়া ১৮ লাখ ২৬ হাজারের বেশি। বাকিগুলো অনুৎপাদনশীল গরু-মহিষ ও ছাগল-ভেড়া।

পশুর হাট বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, হাটে পশুর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রতিটি ছোট হাটে অন্তত ১টি, বড় হাটে ২টি করে এবং ঢাকার গাবতলী হাটে ৪টি মেডিক্যাল টিম থাকবে। রাজধানীর প্রতিটি টিমে ১জন ভেটেরিনারি সার্জন, ১জন টেকনিক্যাল কর্মী (ভিএফএ/ইউএলএ) এবং একজন করে শেরেবাংলানগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্র্নি ভেটেরিনারি সার্জন থাকবেন। গতবছর সারাদেশের ২ হাজার ৩৬২টি পশুর হাটে মোট ১ হাজার ১৯৩টি মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালন করে।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানিয়েছে, গতবছরের ন্যায় এবছরও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর গবাদিপশুর খামারগুলোতে স্বাস্থ্যহানিকর রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে ল্যাবরেটরি-পরীক্ষার ব্যবস্থা ছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ প্রাণী স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর স্টেরয়েড ও হরমোনজাতীয় ওষুধের বিক্রয় ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিবে। এছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় এসব দ্রব্য চোরাই পথে আসা বন্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোরভাবে মনিটরিং এবং জেলা-উপজেলা প্রশাসনসহ পুলিশ প্রশাসন পল্লি চিকিৎসকদের এসব ব্যবহার রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।