লক্ষ্য যখন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়



সিফাতুল্লাহ আমিন
লক্ষ্য যখন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

লক্ষ্য যখন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারের চলমান ভ্যাকসিন কার্যক্রম ও করোনা পরিস্থিতির ক্রমোন্নতি কথা বিবেচনা করে দ্রুতই শুরু হতে যাচ্ছে থেমে থাকা শিক্ষাবর্ষ ২০২০-২১ এর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। প্রতিবছরের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অন্যতম আকর্ষণের জায়গা জুড়ে আছে দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো।তবে বিগত বছরের মতো এবারো আবেদন করা সকল শিক্ষার্থী সুযোগ পাচ্ছে না পরীক্ষা দেওয়ার।মোট আবেদনকৃত ৮০ হাজার ৯৩৩ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে শুধুমাত্র ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী।তাদের জন্য দিক নির্দেশনা মূলক পরামর্শ দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর কিছু শিক্ষার্থী।

প্রস্তুতির ক্ষেত্রে মূল বইয়ের বিকল্প নেই

মাহমুদুল হাসান সৌরভ

প্রথম বর্ষ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনকার সময়ে শিক্ষার্থীদের অন্যতম পছন্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে পড়াশুনা শেষ করে একজন গ্রাজুয়েট গড়তে পারে নিজের উজ্জ্বল এবং সার্থক ভবিষ্যৎ। বর্তমান সময়ে মেডিকেল কলেজ এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে তাল মিলিয়ে দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এগিয়ে যাচ্ছে অনেকদূর। পড়াশুনার পাশাপাশি গবেষণা ও কর্মক্ষেত্রেও অন্য সবার চেয়ে এগিয়ে আছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটরা।

প্রস্তুতির ক্ষেত্রে মূলবইয়ের কোনো বিকল্প নেই। উদ্ভিদবিজ্ঞানের জন্য আবুল হাসান স্যারের বই, প্রাণিবিজ্ঞানের জন্য আজমল স্যারের বই, রসায়নের জন্য হাজারী-নাগ স্যারের বই, পদার্থবিজ্ঞানের জন্য ইসহাক স্যারের বই এবং উচ্চতর গণিতের জন্য কেতাব স্যারের বই ফলো করাই উত্তম। পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও উচ্চতর গণিতের  অধিকাংশই গাণিতিক সমস্যা থাকে। প্রতিটি অধ্যায়ের গাণিতিক সমস্যার উদাহরণ ও বিগত বছরগুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় আসা গাণিতিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। ইংরেজির নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস নেই। বিগত বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের সমাধান করতে পার। যারা মেডিকেলের প্রিপারেশন নিয়েছিলে তাদের জন্য এক্সট্রা হিসাবে উচ্চতর গণিত আর যারা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রিপারেশন নিয়েছিলে তাদের জন্য এক্সট্রা হিসেবে জীববিজ্ঞান কাভার করতে পারলেই প্রস্তুতি অনেকটাই সম্পন্ন হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। তবে অবশ্যই সর্বশেষ সংস্করণের বই পড়া উচিত কেননা প্রশ্নপত্র প্রণয়নের ক্ষেত্রে সর্বশেষ সংস্করণের বইকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। মুলবই শেষ করার পর প্রশ্নব্যাংক সলভ করাটাও অত্যন্ত জরুরী যা একজন শিক্ষার্থীকে প্রশ্নপদ্ধতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেতে সহায়তা করবে।

কৃষিবিদদের কর্মক্ষেত্র যথেষ্ট উর্বর।

স্নিগ্ধা আজভীন সখী

দ্বিতীয় বর্ষ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

কৃষিই কৃষ্টি। কৃষিই সমৃদ্ধি।  কৃষিকে ঘিরেই মানুষের সভ্যতার জাগরণ শুরু। কৃষিই পৃথিবীর মূল চালিকাশক্তি।  পৃথিবীর বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের মধ্যে কৃষি অন্যতম। তাই এই কৃষিকে এগিয়ে নিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একাধিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে নিজের ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা যাদের ভাবনা তাদের জন্য -

প্রথমেই স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ১৯৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষিবিদদের দিয়ে গেছেন প্রথম শ্রেনির মর্যাদা। ডাক্তার, ইন্জিনিয়াররা যেমন দেশে চাকরিতে প্রথম শ্রেনির মর্যাদা পান, তেমনি কৃষিতে স্নাতকোত্তর কৃষিবিদরাও প্রথম শ্রেনির মর্যাদাসম্পন্ন হবেন।

