বোরোর লোকসান পুষিয়ে নিতে আগাম আমন চাষ
বোরো চাষের লোকসান পুষিয়ে নিতে আগাম আমন চাষ শুরু করেছেন বগুড়ার কৃষকরা। তবে বৃষ্টির অভাবে জমি তৈরি করতে পারছেন না তারা। অনেকেই সেচ মেশিনের পানি দিয়ে আমন চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করে চারা রোপণ করছেন।
বগুড়া জেলার অধিকাংশ জমি তিন ফসলি। কৃষক বোরো ধান ঘরে তোলার পর এক থেকে দেড় মাস জমি ফেলে রাখেন। আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি থেকে আমন চাষ শুরু করেন। আমন ধান ঘরে তোলার সঙ্গে সঙ্গে জমিতে আলু চাষ শুরু হয়। আমন চাষের মৌসুম পহেলা শ্রাবণ থেকে শুরু হলেও আলু চাষের কারণে বগুড়া অঞ্চলের কৃষকরা ১৫-২০ দিন আগে থেকেই আমন চাষের প্রস্তুতি নেন।
প্রকৃতির নিয়মে বর্ষার ঋতুর প্রথম মাস আষাঢ় থেকেই পর্যাপ্ত বৃষ্টির পানি থাকার কথা। কিন্তু এবার চিত্র ভিন্ন। বর্ষাকালে বৃষ্টি নেই, মাঝে মধ্যে বৃষ্টি হলেও প্রখর রোদে জমির পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বর্ষা মৌসুমেও কৃষককে ব্যবহার করতে হচ্ছে সেচ মেশিন।
বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কেউ বীজতলা পরিচর্যা করছেন, কেউবা সেচ মেশিন দিয়ে পানি সেচ দিয়ে জমি তৈরিতে ব্যস্ত, আবার কোথায় আমন চারা রোপণ করা হয়ে গেছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা এলাকার কৃষক আব্দুল হান্নান বার্তা২৪.কমকে বলেন, বোরো চাষ করে লোকসান হয়েছে। এ কারণে চাষাবাদ তো আর বন্ধ করা যাবে না। লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার জন্য আগাম আমন ধানের চারা রোপণ করেছি। আমন ধান ঘরে তোলার পর একই জমিতে আলু চাষ করব। তিন ফসল চাষ করতে পারলে লোকসান থাকবে না বলে জানান কৃষক আব্দুল হান্নান।
মহাস্থান এলাকার কৃষক খয়বর হোসেন বলেন, সময়মত বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ মেশিনের পানিতেই আমন চাষের জমি তৈরি করছি। বৃষ্টির আশায় থাকলে আমনের পর আলু চাষে দেরি হয়ে যাবে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পহেলা শ্রাবণ থেকে আমন চাষ শুরু করা হয়, চলে ভাদ্র মাসের ১ম সপ্তাহ পর্যন্ত।
বগুড়ার সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর চরে আশ্বিন মাস পর্যন্ত গাইঞ্জা ধানের চারা রোপণ। এবার আমন মৌসুমে জেলার ১২ উপজেলায় ১ লাখ ৭৩ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
এদিকে আবহাওয়া অফিস বৃষ্টির পূর্বাভাস দিলেও বৃষ্টি তেমন হচ্ছে না। গত ১৫ দিনে আবহাওয়া অফিস ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। যা বর্ষাকালের জন্য পর্যাপ্ত না।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সজীব ওয়াজেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম না। তবে যখন কৃষকের প্রয়োজন সেই সময়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে না।