কাজলকে সামনাসামনি দেখার লোভে!
প্রিয় তারকাকে কাছে থেকে দেখার জন্য প্রায়ই উদ্ভট ঘটনার জন্ম দেয় ভক্তরা। এরই ধারাবাহিকতায় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়ালের সঙ্গে দেখা করার লোভে ৭৫ লাখ রুপি খোয়ালেন তামিলনাড়ুর রামানাথাপুরামের তরুণ প্রদীপ কুমার।
কাজলকে একনজর দেখার জন্য চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি ওই তরুণ। ফিল্ম স্টুডিওর বাইরে তার আনাগোনা তো ছিলই, এমনকি সহকারী পরিচালক থেকে শুরু করে স্টুডিওর কর্মচারী, সামনে পেলেই কাজলকে একটিবার দেখার জন্য বায়না ধরতেন তিনি। তার এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে শ্রাবণ কুমার নামের এক প্রযোজকের বিরুদ্ধে ৭৫ লাখ রুপি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
তামিলনাড়ু পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, প্রদীপকে কাজলের সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন শ্রাবণ কুমার ও তার কয়েকজন বন্ধু। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পেজ দেখিয়ে জানান, এতে নাম নিবন্ধন করলেই প্রিয় তারকার নাগাল পাওয়া যেতে পারে।
শ্রাবণ কুমারের কথা অনুযায়ী ওই পেজে রেজিস্ট্রেশন করেন প্রদীপ। ১০ মিনিটের মধ্যে তার মোবাইল নম্বরে একটি ফোন আসে এবং জানতে চাওয়া হয় তিনি কোন তারকার সঙ্গে দেখা করতে চান? স্বাভাবিকভাবেই তিনি কাজলের নাম নির্ধারণ করেন।
এরপর ভক্তের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য সম্প্রতি তোলা তার কয়েকটি ছবি চাওয়া হয় ওই পেজ থেকে। ছবি দেওয়ার পর তাকে জানানো হয়, সার্ভিস চার্জ এসেছে ৫০ লাখ রুপি। সেই সঙ্গে একটি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে তাকে আরও ২৫ লাখ রুপি জমা দিতে বলা হয়। যেমন কথা, তেমন কাজ। বোকার মতো ৭৫ লাখ রুপি জমা দিয়ে দেন তিনি। টাকা পাঠানোর পর প্রদীপকে জানানো হয়, আগামী দুই দিনের মধ্যে তার সঙ্গে দেখা করতে রামানাথাপুরামে আসবেন কাজল আগারওয়াল!
প্রতারণার এখানেই শেষ নয়, কাজলের সঙ্গে প্রদীপের ছবি বাজেভাবে তৈরি করে শ্রাবণ কুমার উল্টো ব্ল্যাকমেইল শুরু করেন। প্রদীপকে জানানো হয়, তিনি যদি এসব কথা কাউকে বলেন তাহলে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে এসব ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভয় পেয়ে দুই মাস আগে ঘরছাড়া হয়ে কলকাতায় থাকতে শুরু করেন প্রদীপ।
কলকাতা থেকে প্রদীপ তার বাবাকে ফোন করে জানান, তিনি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন। এরপর রামানাথাপুরাম ও পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের সহায়তায় ছেলেকে খুঁজে বের করেন ওই ব্যবসায়ী।
পুলিশ আরও জানায়, প্রদীপ যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছেন, সেটি শিবা আলিয়াস মনিকান্ডান নামে এক ব্যক্তির। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর জানা গেছে, প্রযোজক শ্রাবণ কুমারের সঙ্গে মিলে একটি তামিল ছবি নির্মাণ করেছিলেন তিনি। তার অ্যাকাউন্টে প্রদীপের পাঠানো টাকা আসার পর তা শ্রাবণ কুমারের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেও দাবি শিবার।
এ ঘটনা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। তবে কাজল এখনও মুখ খোলেননি।