ভালো ফলাফলের মাধ্যমে কৃষি ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক হিসেবে যোগদানের সুযোগ,  বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের ( বিসিএস ) পরীক্ষায় টেকনিক্যাল ও জেনারেল উভয় ক্যাডারে আবেদনের সুযোগ পাওয়ায় দেশের সব কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারবেন। তাছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, গম, ইক্ষু, চা, মসলা, বন, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট,  পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেশম উন্নয়ন বোর্ড, লাইভস্টক কর্পোরেশন, বিএসটিআই এবং মৃত্তিকা গবেষণা ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দিতে পারবেন।

আবার, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেমন এফএও, ইরি, ডিএফআইডি, ইউএসএআইডি, ড্যানিডা, সিডা, উইনরক, আইএফডিসি ও অক্সফাম জিবির মতো প্রতিষ্ঠানেও রয়েছে কৃষিবিদদের বিশেষ অগ্রাধিকার। এভাড়াও সরকারি বেসরকারি ন্যাশনাল অ্যাগ্রোকেয়ার, লালতীর, নীলতীর,এসিআই, আরডিআরএস, ব্র্যাক, স্কয়ার, প্রশিকা, কৃষিবিদ গ্রুপ ও অ্যাকশন এইডের মতো প্রতিনিধিত্ব কারী অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অফুরন্ত সুযোগ।

পরিশেষে এ কথা বলা যায়, কৃষিবিদদের কর্মক্ষেত্র যথেষ্ট উর্বর। রয়েছে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ

মোঃ আসাদুল্লাহ

দ্বিতীয় বর্ষ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

আমাদের সাধারণত ভর্তি পরীক্ষার আগে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর বিষয়ে তেমন কিছু জানা হয় না। বিভিন্ন ভর্তি সহায়ক কোচিং বা টিচার রা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কিছুটা ধারণা দিয়ে থাকেন। যেখানে মেডিকেল এ প্রস্তুতি নেয়া শিক্ষার্থীদের অধিকাংশেরই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হয় দ্বিতীয় লক্ষ্য। কারণ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির মানবন্টনে ৩০ মার্ক্স থাকে শুধু জীববিজ্ঞান এর ওপর। আর সামগ্রিক ভাবে পাস মার্ক্স পাওয়া লাগে। তাই মেডিকেল এ প্রস্তুতি নেয়া শিক্ষার্থীদের গণিতের দূর্বলতা ততটা সমস্যার কারণ হয় না। তবে বিষয় ভিত্তিক বেসিক জ্ঞান থাকলে এবং সঠিক প্রস্তুতি থাকলে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির সুযোগ পাওয়া খুবই সহজ।তাছাড়াও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গুলো অনুষ্ঠীত হয় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর শেষে। তাই অতিরিক্ত প্রস্তুতির প্রয়োজন তেমন পড়ে না। মূল বই থেকে বেসিক জ্ঞান টা নিয়ে পূর্ববর্তী ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন সমাধান করলেই পরীক্ষা সহজ হবে আশা করি। 

তাছাড়াও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ে জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছানো অপেক্ষাকৃত সহজ বলে আমি মনে করি। প্রতি বছরই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস এ টেকনিক্যাল ক্যাডার এ নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন থাকে। তাছাড়াও কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন কৃষি ভিত্তিক সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণীর চাকরির সুযোগ। শুধু তাই নয়, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও ভালো চাকরি পাবার সুযোগ থাকে। তাছাড়াও দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ইচ্ছা থাকলে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-ই হবে একজন শিক্ষার্থীর সেরা সুযোগ।

   

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীদের অবস্থান



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

অনির্দিষ্টকালের জন্য হল বন্ধের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান হলে অবস্থান করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এদিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে হলের প্রাধ্যক্ষরা জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে থাকতে কোন বাধা নেই।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জরুরি এক সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের আজ বিকেল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

হলে থাকার প্রসঙ্গে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জয় রায় বলেন, আমরা হল ছাড়ছি না। প্রাধ্যক্ষ স্যারও থাকার পক্ষে। তাছাড়া হলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখানে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। এক্ষেত্রে আমাদের দাবি, পরিবহন ব্যবস্থা যেন অবিলম্বে চালু করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফরহাদ কাউসার জানান, প্রশাসন থেকে হল ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, গতকাল হল বন্ধের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যদি হলে থাকতে চায়, মনে হয় না কোন সমস্যা হবে। আমি শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের সাথে কথা বলে এই বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিব।

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ জিয়া উদ্দিন বলেন, হল কেন্দ্রিক কোন ঝামেলা না হলে প্রশাসন হলের শিক্ষার্থীদের বের করে দিবে না। তাই শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে অবস্থান করতে পারবে।

;

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান কুবি শিক্ষার্থীদের



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা হল চালু রাখার ও ক্লাসে ফেরার দাবি জানান। এছাড়া এই মানববন্ধনের একাত্মতা পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ নাসির হোসাইন ও শেখ হাসিনা হলের হাউজ টিউটর আল-আমিন হোসেন।

বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর সংলগ্ন রাস্তায় এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম পড়াশোনা করার জন্য, তবে বিগত কয়েক মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। কখনো শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করছে, তো এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে, হল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছে। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রশ্ন শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা শিক্ষার্থীরা কিভাবে দোষী? আমরা কেন ভুক্তভোগী? এখানে অনেক শিক্ষার্থী অর্থাভাবে হলে থাকে টিউশন করিয়ে নিজের আর পরিবারের ভরণপোষণ সামলায়, তারা কোথায় যাবে?

