বাতির নিচেই অন্ধকার!



সাইফ সাইফুল্লাহ, রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০টা। ক্যাম্পাসের একটি চায়ের দোকানের এপাশ থেকে ওপাশে ছুটোছুটি করছে দশ বছর বয়সী শিশু শুভ। ‘এই পিচ্চি, এদিকে আয়’ বলে বিভিন্ন পাশ থেকে ডাক পড়ছে তার। ডাক পড়তেই সেখানে ছুটে যাচ্ছে সে। চাহিদা মতো সরবরাহ করছে চা-সিগারেট।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তৃতীয় বিজ্ঞান ভবনের পাশে খালেকের চায়ের দোকানের সামনের দৃশ্য এটি। শুধু এই দোকানই নয়, ক্যাম্পাসের চাসহ অন্যান্য খাবারের দোকানের চিত্র একই। উত্তরবঙ্গের সেরা এই শিক্ষাঙ্গনে আইন অমান্য করে দোকানগুলোতে কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশুদের। জ্ঞানার্জনের বিদ্যাপীঠে এ চিত্র যেন আলোর প্রদীপের নিচেই অন্ধকার।

শিশু শ্রমিক শুভ জানায়, তার বাবা একজন রং মিস্ত্রি। মা অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে কাজ করে ৪০ টাকা পায় সে। সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তার মা তাকে খাইয়ে দিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে চলে যান। পড়াশোনা করার ইচ্ছে থাকলেও পরিবারের অভাব অনটনের কারণে প্রতিদিন তাকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/16/1542341839407.gif

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে চায়ের দোকানে কাজ করে ১২ বছর বয়সী শিশু নাসরুল্লাহ। সে জানায়, সাত বছর বয়সে বাবাকে হারায়। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে। মায়ের উপার্জনে সংসারের খরচ না মেটায় চায়ের দোকানে কাজ নেয় নাসরুল্লাহ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চায়ের দোকানে কাজ করলে প্রায় দেড়শ টাকা পায় সে। সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তার মা একটি বাটিতে করে খাবার দিয়ে দেয়। সেই খাবার দুপুরে খায়। লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ থাকলেও অভাবের কারণে নাসরুল্লাহের আর বিদ্যালয়ে যাওয়া হয়ে ওঠেনি।

এছাড়া ক্যাম্পাসে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করে রাব্বী। সকাল হতেই চুলায় বাদাম ভেজে দেন মা। তারপর ক্যাম্পাসেই ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করে সে। দুপুরে খাবার হাতে মা ছুটে আসে ক্যাম্পাসে। একসঙ্গে মা ও ছেলে খাবার ভাগ করে খায়। এভাবেই তাদের মা ছেলের দিন চলে।

রাব্বীর মা রাবেয়া খাতুন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এই ব্যাটাটা (ছেলে) বাপ মইরি যাওয়ার পর থেইকি সংসারের হাল ধইরিছে। এই বয়সীর ছাওয়ালেরা (ছেলেরা) সারাদিন কতো দৌড়ি বেড়ায়, আর আমার রাব্বীক বাদাম লিয়া ছুটতি হয়। ক্যাম্পাসের মামারা (শিক্ষার্থীরা) ওক অনেক আদর করে। আমি হতভাগা মা ওর জন্য কিছুই করতি পারি না। আমি দুয়া করি আমার রাব্বী জানি জীবনে মেলা বড় অয়।’

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, শুভ, রাব্বী ও নাসরুল্লার মতো আরও অনেক শিশু ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দোকানে কাজ করে। যে বয়সে তাদের বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, অন্য শিশুদের মতো মাঠে খেলাধুলা করার কথা, সেই বয়সে তারা কাজে নিয়োজিত। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে দোকান থেকে তারা পায় পঞ্চাশ থেকে দেড়শ টাকা। দিন শেষে তা তুলে দেয় বাবা-মায়ের হাতে। তাদের এই সামান্য রোজগারের টাকায় ঘুরছে সংসারের চাকা।

