‘জাম্বুরী উদ্যানের’ উদ্বোধনের অপেক্ষায় নগরবাসী
চট্টগ্রাম: অপেক্ষার পালা যতই শেষ হয়ে আসছে ততই যেন খুশির দোলা দিচ্ছে দর্শনার্থীদের মনে। মানসিক প্রশান্তি, সৌন্দর্য, রোমাঞ্চ, নান্দনিকতা আর আলোর ঝলকানিতে বুদ হয়ে যাওয়ার এমন প্রতীক্ষা যেন শেষ হওয়ার নয়।
বলছিলাম চট্টগ্রামের বহুল প্রতিক্ষীত ‘জাম্বুরী উদ্যানের’ কথা। নগরের আগ্রাবাদে মা ও শিশু হাসপাতালের পাশে নবনির্মিত এই উদ্যানটি শনিবার (৮সেপ্টেম্বর) উদ্বোধন করবেন গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
সাড়ে আট একর আয়তনের বিশাল উদ্যানটি ঘুরে দেখা যায়, এর প্রবেশমুখে রয়েছে বিশাল আকারের ওয়াকওয়ে। এর একটু সামনেই দেখা মিলবে দৃষ্টিনন্দন লেকের সংমিশ্রণে পানির ফোয়রা। রয়েছে চাঁপা, নাগেশ্বর, বকুল, সাইকাস, জারুল, সোনালু, রাধাচূড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফুল ঔষধি গাছ। এতো সব সৌন্দর্যের মাঝে কিছুটা সময় ক্লান্ত হয়ে বসতে পারেন দর্শনার্থীদের স্থানে, রয়েছে শৌচাগারের ব্যবস্থা।
দিনের এতো সব সৌন্দর্যকে রাতে ফুটিয়ে তুলতে পুরো উদ্যানজুড়ে রাতে রাখা হয়েছে এলইডি লাইটের আলোকছটা। যে আলোয় আলোকিত হবে চারপাশ। স্থাপত্য শিল্পের এমন আয়োজন উপভোগ করা যাবে বিনামূল্যে।
একটা সময় ফুটবলাররা খেলার মাঠ হিসেবে এটি ব্যবহার করত। তখন মাঠটি ক্রমেই অপরিষ্কার, বেদখল আর পতিত জমিতে রূপ নিয়ে হারাতে বসেছিল। তাই অনেকদিন ধরে সর্বস্তরের মানুষ এর প্রাণ ফিরিয়ে আনার দাবি করে আসছিল।
ভৌগলিক দিক থেকে চট্টগ্রামকে বলা হয় প্রকৃতির সৌন্দর্যের রাণী। বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত এই শহরে প্রতিদিন ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটনসহ বিভিন্ন কাজে দেশি-বিদেশিদের আগমন ঘটে। চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের বিনোদন ও অবসর সময়ের কথা মাথায় রেখে গণপূর্তমন্ত্রী ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। তখন এর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০ কোটি টাকা।
গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, স্থাপত্য অধিদপ্তরের নকশা অনুযায়ী এর নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। বিশাল এই উদ্যানের চারিদিকে সীমানা প্রাচীরের প্রতিটি পরতে রয়েছে নান্দনিকতা ও শৈল্পিক ছোঁয়া। ছয়টি সুবিশাল প্রবেশদ্ধার মুখে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন ছয়জন নিরাপত্তাকর্মী। এর পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ১৪টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা সংযোজন করা হয়েছে। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য এটি উন্মুক্ত থাকবে। নোংরা ও হাঁটার উপযুক্ত পরিবেশের দিকে নজর রেখে থাকছে না কোনো ধরনের রেস্তোরাঁ কিংবা ফুড কর্নার।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও আগ্রাবাদের বাসিন্দা নাসরিন জাহানের কাছে এর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি জানান, মনোমুগ্ধকর এই উদ্যানটি এখন উদ্বোধনের প্রহর গুনছে। যা খুবই আনন্দের বিষয়।
উদ্যানটির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ আবদুল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন,‘উদ্যানের সব কাজ শেষ। আগামীকাল মন্ত্রী মহোদয়ের উদ্বোধনের পর এটি সর্বস্তরের মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে।’