রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকার ড. মোল্লা মাহবুবর রহমান কলেজের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় পুরান ঢাকার ন্যাশনাল হাসপাতালে আন্দোলন করে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের ওপর পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলা চালায়। এই ঘটনার জেরে হামলা পাল্টা হামলা চারায় কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ সোমবার (২৫ নভেম্বর) দিনভর যাত্রাবাড়ী এলাকায় তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়ায়। এতেই শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের হামলায় অন্তত ৪০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে এক কলেজ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়।
শিক্ষার্থীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষার্থীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র কিভাবে এলো। কারণ যাত্রাবাড়ী এলাকায় শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়ালেও পুলিশের সক্রিয় কোনো ভূমিকা ছিলো না। তারা কোনো ধরনের টিয়ারগ্যাস বা গুলি ছোড়েনি৷ বরং পুলিশের ধারণা বহিরাগত কোনো অপরাধীরা এই কাজ করে থাকতে পারে।
জানা গেছে, আহত ওই শিক্ষার নাম মোহাম্মদ নাফী। তিনি ডেমরার মোল্লা মাহবুবর রহমান কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তিনি ডেমরার বামৈল বাজার এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। তার পেটে গুলি ও মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
আহত কলেজ ছাত্র নাফী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নাফীর খালু মোহাম্মদ সাঈদ বলেন, সকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারির খবর শুনে বাসা থেকে বের হয় নাফী। এর একটু পরেই সে গুলিবিদ্ধ হয়। পরবর্তী স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ডেমরার রয়েল হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমরা খবর পেয়ে তাকে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল থেকে নিয়ে আসি। তার পেটে গুলি লেগেছে। যা এখনো বের করা যায়নি। কারা গুলি করেছে আমরা জানতে পারিনি।
রাফীর বড় ভাই নিলয় বলেন, আমরা ভাই মারামারি দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সে যখন গুলিবিদ্ধ হয় সেই সময় স্পটে কোনো পুলিশ ছিলো না। ছাত্রদের মধ্যে থেকেই কেউ না কেউ গুলি করেছে। আমাদের ধারণা কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা গুলি করেছে। কারণ তাদের হাতে দেশিয় অস্ত্র ছিলো।
শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের মধ্যে গুলি করার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, আজকে তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের মারামারিতে পুলিশ কোনো গুলি করে নাই। আমরা কোনো অ্যাকশনে যাইনি। গুলিতে শিক্ষার্থী আহতের বিষয়টি আমরাও জেনেছি। আমাদের ধারণা বহিরাগত কোনো অপরাধীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ দিকে যাত্রাবাড়ীতে কলেজ শিক্ষার্থীদের মারামারি ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভাঙচুর ও গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরির অভিযোগে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের আট হাজার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
পুলিশের উপ-পরিদর্শক এ কে এম হাসান মাহমুদুল কবীর বাদী হয়ে রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় এই মামলা করেন।