আমরা যে পড়াশোনায় পিছিয়ে যাচ্ছি এর দায়ভার কে নিবে। আমি একটাই দাবি করতে চাই, আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা হোক, হলগুলো বন্ধ না করা হোক।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম আবর্তনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা সুলতানা বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সার্কাস চলছে। প্রথমে প্রশাসন সিদ্ধান্ত দিল ২রা মে পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, অনলাইনে ক্লাস চলবে। প্রশাসনের সিদ্ধান্তঃকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শিক্ষক সমিতি আবার এই মগজ গলা গরমে সিদ্ধান্ত দিল ২৮ এপ্রিল থেকে স্বশরীরে ক্লাসে ফিরবে, এর আগে তারা আবার ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন করেছিলো। এখন আবার প্রশাসন আমাদেরকে হল থেকে বের করে দিচ্ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে। এমনিতে বেশ কিছু বিভাগ করোনার কারণে পিছিয়ে আছে তার ওপর তাদের এ ধরণের সিদ্ধান্ত কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষক সমিতি আর উপাচার্যের দ্বন্দ্বে আমরা বলির পাঠা হয়ে আছি। এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান আশা করছি।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আনাস আহমেদ বলেন, 'আজকে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখানে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি নিজেদের কিছু ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য। আমাদের ক্লাস, পরীক্ষা চালু করতে হবে, হলগুলো খোলা রাখতে হবে। শিক্ষকদের ওপর বহিরাগতদের হামলার তদন্ত করে সঠিক বিচার করতে হবে দোষীদের। চলমান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করতে হবে, অন্যথায় আমরা আমাদের কর্যক্রম চালিয়ে যাব।'

শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে নাসির হোসাইন বলেন, ‘বর্তমানে চলমান সংকট সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে। শিক্ষার্থীদের সংকটের মুখেই এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমার মনে হয় না, এমন কিছু ঘটেছে। আর কাজী নজরুল হলে কোনরকম অবৈধ অস্ত্র বা টাকা ঢুকেনি। আমার হল খোলা থাকবে। আমার হলের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।'

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক আল-আমিন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমার হলে কোনপ্রকার অবৈধ অস্ত্র নেই। আমার হল স্বাভাবিক আছে। আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, তারা তাদের মতো করে হলে থাকতে পারবে। শিক্ষার্থীদের কেউ জোরপূর্বক হল থেকে বের করতে পারবে না।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, 'প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত একটি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন হল প্রভোস্টদের সাথে কথা বলেছি তারা বলেছে হল খুব সুন্দরভাবেই চলছে। আর একাডেমিক কার্যক্রম চলুক সেটাও আমি চাই। আমি মনে করি এই উপাচার্য একজন অদক্ষ প্রশাসক। তার পদত্যাগই সবকিছুর সমাধান।'

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই আছি। যখন কোন একটা ছুটি হয় তখন কিন্তু প্রতিবার একই নোটিশ যায় যে হল ছাড়তে হবে। অনেক সময় হল সিলগালা করে দেয়া হয় সেক্ষেত্রে সবাইকে সেটা মানতে হবে। যেহেতু এই নোটিশে সিলগালার কথা বলা নাই সেক্ষেত্রে কেউ যদি বিকাল চারটার মধ্যে হল ত্যাগ না করে তাহলে নিশ্চই হল প্রসাশন শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিবে।'

;

'ফিলিস্তিনের ২০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানসহ ঢাবিতে ভর্তি করা হবে'



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও আবাসিক সুবিধাসহ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। 

বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অধিদপ্তর হতে জানা যায়, মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত মি. ইউসুফ এস, ওয়াই, রামাদান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় ঢাবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি, বৃত্তি এবং আবাসিক সুবিধা প্রদানের বিষয় নিয়ে তারা দীর্ঘ আলোচনা করেন। এসময় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নে আগ্রহী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও বৃত্তি প্রদানের জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ১৯৭১ সালে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে জোড়ালো অবস্থান নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও আবাসিক সুবিধাসহ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। ঢাবিতে অধ্যয়নকালে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে বলে তিনি রাষ্ট্রদূতকে জানান।

