মিয়ানমারের পশু আমদানিতে ভাটা, সংকটের শঙ্কা
কক্সবাজার: বৈরী আবহাওয়ার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি। এর ফলে কোরবানির ঈদের আগে মিয়ানমারের পশু বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা কমে গেছে। এতে কোরবানির বাজারে পশু ঘাটতি পড়ার কারণে দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
টেকনাফের করিডোরের ব্যবসায়ী সূত্র জানায়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত ৮ আগস্ট বুধবার আমদানিকারক মোহাম্মদ শহীদের একটি মাত্র পশু বোঝাই ট্রলারে ২৭০টি গবাদি পশু আমদানি হয়েছে। এরপর পশু বোঝাই আর কোনো ট্রলার করিডোরে আসেনি। কোরবানির ঈদে পর্যাপ্ত পরিমাণ পশু আমদানি নিয়ে আশঙ্কার কথা বলছে ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছে, হঠাৎ করে কিছু দিন আগে পশু ব্যাপারীদের প্রতি পশুতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসান দিতে হয়েছে। ফলে ঋণ ও দেনায় লগ্নি করা অর্থ উঠে না আসার আতঙ্কে অনেকে পশু আমদানি বন্ধ রাখে। তবে বাজারদর মনিটরিং করে সুদিনের অপেক্ষায়ও রয়েছে অনেক ব্যবসায়ী।
শুল্ক বিভাগ সূত্র জানায়, গত ৮ আগস্ট পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে করিডোরে ৩০৬৫টি পশু আমদানি হয়েছে। ৮ আগস্টের পর থেকে পশু বোঝাই কোনো ট্রলার আসেনি। চলতি অর্থ বছরের জুলাই মাসে ৬ হাজার ১০৬টি পশু আমদানি হয়েছে। গত অর্থবছরে ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৬৭টি পশু আমদানি হয়েছে। এর আগের অর্থ বছরে ৬৬ হাজার ৯৩৬টি পশু আমদানি হয়।
পশু ব্যবসায়ী স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. শরীফ ও মোহাম্মদ শহীদ জানান, মিয়ানমার থেকে আমদানি পশু প্রতি ক্রয় থেকে শুরু করে বাংলাদেশে পৌঁছানো পর্যন্ত যে দাম পড়ে সে দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। পশু আমদানি হলেও ন্যায্য দামের অভাবে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ইচ্ছে থাকলেও পশু আমদানি বাড়াতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে ঈদের আগে দাম বাড়লে পশু আমদানিও বাড়বে।
টেকনাফ উপজেলা পশু আমদানিকারক সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ মনির জানান, মিয়ানমার থেকে আমদানিকৃত পশু দেশের চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে। মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি কম হলে কোরবানির বাজারে পশুর সংকট দেখা দেবে। ঈদে মিয়ানমারের পশু কম আসলে স্বাভাবিকভাবে দেশীয় গরুর দাম বেড়ে যাবে।
টেকনাফ শুল্ক স্টেশন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর জানান, কোরবানির ঈদের বাকি মাত্র কয়েকদিন। তবে আমদানি পশুর বাজারে বিক্রয় মূল্য কম থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া বৈরী আবহাওয়াও আরেকটি কারণ। কোরবানির ঈদে টার্গেট পূরণে পশু আমদানি বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। গত অর্থবছরেও মিয়ানমার থেকে রেকর্ড সংখ্যক পশু আমদানি হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।