বোগোটায় মেয়েরা সবচেয়ে বেশি যৌন হয়রানির শিকার

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

যৌন হয়রানির বিচারে মেয়েদের বসবাসের জন্য সারাবিশ্বে সবচেয়ে খারাপ শহর হচ্ছে কলম্বিয়ার বোগোটা। প্লান ইন্টারন্যাশনালের ‘বিশ্বজুড়ে মেয়েদের নিরাপত্তা’ শীর্ষক জরিপের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

মেয়ে ও অল্প বয়সী নারীরা বৃহত্তর পরিসরে কী ধরণের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ভোগেন তা জানার জন্য ছয় মহাদেশের ২২টি শহরে এ জরিপ পরিচালনা করেন প্রায় ৪০০ জন বিশেষজ্ঞ।

বিজ্ঞাপন

জরিপে পাওয়া যায়, দিনে অথবা রাতে মেয়েদের একা বাইরে বের হওয়ার জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক শহর হচ্ছে পেরুর লিমা। এদিকে চুরি, ডাকাতি ও যৌন হয়রানি অথবা ধর্ষণের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শহর হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ।

জরিপ অনুযায়ী, যৌন হয়রানি ও মেয়েদের একা বাইরে বের হওয়া অথবা গণ-পরিবহণ ব্যবহারে সবচেয়ে নিরাপদ শহর হচ্ছে সুইডেনের স্টকহোম।

বিজ্ঞাপন

বিভিন্ন সমাজ ও সংস্কৃতির শহর ও সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে মেয়ে ও কম বয়সী নারীরা কী ধরণের বিপদের সম্মুখীন হন তার উপর এটি প্রথম জরিপ। এতে বলা হয়, যৌন হয়রানি লক্ষ লক্ষ জীবনকে প্রভাবিত করে এবং এখনও অনেক অজানাই রয়ে গেছে।  

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেয়ে ও কম বয়সী নারীরা যে ধরণের যৌন হয়রানির শিকার হন তার মধ্যে রয়েছে

মেয়েদের সাথে মারামারি করা, উত্ত্যক্ত করা, স্পর্শ করা, মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করা- যা তাদের নিরাপত্তা হুমকির জন্য দায়ী।

জরিপে অংশ নেওয়া কমপক্ষে ৭৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন যৌন হয়রানিই মেয়েদের চরম ঝুঁকির জন্য দায়ী এবং ৭৭ শতাংশ বলছেন যে এটি তাদের শহরে হারহামেশাই ঘটে।

তাছাড়াও, ৬০ শতাংশ বলেছেন তাদের শহরে কখনও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেনি অথবা কর্তৃপক্ষের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি।

জোহানেসবার্গ ও বগোটায় জরিপে অংশ নেওয়া সকলেই একমত হয়েছেন যে তাদের শহরে যৌন হয়রানির ঝুঁকি সর্বোচ্চ পর্যায়ের।

বোগোটাকে কীভাবে মেয়ে ও কম বয়সী নারীদের জন্য নিরাপদ করে গড়ে তোলা যায় জানতে চাইলে একজন বলেন, জেন্ডার আদর্শ পরিবর্তন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে পুরুষদের বিশ্বাস, তারা মনে করে উন্মুক্ত স্থান ও নারীর শরীর তাদের সম্পদ। এটি নারীদের নিজেদেরকে আরও নিরাপদ ভাবতে সাহায্য করবে।

অন্য উত্তরদাতারা আরও কয়েকটি সমাধানের কথা বলেন। যেমন, ছেলে-মেয়েদের জেন্ডার আদর্শের প্রশিক্ষণ দেওয়া ও সচেতনতা বাড়ানো।

কেউ আবার মনে করেন শহরের অবকাঠামোর উন্নয়ন দরকার। যেমন, রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা, প্রকাশ্যে মদ্যপান নিষিদ্ধ করা। এদিকে অনেকে মনে করেন এই বিদ্যমান অবস্থার পরিবর্তনে রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা দরকার এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি দরকার।

টরেন্টোর এক উত্তরদাতা মনে করেন, সরকারের নিরাপত্তা পরিকল্পনায় আরও মেয়ে ও নারী প্রয়োজন।

জাকার্তার এক উত্তরদাতা বলেন, ‘অবশ্যই নারী ও মেয়েদের অধিকারের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।’

‘মেয়ে ও নারীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তায় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আইন থাকা উচিৎ।’