হজের ফিরতি ফ্লাইট শেষ, এজেন্সির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নিষ্পত্তি শুরু

  • মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কা শরিফ, সৌদি আরব, ছবি: সংগৃহীত

মক্কা শরিফ, সৌদি আরব, ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের হজ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সৌদি আরবের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে আটটায় বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৬৭৬ ফ্লাইটটি জেদ্দা কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হজ টার্মিনাল থেকে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এটি ছিল হজের শেষ ফিরতি ফ্লাইট। এই ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার পর জেদ্দাস্থ হজ টার্মিনালের সব কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সিলর মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, পবিত্র হজপালনে আসা বাংলাদেশি হাজিরা হজের সব কার্যক্রম শেষ করে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দেশে প্রত্যাবর্তন করেছেন। সৌদি আরবের ইমিগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী সব হাজি দেশে ফিরে গেছেন। তবে মক্কায় ২ জন ও মদিনায় ৪ জন হাজি এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাজিদের মধ্যে ১ লাখ ১৮ হাজার হাজি নিয়মিত হজ ফ্লাইটে ও অন্যরা থার্ড ক্যারিয়ারে নিজ দায়িত্বে টিকিট করে দেশে ফিরেছেন।

চলতি বছর সরকারি ও বেসরকারি ৫৯৮টি হজ এজেন্সির মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্সের ৩৬৫টি ফ্লাইটে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৫২ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) বাংলাদেশি সৌদি আরব আসেন।

বিজ্ঞাপন

৪ জুলাই হজ ফ্লাইট শুরু হয়ে ৫ আগস্ট শেষ হয় এবং ১০ আগস্ট পবিত্র হজ পালিত হয়। হজ শেষে ১৭ আগস্ট থেকে ফিরতি হজ ফ্লাইট শুরু হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স হাজিদের সৌদি আরবে আনা-নেওয়া করেছে।

হজপালনে সৌদি আরবে এসে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ১১৭ জন বাংলাদেশি হাজি মারা যান। যার মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার পাঁচ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১১২ জন হাজি রয়েছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ১০০ ও নারী ১৭ জন। ১১৭ জনের মধ্যে মক্কায় ১০২ জন, মদিনায় ১৩ এবং জেদ্দায় দু’জন মারা যান।

এদিকে হজ চলাকালীন সময়ে সৌদি আরবে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে বেশকিছু বেসরকারি হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে। মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ অফিসে দায়েরকৃত এসব অভিযোগের কিছু কিছু যথাসময়ে নিষ্পত্তি বা সমাধান করা হলেও গুরুতর অভিযোগগুলো ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে ন্যস্ত করা হয়। সেগুলোর তদন্ত ও দু’পক্ষের উপস্থিতিতে শুনানী শেষে নিষ্পত্তি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে এক হজ এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল, একটিকে আর্থিক জরিমানা ও অন্যটিকে সতর্ক করা হয়েছে। হজ মিশন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার প্রায় ৬০টি এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে।

অভিযোগ গুরুতর হওয়ায় এয়ার লাইফ ইন্টারন্যাশনাল হজ এজেন্সির (লাইসেন্স নং ৬০৩) জামানত বাজেয়াপ্তসহ লাইসেন্স বাতিল করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। আর মেসার্স মুসাফির ট্রাভেলসকে (হজ লাইসেন্স নং ১৪২৪) ২ লাখ টাকা জরিমানা ও আল গাজী ট্রাভেলস লিমিটেডকে (হজ লাইসেন্স নং ৩৭) দায়িত্ব পালনে অবহেলা করায় ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়েছে।

ধর্ম মন্ত্রণালযয়ের সচিব মো. আনিছুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এসব এজেন্সির বিরুদ্ধে চুক্তিপত্রের শর্ত অনুযায়ী হোটেলে না রাখা, দূরের বাড়িতে রাখা, টাকা নিয়ে হজে না পাঠিয়ে টাকা আত্মসাত করা, খাবার না দেওয়া ও হজের সময় এজেন্সির কোনো প্রতিনিধি না থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শাস্তির মুখোমুখি হতে হলো।

হাজিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমলে নিয়ে জাতীয় হজ ও উমরা নীতির আলোকে এসব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।