মন্ত্রীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তদবির
ঢাকা: নার্সিং কর্মকর্তাদের জন্য বিদেশী স্বল্পমেয়াদী কোর্সের বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছিল। দরখাস্ত আহ্বানের পর থেকে ব্যাপক সারা পাওয়া যায় নার্সিং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। কিন্তু এই আহ্বানে ১৭ জন কর্মকর্তার আবেদনে স্বাস্থ্য,রেল,খাদ্য, বাণিজ্য মন্ত্রীর স্বাক্ষর রয়েছে।
পরে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে সিআইডিতে একটি মামলা হয়। মামলা হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে সিআইডির একটি টিম।
তদন্তের শুরু থেকেই বের হতে থাকে একের পর এক তথ্য। তদন্তে দেখা যায়, ওই ১৭ টি আবেদনে যে স্বাক্ষর করা হয়েছে সেগুলো জাল স্বাক্ষর। তারা যেসব মন্ত্রী,সংসদ সদস্য ও সচিবের স্বাক্ষর ব্যবহার করেছেন তা তাদের নয়।
এ ঘটনায় ৩ জন সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারিকে কুমিল্লা ও চাঁদপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- কুমিল্লার দাউদকান্দির তালতলী গ্রামের মৃত হাসেম মিয়ার ছেলে অফিস সহকারী মোঃ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া (৪৫), চাঁদুপুর জেলার শাহারাস্তি উপজেলার রায়শ্রী গ্রামের মৃত আবুল খায়েরেরর ছেলে সিনিয়র স্টাফনার্স আবু ইউসুফ (৩৬), বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ উপজেলার মৃত আব্দুল রশিদ তালুকদারেরর ছেলে সিনিয়র স্টাফ নার্স মোঃ রুহুল বাসার তালুকদার (৪৫)।
সোমবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম।
মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, চক্রটি ১৭ জন স্টাফ নার্সের আবেদনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী, বানিজ্যমন্ত্রী, রেলমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ ফজলে নুর তাপস, শেখ ফজলে হোসেন বাদশাহসহ কয়েক জন সচিবের সুপারিশ পূর্বক জাল স্বাক্ষর করেছে। পরে এ ঘটনা মামলা হলে তদন্ত করে সিআইডি।
তিনি বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই এসব অবৈধ কাজ করে আসছিল কিন্তু তারা ছিল ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এই চক্রের সদস্যরা মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সচিবের স্বাক্ষর জাল করতো। তারা তাদের নাম করে ভূয়া ফোন কল করতো। পাশাপাশাশি তারা এসএমএসের মাধ্যমে তদবিরের ঘটনাও ঘটিয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মুলত চক্রটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সেবা অধিদপ্তরের আওতায় স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচীভুক্ত নার্সিং এডুকেশন এন্ড সার্ভিসেস প্রোগ্রামের অপারেশনাল প্লান এর সংস্থার অধীনে সরকারী ব্যবস্থাপনায় নার্সিং কর্মকর্তাদের একটি বিদেশে স্বল্পমেয়াদী প্রশিক্ষণ করার কথা ছিল। এজন্য বিভিন্ন হাসপাতাল/স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান ও নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নার্সিং কর্মকর্তাদের নিকট থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়েছিল। সেই বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে তারা এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।
এ ঘটনায় ২০১৭ সালে শেরে বাংলা থানায় একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্গানাইজড ক্রাইম (সিরিয়াস ক্রাইম এন্ড হোমিসাইডাল স্কোয়াড) এর বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিরিয়াস ক্রাইম স্কোয়াড) রাজিব ফারহান।