চট্রগ্রাম নগরীতে পানির তীব্র সংকট

  • রকিব কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পানির তীব্র সংকটে রাস্তার পাশের ট্যাপ থেকে পানি সংগ্রহ করছেন এক বৃদ্ধ/ ছবি: বার্তা২৪.কম

পানির তীব্র সংকটে রাস্তার পাশের ট্যাপ থেকে পানি সংগ্রহ করছেন এক বৃদ্ধ/ ছবি: বার্তা২৪.কম

গ্রীষ্মের দাবাদহ শুরু হতে না হতেই চট্রগ্রাম নগরীতে দেখা দিয়েছে পানির তীব্র সংকট। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে তীব্র পানি সংকটে বিপর্যস্ত চট্টগ্রাম নগরবাসী। গত ১৫ দিন ধরে পানি সংকট চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নগরীর এনায়েত বাজার, হালিশহর, আসকার দীঘি পাড়, বায়েজীদ, চকবাজার ডিসি রোড, পাহাড়তলী, সরাইপাড়াসহ নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা বলছেন, পানির অভাবে রান্না করতে পারছেন তারা। বাধ্য হয়ে বোতলজাত পানি খেতে হচ্ছে তাদের। কিনে খেতে হচ্ছে খাবার। উচ্চবিত্তরা পানি কিনে তাদের চাহিদা মেটাতে পারলেও চরম বিপাকে পড়েছে নিম্নবিত্তরা। বোতলজাত পানি দিয়ে প্রয়োজনের কিছুটা মেটালেও বস্তি এলাকায় নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/24/1553431402480.jpg

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, তাদের এলাকায় পানি সরবরাহ কার্যত বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে কোথাও দুই এক সপ্তাহ ধরে, কোথাও দিনের একটা সময়ে মিলছে ফোঁটা ফোঁটা পানি। দিনের একটা সময়ে সামান্য পানি মিললেও লাইনে দাঁড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে তাদের।

নগরীর এনায়েত বাজার এলাকার বাটালি রোডের নীচপাড়া এলাকার একটি বাড়ির প্রহরী নিয়াজ ভূইয়া। রোববার (২৪ মার্চ) কথা হয় তার সঙ্গে।

তিনি বার্তা২৪.কম-কে জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে এলাকায় পানি নেই।  মাঝে মধ্যে রাত আড়াইটা তিনটায় পানি আসে। কখনো একবারে পানি  আসে না। গত কয়েকদিন ধরে সকাল থেকে রাত অবধি পুরো বাড়ির পানি সংগ্রহ করছেন তিনি। গোসল, রান্না আর নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ সারতে তিনি পানি সংগ্রহ করছেন খানিটা দূরে একটি নয়তলা বাসার  গভীর টিউবওয়েল থেকে।

একই কথা জানালেন, বাড়ির আরেক বাসিন্দা একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আশরাফ।

তিনি বলেন, আমার এলাকায় পানি নেই বললেই চলে। কখন পানি আসে তার কোনো ঠিক নেই। বাধ্য হয়ে এলাকার পুকুরে গোসল সেরেছি।

ওই বাড়ির থেকে সামনের গলির মুখে যেতেই দেখা গেলো একটি পানির কলে কিছুক্ষণ পর পর ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছে। আর হুমরি খেয়ে স্থানীয়রা কলসি, পানির বোতলে পানি সংগ্রহ করছেন।

পানির লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা পিংকি রায় নামে এক চা দোকানি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এখানে দু বেলা পানি আসে। খুব ভোরে আর দুপুর ১১টা কখনো বা দুপুর ১২টা। পানির পরিমাণও খুব কম।

জানা যায়, নগরবাসীর নিত্য প্রয়োজন থেকে শুরু করে পানির চাহিদার প্রধান ভরসা চট্টগ্রাম ওয়াসা। কিন্তু ওয়াসার কাজের খোঁড়াখুঁড়ি আর সমন্বয়হীনতায় অসংখ্য দুর্ভোগ আর ভোগান্তি বাড়ছে তাদের।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, বর্ষা আসতে আসতে এই তীব্রতা মহামারি রূপ নেবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/24/1553431426305.jpg

পানির সংকটের কথা স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদুল আলম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বদ্দহারহাট এলাকায় একটি লাইন ফেটে যাওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ক্রমাগত কাজ করছি। কিছু কিছু এলাকায় পানির সংকট রয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা ওয়ান বাই ওয়ান সেগুলো ঠিক করার কাজ করছি। এর পাশাপাশি অন্যান্য লাইনগুলোর কাজও করা হচ্ছে।  মূলত এই কারণে সংকট দেখা দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেসব এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে ধারণা করছি দু-তিনদিনের মধ্যে পানি সংকট কেটে যাবে। তবে সামগ্রিকভাবে পানির সরবরাহ নিশ্চিত হতে আরও সময়ের প্রয়োজন।’ এক্ষেত্রে সাময়িক কষ্ট স্বীকার করে নিরবিচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ নিশ্চিতের লক্ষ্যে নগরবাসীর সহায়তা চেয়েছেন তিনি।