সড়ক পরিবহন আইনে সমাধান, বিশেষজ্ঞরা চান পদ্ধতিগত পরিবর্তন

  • সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

 

ঢাকা: শিক্ষার্থী‌দের দেশজুড়ে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সমাধান হিসেবে সড়কমন্ত্রী ‘পরিবহন আইন পাশের জন্য প্রস্তুত’ বলে জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, এর মধ্যেই সমাধান নিহিত। নতুন এই আইনের খসড়ায় চালকের বয়স অষ্টম শ্রেণী পাশ আর প্রতিযোগিতা করে দিয়া-করিম হত্যার মতো ঘটনার শাস্তি হিসেবে ৩ বছর সাজা ও ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড হতে পারে। সরকার এটাকে সমাধান মনে করলেও  আইনের পাশাপাশি ‘পদ্ধতিগত পরিবর্তন’ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞাপন

আগামী সোমবার মন্ত্রীসভায় খসড়া আইনটি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন করা হবে। তারপর সংসদ অধিবেশনে এই আইন পাশ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলছেন, ‘শিক্ষাথীদের যে দাবিগুলো, সেসব দাবির সমাধান এ সড়ক পরিবহন আইনের মধ্যে আছে।’

বিজ্ঞাপন

সড়ক পরিবহনের নতুন এই আইনের সঙ্গে কোনো দ্বিমত নেই সড়ক পরিবহন মালিকদের। তবে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের পাল্টা কর্মসূচি পালন করছেন তারা। চলছে দেশজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট ও কর্মবিরতি। শুধু রাতের বাস চালু রেখেছেন তারা।

এ নিয়ে কথা বললে খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, ‘রাতেও বাসে হামলা হচ্ছে। তবু রাতে চালু রেখে নিরাপত্তা না পাওয়ার আগ পর্যন্ত সারাদেশে দিনে কোনো বাস চলবে না।’

সড়ক পরিবহন আইন নিয়ে কোনো প্রশ্ন আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই আইনের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই পরিবহন মালিকদের। ধর্মঘট ডাকা হয়েছে পরিবহনে নিরাপত্তার দাবি ও ভাংচুরের প্রতিবাদে।’

প্রস্তাবিত আইনে চালকের অষ্টম শ্রেণী পাশ যোগ্যতা ও  হেলপারের পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বললে এক মাসের কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধানসহ গাড়ি চালিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটালে ৩০২ ধারা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। বেপরোয়াভাবে বা প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানোর কারণে কারো মৃত্যু ঘটলে তিন বছর কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

সড়কে পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালানো বা রেস করার ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে তিন বছরের কারাদণ্ড অথবা ২৫ লাখ টাকা জরিমানারও বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত এই আইনে।

বুয়েটের নগর ও পরিকল্পা বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক মনে করেন,  নতুন আইন শিক্ষার্থীদের দাবি সামধানে যথেষ্ট কার্যকর নয়। কৌশলগত পরির্বতন আনা দরকার ছিল যা করতে সরকার এখনো মনোযোগী নয়।

তাঁর সঙ্গে একমত পোষণ করে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের পরিকল্পনায় ঢাকা শহরে বাসে শৃঙ্খলা আনতে বিভিন্ন রঙে যে বাস নামানোর কথা তাতে সরকারের একদম মনোযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দপ্তরে এ পরিকল্পনা নিয়ে কয়েকবার ঘুরেও কোনো কাজ হচ্ছে না।’ সবাই এটা ভুলে গেছে বলেও মন্তব্য করেন এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ।