মদিনায় হাজিদের সেবায় পূর্ণতা খুঁজেন কামাল মীর

  • জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

মদিনা আল মুনাওয়ারা (সৌদি আরব) থেকে: ‘আমি বাংলাদেশি। বাংলাদেশ আমার প্রাণ। মদিনায় আমাদের কোম্পানির পাঁচ ও চার তারকা মানের হোটেলে বহু দেশের মানুষ থাকেন। তবে বাংলাদেশি হলে ভিন্ন কথা। মহান আল্লাহর সম্মানিত মেহমান হিসেবে নিজ দেশের হাজি সাহেবদের একটু বাড়তি সেবা দিতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। আমার প্রত্যক্ষ তদারকিকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় আসা হাজিরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সরকারি কর্মকর্তারা আমাদের সেবার মানের প্রশংসা করেছেন। এটাই আমাদের প্রাপ্তি।’

কথাগুলো বলছিলেন দিনা আল মুনাওয়ারায় আল আনসার হোটেল গ্রুপের অপারেশন ম্যানেজার মো. শাহাদাৎ কামাল ওরফে কামাল মীর (৪০)।

বিজ্ঞাপন

কামাল মীর বলেন, ‘নিজে বাংলাদেশি বলেই বাড়তি আগ্রহ নিয়ে দেশের হাজিদের আমাদের সেবার আওতায় নিয়ে আসি। এ জন্য সরকারের বেঁধে দেয়া স্ট্যান্ডার্ড আমাদের ফলো করতে হয়েছে। অন্যদিকে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে উন্নত মানের আবাসন আর খাবার নিশ্চিত করতে হয়েছে। এটাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।’

তিনি বলেন, ‘পিক সময়ে প্রতিযোগিতামূলক কম রেট অফার করায় আর্থিকভাবে হয়তো আমাদের কোম্পানির আয় কিছুটা কমেছে। তবে আমি কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে পেরেছি, বাংলাদেশি হিসেবেও নিজ দেশের মানুষদের প্রতি আমার একটা কমিটমেন্ট আছে। এতোগুলো মানুষ এই হোটেলকে যখন চিনবে ভবিষ্যত বিপণনের জন্য সেটাও ভালো বিনিয়োগ। আলহামদুলিল্লাহ। কর্তৃপক্ষ আমার ওপর আস্থা রেখেছে। শেষ পর্যন্ত আমরা সরকারি ব্যবস্থাপনায় আসা হাজিদের সেবা দিতে পেরেছিলাম।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল সম্মানিত হাজি সাহেবদের সেবা নিশ্চিত করা। কারণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় আসা হাজিদের সেবার মানের বিষয়ে সরকারের সুনামও জড়িত।’

একটি ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে কামাল মীর বলেন, ‘এখানে এমনও হয়েছে- একজন হাজি সাহেব আমাদের হোটেলে ভুলে নিজের ওষুধ ফেলে গেছেন। আমরা সে সময় নিজ দায়িত্বে তা মক্কায় পৌঁছে দিয়েছি।’

প্রসঙ্গত, প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে এবার বাংলাদেশ সরকারের ব্যবস্থাপনায় আসা ৬৭৯৮ জন হাজিকে মদিনার মসজিদ নববী থেকে নিকটদূরত্ব ও সুবিধাজনক স্থানে থাকা ও খাওয়ার দায়িত্বে ছিল আল আনসার হোটেল গ্রুপ।

এদিকে কামাল মীর শরীয়তপুর জেলার ডামুড্যা থানার দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামের ডা, মীর আব্দুর রবের ছেলে। তিন ভাই তিন বোনের মধ্যে দ্বিতীয় কামাল মীরের বাবা ছিলেন কিং ফাহাদ হসপিটালের চিকিৎসক। ১৯৮৪ সালে বাবার কর্মসূত্রে সৌদি আরব আসেন তিনি।

ঢাকা কলেজ থেকে সমাজ বিজ্ঞানে মাস্টার্স, পর্যটন করপোরেশনের অধীনে হোটেল ম্যানেজমেন্ট ডিপ্লোমা কোর্স করে পাঁচ তারকা হোটেলে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন কামাল মীর। ওবেরয় মদিনা, মুভিনপিক, আল দাখিল হোটেলে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। দেশে এসে ইউটা ফ্যাশনে অ্যাডমিন ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন। পরে এলিগেন্ট গ্রুপের করপোরেট অফিসে অ্যাডমিন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতে গিয়ে ২০১৭ সালের অক্টোবরে ফিরে যান সৌদিতে। অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন আল আনসার হোটেল গ্রুপের প্রতিষ্ঠানে। সেই থেকে চাকরির পাশাপাশি মদিনায় বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কাজের সঙ্গেও জড়িত কামাল মীর।