অ্যাঙ্গোলায় এখনও ইসলাম স্বীকৃত ধর্ম নয়

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অ্যাঙ্গোলার মুসলমানরা রাস্তায় নামাজ আদায় করছেন, ছবি: সংগৃহীত

অ্যাঙ্গোলার মুসলমানরা রাস্তায় নামাজ আদায় করছেন, ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলা। এটি আফ্রিকার সপ্তম বৃহত্তম দেশ। আফ্রিকার সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী রাষ্ট্র হওয়ার পরও বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর অন্যতম তারা।

স্বাধীনতার পর টানা ২৭ বছর গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটি ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে।

বিজ্ঞাপন

দরিদ্র এই দেশটি এখনও ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। তেল রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা এলেও মূলত দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না।

অ্যাঙ্গোলার রাজধানীর নাম লুয়ান্ডা। ১২ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ বর্গকিলোমিটার দেশটির জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। এর ৯৩ ভাগই খ্রিস্টান।

বিজ্ঞাপন

অ্যাঙ্গোলায় মুসলমানদের সংখ্যা প্রায় ৯ লাখ বলে জানিয়েছেন সেখানকার মুসলিম কমিউনিটির প্রধান ডেভিড আলবার্তো জামেল। ৯ লাখ মুসলিমের বসবাস হলেও দেশটিতে স্বীকৃতি নেই ইসলাম ধর্মের। যদিও ইসলাম বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধর্মস্থানীয় ধর্ম।

আলবার্তো জামেল অনইসলাম ডটনেটকে বলেন, যদিও অ্যাঙ্গোলাতে অনেক আগে থেকেই ইসলামের শিকড় প্রোথিত রয়েছে, কিন্তু ইসলাম দেশটিতে প্রসার লাভ করে ১৯৯০ সালের দিকে পশ্চিম আফ্রিকান দেশ মালি, সেনেগাল ও গিনি থেকে গণহারে অভিবাসনের মাধ্যমে।

তিনি বলেন, অ্যাঙ্গোলার ধর্ম জাতির বিশেষ বাস্তবতা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। যার রাজনৈতিক ইতিহাস সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শ ও বহু বছরের গৃহযুদ্ধের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। রাজনৈতিক ও আইনি সংস্কারের গতি এখানে খুবই ধীর। আগের শাসকেরা ইসলাম ধর্ম ইস্যুতে ততটা উদার ছিলেন না। ফলে অ্যাঙ্গোলার মুসলমানেরা আজ অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন। বর্তমানে এখানে সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যুগুলোর একটি হচ্ছে ধর্মবিষয়ক আইন।

২০০৪ সালে সেখানে যে আইন করা হয়, তাতে বলা হয় যেকোনো ধর্মকে অবশ্যই রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত হতে হবে। এর কমপক্ষে এক লাখ সদস্য থাকতে হবে এবং দেশের দুই-তৃতীয়াংশ জায়গায় তাদের উপস্থিতি থাকতে হবে। এ ছাড়া কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে বৈধ করতে হলে ওই ধর্মের লোকদের কমপক্ষে ৬০ হাজার স্বাক্ষরের প্রয়োজন হবে।

অ্যাঙ্গোলায় বর্তমানে এক হাজার ধর্মীয় সম্প্রদায় রয়েছে, যাদের মধ্যে মাত্র ৮৪টিকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে।

আলবার্তো জামেল বলেন, ইসলাম এখন এখানকার বাস্তবতা, যা অস্বীকার করা যায় না। এখন তারা ৬০ হাজার স্বাক্ষর গ্রহণের কর্মসূচি পালন করছেন। তিনি বলেন, আগে এ সংখ্যাটি এক লাখ ছিল। পরে আইন সংশোধন করে তা ৬০ হাজারে নামিয়ে আনা হয়।

২০১৩ সালের দিকে খবর আসে, অ্যাঙ্গোলা সরকার সেদেশে ইসলাম ধর্মকে নিষেধ ঘোষণা করেছে এবং দেশটির মসজিদগুলোও ধ্বংসের কাজ শুরু করেছে। যদিও পরে এ খবরের সত্যতা মেলেনি। কিন্তু এটা বাস্তব, দেশটিতে মুসলমানরা বেশ চাপে আছেন।