সিলেটে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে নাকাল যাত্রীসাধারণ
সিলেটে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে নাজেহাল যাত্রী সাধারণ। তবে পরিবহন নেতারা বলছেন নিরাপত্তার স্বার্থে চালকরা রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছেন না।
শুক্রবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে পিকেটিং করছে পরিবহন চালকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও সুনামগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। সকাল থেকে শত শত যাত্রীরা বাসস্ট্যান্ডে ভিড় করতে থাকেন। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসা রোগীর স্বজনরা। অনেককে ছোট ছোট শিশুদের টেনে নিয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।
কুমার গাও বাস স্ট্যান্ড এলাকায় সিলেটের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি বাস আটকে রাখে বাস চালকরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। জালালাবাদ থানা পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও নীরব ভূমিকা পালন করেন।
মদিনা মার্কেট এলাকায় পিকেটিং করছিল সিএনজি অটোরিকশা চালকরা। এ সময় এক মাইক্রোবাস চালক যাত্রী নিয়ে যেতে চাইলে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। তখন মাইক্রোবাসের এক যাত্রীকে নামিয়ে মারধর করে চালকরা।
জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন সত্তরোর্ধ্ব সবুজ আলী। তিনি বলেন, আমরা এ কোন দেশে বসবাস করছি। দুদিন পরপরই পরিবহন শ্রমিকরা জিম্মি করে ফেলে আমাদের। কারো যেন কিছু দেখার নেই।
সবুজ আলী বলেন, কোনরকম বাড়ি পৌছালি বাঁচি। তিনি আরো বলেন চালকরা অল্পতেই মারমুখী হয়ে যায়। আমরা যেন এই পরিবহন শ্রমিকদের কাছে জিম্মি।
সিলেট শহরতলীর টুকের বাজার এলাকায় দুদিক থেকে আসা শত শত গাড়ি আটকা পড়েছে। মধ্যখানে ফুটবল নিয়ে সড়কের মধ্যে খেলায় মত্ত হয় চালকরা। এ পরিস্থিতিতে চরম দুর্ভোগে পড়েন শহরমুখী লোকজন।
সিলেট-তামাবিল সড়ক, সিলেট এয়ার্পোট, ঢাকা সিলেট মহাসড়ক, সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করছে চালকরা। ফলে যাত্রীদের পায়ে হেঁটে শহরে প্রবেশ করতে হচ্ছে। শুক্রবার হওয়ায় অফিস আদালত বন্ধ থাকায় শহরে আসা লোকজনের কম। তবেএদেরমধ্যে হাসপাতালে আগতদের সংখ্যা বেশি।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমেদ ফলিক বলেন, ধর্মঘট নয় চালাকরা গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছে না। তিনি বলেন, বাচ্চারা রাজপথ ছেড়ে দিলে চালকদের গাড়ি বের করতে আপত্তি নেই।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, পরিস্থিতি আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। যাতে নতুন কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয় আমরা সেদিকে দৃষ্টি রেখেছি। তিনি জানান, শুক্রবার কোথাও আন্দোলন রত শিশুদের রাস্তায় বের হতে দেখা যায়নি। ওহাব বলেন পরিবহন মালিক ও চালকদের সাথে আলাপ-আলোচনা চলছে। আশা করছি সমাধান আসবে।