দোকানিরা বলছেন, অল্প মজুরিতে শিশুদের বেশি কাজ করানো যায়। এছাড়া শিশুদের যা বলা হয়, তারা তাই শোনে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিকে যেখানে দিনে তিন থেকে চারশ টাকা দিতে হয়, সেখানে শিশুদের পঞ্চাশ থেকে দেড়শ টাকা দিলেই চলে। এজন্য সবাই শিশুদের কাজে লাগায়।

অথচ বাংলাদেশ শ্রম আইন (২০০৬) অনুসারে শ্রমিকের বয়স ১৪ বছরের নিচে হওয়া যাবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। শ্রমে নিয়োজিত বহু শিশুর বয়স ১৪ বছরের নিচে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনেকেই শিশু শ্রমে নিয়োজিত থাকলেও দেখার যেন কেউ নেই। অপরদিকে, ছোট বয়সে শ্রমে নিয়োজিত হওয়ায় মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/16/1542341865135.gif

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ওয়ারদাতুল আকমাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘শিশুদের দিয়ে কাজ করানোর বিষয়টা অমানবিক। শিশু কাজে নিয়োজিত থাকলে তার মানসিক বিকাশ সঠিকভাবে হয় না। দোকান মালিক নিজেদের লাভের আশায় শ্রমে শিশুদের ব্যবহার করছেন, এটা উচিত না। শিশু শ্রম বন্ধে সবার এগিয়ে আসার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনা প্রয়োজন।

আইন অমান্য করে শিশুদের দিয়ে কাজ করানো প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুল আলম প্রধান বার্ত২৪.কমকে বলেন, ‘শিশুদের দিয়ে কোনো ভাবেই স্বাস্থ্যহানিকর বা ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজ করানো যাবে না। এ বিষয়টি ২০০৬ এর শিশু শ্রম আইনে বলা থাকলেও বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে আইনি বিধান ও প্রয়োগের সীমাবদ্ধতার কারণে শিশুদেরকে শ্রমে নিয়োজিত করা হচ্ছে। যার ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। দেশে শিশু শ্রম বন্ধের আইন ও নীতিমালা আছে, কিন্তু আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকার ফলে শিশু শ্রম বন্ধ হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আঞ্জুমান বানু বার্তা২৪.কমকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব দোকান রয়েছে তা প্রশাসনের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছেন এর মালিকরা। এ সকল দোকানগুলোতে শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে মালিক পক্ষের ভূমিকা থাকে। তারা কাকে দিয়ে দোকানের কাজ পরিচালনা করবেন এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে কেউ যদি এ বিষয়ে অভিযোগ করে তাহলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।

   

আহত চবি শিক্ষার্থীর পাশে উপাচার্য-প্রক্টর 



চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিপক্ষের কোপে আহত ছাত্রলীগ কর্মী সালাহ উদ্দিনের শারীরিক অবস্থা পরিদর্শন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড মো আবু তাহের ও প্রক্টর অধ্যাপক ড মোহাম্মদ অহিদুল আলম।

বুধবার (২২ মে) সকাল সাড়ে দশটায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) দেখা করতে যান তারা।

চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওহিদুল আলম বলেন, গতকাল ওই ঘটনার পর থেকে অপারেশন হওয়া পর্যন্ত দুইজন সহকারী প্রক্টর সেখানে ছিল। আজ সকালে আমাদের ভিসি স্যার ও আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। আমরা গিয়ে দেখি সে বেড পাইনি ফ্লোরিং করে ছিল। আমরা মেডিকেল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কেবিনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তার একটা হাত নড়াচড়া করতে পারছিল না, হাত যাতে নড়াচড়া করতে পারে এজন্য যা করা দরকার সব নির্দেশনা দিয়েছেন ভিসি স্যার। 

