তিন প্রজাতির নতুন মাছের সন্ধান পেল শেকৃবি গবেষক দল
সম্প্রতি দেশের সমুদ্র জলসীমায় থাকা মাছের তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও তিনটি নতুন প্রজাতি। বাংলাদেশের সমুদ্র জলসীমায় মাছের প্রজাতি ও সংরক্ষণ পরিস্থিতি নিয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর গবেষক দলের করা এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের ৩-৪ মিটার গভীরতায় থাকা ‘দুইধা’, ‘দাগী দুইধা’ ও ‘দুই দাগী দুইধা’ নামের মাছ তিনটির জীববৈচিত্র্য নিরূপনে ব্যবহার করা হয় ডিএনএ বারকোডিং পদ্ধতি । তারপর আন্তর্জাতিক জিন ব্যাংকের তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে শনাক্ত করা হয় নতুন প্রজাতি।
গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক কাজী আহসান হাবীব বলেন, ‘মাছ তিনটি পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় জলসীমায় পাওয়া গেলেও এই প্রথম উত্তর বঙ্গোপসাগরে এর উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাধারণত প্রবাল প্রাচীরে মাছ গুলো বাস করে থাকে। তাই দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সংলগ্ন জলসীমায় মাছগুলো পাওয়া গেছে।’
এই গবেষণা পরিচালিত হয় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিকস বিভাগের অধ্যাপক কাজী আহসান হাবীবের নেতৃত্বে। সহকারী হিসেবে ছিলেন গবেষক জায়িদুল ইসলাম, নাজমুন নাহার, অমিত কুমার নিয়োগী এবং সহযোগিতা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক টি এইচ ফ্রেশার।
গবেষণা প্রতিবেদনটি ২৩ আগস্ট আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী জার্নাল অব ইকথায়লোজিতে (Journal of Ichthyology) ছাপা হয়েছে।
এর মধ্যে ‘দুইধা মাছ’ এর মাছগুলোর চোখ বড় এবং পাখনাগুলো স্বচ্ছ ও হালকা গোলাপি রঙের হয়। শরীরজুড়ে রয়েছে চারটি অন্ধকার যার নিচের দুটি রেখা প্রশস্ত এবং ওপরের দুটি পাতলা।
সন্ধান পাওয়া নতুন প্রজাতির আরেকটি ‘দুই দাগী দুইধা’ প্রজাতির মাছগুলো হালকা বাদামি থেকে কালো-বাদামি রঙের হয়। এর শরীরে লম্বা দাগ বা ডোরা প্রায়শই অন্ধকার থাকে। সাধারণত এদের গালে একটি রেখা এবং শরীরে দুটি দাগ থাকে।
এ ছাড়াও ‘দাগী দুইধা’ নামের মাছটির পায়ু পাখনা এবং দ্বিতীয় পৃষ্ঠীয় পাখনার ওপর একটি অস্পষ্ট কালো দাগ লক্ষ করা যায়। এর শরীর অপেক্ষাকৃত গভীর এবং মাথা অবতল আকৃতির।
গবেষক দলের প্রধান কাজী আহসান হাবীব জানান, সনাতন পদ্ধতিতে গবেষকেরা মাছের গঠন ও বাহ্যিক আকৃতি দেখে নাম ও প্রজাতি শনাক্ত করেন। কিন্তু জীবনচক্র পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যে ভিন্নতা তৈরির কারণে এ পদ্ধতিতে মাছ শনাক্ত করা বেশ জটিল। তাই মাছের জীববৈচিত্র্য নিরূপণে ডিএনএ বারকোডিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর আন্তর্জাতিক জিন ব্যাংকের তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে নতুন প্রজাতি শনাক্ত করা হয়।