সংসদ নির্বাচনে দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রশমনে কাজ করবে ইউএনডিপি

  • ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রশমনে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। পাশাপাশি স্মার্ট ভোট কেন্দ্র তৈরি এবং ভোটারদের সচেতন করতে গৃহিত সামাজিক কর্মসূচিগুলোতে কাজ করতে আগ্রহী সংস্থাটি। তবে কমিশন বলছে, নি:শর্তভাবে কেউ সহায়তা করতে চাইলে তাকে স্বাগত জানানো হবে। শর্ত সাপেক্ষে কোন সহযোগিতা গ্রহণ করবে না ইসি।

জানা গেছে, দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রশমনের আওতায় সহিংসপ্রবণ জেলাগুলোতে সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক সম্প্রীতি ও সচেতনতা সৃষ্টি করার বিষয়ে কৌশল বিনিময় করবে ইউএনডিপি। পাশাপাশি নির্বাচনী সংঘাত বন্ধ এবং আইন-বিধি প্রতিপালনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা ও মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করা ও সহিংসতার খবর ইসি যাতে দ্রুত পেয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে সেই কৌশলগত সহযোগিতা করবে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করতে সাম্প্রতি ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল ইউএনডিপি। সংস্থাটির পক্ষ থেকে ইসিকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ প্রচারণা ছাড়াও ছয় ধরনের  কারিগরি সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব করেছে ইউএনডিপি। আর ইসির পক্ষ থেকে ১০টি কারিগরি সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, আগামী পাঁচ বছর পর যারা ভোটার হবেন তাদেরকে এনআইডি দেওয়া। সেই সঙ্গে ইভিএম, ভোটারদের সচেতনার জন্য ভোটার এডুকেশন, নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য স্বয়ংক্রিয় সিল, স্মার্ট গোপন ভোট কক্ষ, স্মার্ট অমোছনীয় কালি, ট্রেনিং ম্যানুয়াল, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে ইউএনডিপির ছয়টি প্রস্তাবনা হলো-

ভোটার রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে সহায়তা: ভোটার তালিকা প্রণয়নে ইসির যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার লাইসেন্স ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতির প্রক্রিয়া উন্নয়নে সহায়তা দেয়া। যাতে ভোটার রেজিস্ট্রেশন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত বিষয়ে ইসির নিজস্ব শক্ত ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠে। আর ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ফান্ড ছাড়াই এসব কার্যক্রমে সক্ষমতা অর্জনের দক্ষতা গড়ে তোলা।

জনসচেতনতা বাড়ানোর কৌশল: বিশেষ করে নারী ও যুবকদের মধ্যে  ভোটার সংক্রান্ত শিক্ষা দেয়া ও আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করা।

দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রশমন: দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রশমনের আওতায় সহিংসপ্রবণ জেলাগুলোতে সহিংসতার বিরুদ্ধে সামাজিক সম্প্রীতি ও সচেতনতা সৃষ্টি করার বিষয়ে কৌশল বিনিময়। পাশাপাশি নির্বাচনী সংঘাত বন্ধ এবং আইন-বিধি প্রতিপালনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা ও মনিটরিং ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সহযোগিতা করা। সহিংসতার খবর ইসি যাতে দ্রুত পেয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে সেই কৌশলগত সহযোগিতা করা।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ব্যবস্থাপনা: জেন্ডার, জাতিগত ও সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় ইসির সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা করা। ৫. প্রশিক্ষণ: নির্বাচন কর্মকর্তা এবং নির্বাচনের স্টেকহোল্ডারদের প্রশিক্ষণ দেয়া।

ভোট কেন্দ্রে ক্যামেরা স্থাপন করা: ঝুঁকি পূর্ণ ভোটকেন্দ্র চিহ্নিত করে সব কেন্দ্রে সম্ভব না হলেও কিছু কিছু কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানো ।

এ বিষয়ে ইসির জনসংযোগ শাখার পরিচালক যুগ্মসচিব (চলতি দায়িত্ব) এস এম আসাদুজ্জামান জানান, ভোটারদের সচেতন করতে সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকে ইউএনডিপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারণা চালাবে। নভেম্বর ও ডিসেম্বর এই দুই মাসে প্রতিদিন ১০ বার করে ছয়টি টিভিতে প্রচারণা চালাবে। এছাড়া ভোট কেন্দ্র স্মার্ট করতে আরো ছয় ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।

১৯৮৫ সাল থেকে ইউএনডিপি সহযোগিতা করে আসছে। বিশেষ করে ২০০৫ সাল থেকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নানা ধরনের সহযোগিতায় তাদের সম্পৃক্ততা বেড়েছে।