তিনি আরও বলেন,  সালাহ উদ্দিন দেশের সম্পদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ, তার প্রতি আমাদের সবসময় সহানুভূতি থাকবে। 

তার ব্যয়ভার কে বহন করবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত ওরাই তার ব্যয়ভার চালাচ্ছে। যদি তার অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা থাকে তাহলে আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তার ব্যয়ভার বহন করব।

এর আগে, মঙ্গলবার(২১ মে) উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে বিবাদে লিপ্ত হয় চবি শাখা ছাত্রলীগের দুইটি উপগ্রুপ বিজয় ও সিএফসি। সেখানে বিজয় গ্রুপের অনুসারী সালাহ উদ্দিনকে সিএফসি গ্রুপের অনুসারীরা রামদা দিয়ে গলায় কুপিয়ে জখম করে।এতে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে চমেকে ভর্তি করা হয় তাকে।

এ ঘটনায়  বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ঐইদিনই লিখিত অভিযোগ দেয় সালাহ উদ্দিন। সেখানে হামলার সাথে সম্পৃক্ত  ছয়জনের নাম উল্লেখ করে তিনি তাদের বিরুদ্ধে বিচার চান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। 

অভিযুক্ত চারজন হলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৭-১৮  শিক্ষাবর্ষের বিদ্যুৎ খান সাইফুল, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ আব্দুস সাত্তার শান্ত, দর্শন বিভাগের ওমর শরীফ হৃদয়, ইতিহাস বিভাগের শোয়ায়েব আখতার সুলভ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ট্রিপল ই বিভাগের রাজেশ চক্রবর্তী ও আন্তর্জাতিক ভাষা ইনস্টিটিউটের  মো. নিশাত শাহরিয়ার। 

উল্লেখ্য, আহত ওই ছাত্রলীগ কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি প্রথম চবিয়ান হিসেবে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। এপর্যন্ত তিনবার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন তিনি।

;

জুয়া খেলতে এসে ইবিতে ৪ বহিরাগত আটক, মুচলেকায় মুক্তি



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্রিকেট মাঠে প্রাক্টোরিয়াল বডির হঠাৎ অভিযানে ৪ জুয়ারিকে আটক করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর প্রভাষক ইয়ামিন মাসুম ও নাসির মিয়ার উপস্থিতিতে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে তাঁরা আর এমন কাজে লিপ্ত না হওয়ার মর্মে অঙ্গীকার করিয়ে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (২১ মে) রাত ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাম্পাসের ক্রিকেট মাঠ হঠাৎ অভিযান পরিচালনাকালে তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন পদনদী গ্রামের নজরুল শাহের ছেলে আশিকুর রহমান, মোকাদ্দেস হোসেনের ছেলে সাগর হোসেন, উকিলের ছেলে তানজিল ও শেখপাড়ার আব্দুল আজিজের ছেলে মোঃ রাকিব হোসেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর ক্যাম্পাসে থাকা সহকারী প্রক্টরদের জানাই। পরে তাঁরা গিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে জুয়ারিদের আটক করে। পরে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি৷ এধরণের কার্যক্রম যেনো ক্যাম্পাসে না ঘটে সেজন্য প্রক্টরিয়াল বডি সর্বদা সতর্ক রয়েছে।

;

চবি ছাত্রলীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষ, একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক



চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চবি ছাত্রলীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষ

চবি ছাত্রলীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষ

  • Font increase
  • Font Decrease

উপজেলা নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত চারজন আহতসহ একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে চবি ক্যাম্পাসের ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়িত পক্ষ দুটি হলো চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) ও বিজয়। তারা উভয়ই ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন চলছিল। নির্বাচনের একটি কেন্দ্র ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ। কেন্দ্রটিতে পূর্ব থেকে দুই পক্ষই অবস্থান নেয়। বিজয়ের কর্মীরা মোটরসাইকেল প্রতীক ও সিএফসির কর্মীরা ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিজয় গ্রুপের সালাহ উদ্দিনের গলায় রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে সিএফসির কর্মীরা।