উপাচার্য ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজা'র অধিবাসীদের উপর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বর্বর ও নির্মম হামলা, গণহত্যা ও অমানবিক অত্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সকল জনগণ ফিলিস্তিনি বন্ধুদের প্রতি সবসময় সহানুভূতিশীল বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং ঢাবিতে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ভর্তির বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, এ সময় আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসাদ মুর্তুজা এবং জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

;

ইবির দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা না মেনে কন্ট্রোলরুমে প্রবেশ



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গুচ্ছভুক্ত স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ও আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে সমন্বয়কারীর অফিস ও ভর্তির কার্যাদি সম্পাদনের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট ভবনে প্রবেশ করেছেন দুই শিক্ষক। উক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা।

অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হচ্ছেন আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ও ইবি শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এবং ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী। ঘটনার পরদিনই প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ঝিনাইদহ আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার ফজলুল হক এবং কুষ্টিয়া আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার আলতাফ হোসেন।

অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষার আগের রাতে আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এ ইউনিটের সমন্বয়কারী অফিস ও ভর্তির সকল কার্যাদি সম্পাদনের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে এবং আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী বি ইউনিটের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট তালাবদ্ধ অনুষদ ভবনে প্রবেশ করেন। তবে উক্ত ভবন দুটিতে দুই ইউনিটের কন্ট্রোল রুম থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাত ৮টার পরে উক্ত ইউনিটে কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক/কর্মকর্তা ব্যতিরেকে অন্য কাউকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে আনসারদের বাধা উপেক্ষা করে জোর করেই উক্ত দুই শিক্ষক ওই দুটি ভবনে প্রবেশ করেন। এমতাবস্থায় জরুরী নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা তাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ঝুকিপূর্ণ বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন আনসার সদস্যরা।

পরীক্ষার আগের রাতে ভবনে ঢোকার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানতেন না উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, অফিস কক্ষে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গিয়েছিলাম। সেসময় আনসারদের কাছে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রথমে শুনতে পাই। পরে কাগজপত্রগুলো নিয়ে চলে আসি। বিষয়টি প্রক্টরকে ফোন করে অবহিত করেছিলাম।

ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী বলেন, বিভাগে কিছু কাজ ছিল সেজন্য রাত ৮টার দিকে অফিসে গিয়েছিলাম। তাছাড়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের লিখিতভাবে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রবেশের সময় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরাও কিছুই বলেনি। পরে আমার রুমে একজন আনসার এসে বলে যে, প্রক্টর স্যার অনুষদ ভবনে কাউকে ঢুকতে নিষেধ করেছেন। এসময় প্রক্টরকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনি যেহেতু বিভাগের কাজ করছেন। আপনি থাকেন, কোনো সমস্যা নেই।’

কর্মকর্তা সেলিম বলেন, স্যার প্রবেশ করার সময় আনসার সদস্যরা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টা শেয়ার করেন। পরে নিষেধাজ্ঞা না মেনে প্রবেশ করলে আমারে জানান আনসাররা। তাৎক্ষণিক প্রক্টর স্যারকে কল দিয়ে বিষয়টা অবহিত করি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে স্যারদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকতেও পারে কিন্তু স্যার প্রবেশের পর আরও দুজন কেন প্রবেশ করলো বোধগম্য হয় না। জবাবদিহি আমাদের করা লাগবে বলে নিরাপত্তার স্বার্থে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টা খুব সেনসিটিভ। বাকিটা প্রশাসন দেখবেন।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ঘটনাটি ২৬ তারিখে অর্থাৎ ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতের। আমার কাছে গত ২৭ তারিখে নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম তার বরাবর দেয়া আনসার পিসিদের ২টি লিখিত আবেদনের উপর নোট উপস্থাপন করেন। পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত থাকায় আমি সেই নোটটি ২৯ তারিখে ফরওয়ার্ড করেছি।

ঐ দুই শিক্ষক তাকে সেসময় বিষয়টি অবহিত করেছেন, এবিষয়ে প্রক্টর বলেন, বিষয়টি সত্য নয়। তারা একেক সময়ে একেক কথা বলছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। আনসার সদস্যরা অভিযোগ দিয়েছেন। তবে আমার কাছে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগটি আসেনি। আগে অভিযোগ পত্রে কি আছে সে বিষয়টি বুঝতে হবে। তাহলে এ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এক্ষেত্রে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। যেহেতু পরীক্ষার আগের রাত গুরুত্বপূর্ণ সময়। সেক্ষেত্রে সবার উচিত সংযত ও যুক্তিসংগত আচরণ করা।

;