তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপে বাংলাদেশের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
বুধবার( ৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে উপস্থাপিত ‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচক: এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়ন প্রতিবদন’ শীর্ষক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া যায়।
তামাকমুক্ত স্লোগানে প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংগঠন প্রজ্ঞা’র পরিচালিত এই গবেষণার ফল উপস্থাপনা করে প্রজ্ঞা’র কো-অর্ডিনেটর মো. হাসান শাহরিয়ার।
বিগত দুই বছর সরকার তামাক কোম্পানির নানাবিধ হস্তক্ষেপ কিভাবে আমলে নিয়েছে এবং জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিমালা সুরক্ষায় কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা মূল্যায়নের চেষ্টা এই গবেষণায় করা হয়েছে।
গবেষণার তথ্যচিত্র দেখা গেছে, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। সামগ্রিকভাবে আর্টিক্যাল ৫.৩ এর নির্দেশনাবলী বাস্তবায়ন অগ্রগতি সন্তোষকজনক নয়। তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচকে এশিয়ার দশটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে খারাপ; নবম।
এর জন্য এফসিটিসি আর্টিক্যাল সরকার গ্রহণ করলেও দশ বছরও কোন নীতিমালা প্রণয়ন না করাকে দায়ী করা হয়েছে।
কোম্পানির হস্তক্ষেপ থেকে বেরিয়ে আসতে নীতিমালা প্রণয়ন কর, কোম্পানির সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় যোগাযোগ বন্ধের পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য নীতি সমূহ সুরক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বন্দ্ব এড়াতে সরকারি কর্মকর্তাদের কোম্পানির পদ থেকে ইস্তফা দেয়া, রপ্তানি শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহিসহ তামাক কোম্পানির সকল সুবিধা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয় এই গবেষণায়।
প্রজ্ঞা আর অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স(আত্না) যৌথ আয়োজিত এই গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
মন্ত্রীর তার বক্তব্যে বলেন, ‘তামাক মুক্ত করতে হলে স্থায়ীভাবে সচেতন তৈরি করা প্রয়োজন; যাতে নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। এছাড়াও জনসচেতনতার মাধ্যমে তামাক গ্রহণে ক্ষতিকর দিকগুলো বাস্তবচিত্রে ফুটে তুলতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন তামাক নির্মূলের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তামাক পণ্যের উপর কর বৃদ্ধির মাধ্যমে কোম্পানিকে নিরুৎসাহী সম্ভব।
ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সভাপতি এবং সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘অকাল মৃত্যুর কারণ হচ্ছে তামাক। এটা তো এক মৃত্যুর কারখানা। এর ফলে দেশ অনেক পিছিয়ে পড়ছে। ২০৪১ সাল পর্যন্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এফসিটিসির আলোকে নীতিমালা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে।’
পাঠ্যপুস্তকে তামাকের ক্ষতির দিক তথ্যচিত্র মাধ্যমে তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার আহ্বান জানান অনুষ্ঠানের সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ,বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার টেকনিক্যাল অফিসার ড. মাহফুজুল হক। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করে আত্না’র কো কনভেনর নাদিরা কিরণ।