এ ঘটনায় দুই পক্ষের কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ধাওয়া পালটা-ধাওয়া, প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ এবং রামদা ও লাঠিসোঁটা হাতে মহড়া দিতে দেখা যায়। ইটের আঘাতে সিএফসির ৪ কর্মী ও বিজয়ের একাধিক কর্মীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি দুপক্ষের কর্মীদের হলে ঢুকিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গ্রুপগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আহত ওই ছাত্রলীগ কর্মীর নাম সালাহ উদ্দিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয় সালাহ উদ্দিন। সেখানে হামলার সাথে সম্পৃক্ত ছয়জনের নাম উল্লেখ করে তিনি তাদের বিরুদ্ধে বিচার চান।

অভিযুক্ত চারজন হলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বিদ্যুৎ খান সাইফুল, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৮-১৯ আব্দুস সাত্তার শান্ত, দর্শন বিভাগের ওমর শরীফ হৃদয়, ইতিহাস বিভাগের শোয়ায়েব আখতার সুলভ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ট্রিপল ই বিভাগের রাজেশ চক্রবর্তী ও আন্তর্জাতিক ভাষা ইনস্টিটিউটের মো. নিশাত শাহরিয়ার।

সিএফসির নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব সোপান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের সংগঠন থেকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ছিল, আমাকে অবগত না করেই কয়েকজন সেখানে গিয়েছিল। তারা সেখানে যে কাজ করেছে তা কোনভাবেই কাম্য নয়। সালাহ উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় ও আমাদের দেশের সম্পদ তাকে এভাবে যে বা যারা আঘাত করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।

বিজয়ের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ভোটকেন্দ্র আমাদের হলের পাশে হওয়ায় কয়েকজন কেন্দ্রের ওদিকে যায়। গিয়ে দেখে রব হলের ছেলেরা এসে কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করছে। এসময় সালাহ উদ্দিন তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে এই নির্বাচনে ইনভলভ না হওয়ার জন্য বলে। এরপরই তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, ছাত্রলীগের ছেলেদের জিজ্ঞাসা করা হলে তার জানায় নির্বাচন কেন্দ্রিক কোনো বিষয় নেই। হলে কোনো বিষয়ে ঝামেলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম জানান, নির্বাচন কেন্দ্রিক বিশৃঙ্খলা থেকে ঘটনার সূত্রপাত, সেখানে এক শিক্ষার্থী গলায় গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তাকে চমেকে পাঠানো হয়েছে। তার জখমটা মারাত্মক হওয়াতে তাকে ওটিতে নেওয়া হয়েছে। যেহেতু এটা নির্বাচন কেন্দ্রিক ঘটনা সেহেতু বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন দেখবে।

;

সাস্ট ফিজিক্স অ্যালামনাই’র প্রথম কমিটি গঠন



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সাস্ট ফিজিক্স অ্যালামনাই’র প্রথম কমিটি গঠন

সাস্ট ফিজিক্স অ্যালামনাই’র প্রথম কমিটি গঠন

  • Font increase
  • Font Decrease

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘সাস্ট ফিজিক্স অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের’ প্রথম কমিটি গঠন করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন- বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রফেসর নাজিয়া চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে- মোহাম্মদ খুরশেদ আলম। এছাড়াও শরফুদ্দীন আহমেদ তারেক কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন।

গত ১৮ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভায় সদস্যদের সরাসরি ভোটে দুই বছর মেয়াদি ৪১ সদস্যের কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়। দেশ ও দেশের বাইরে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরাও অনলাইনে সরাসরি যুক্ত হয়ে ভোট প্রয়োগ করেন।

১৯৯০ সালে পদার্থ বিজ্ঞানসহ তিনটি বিভাগ নিয়ে যাত্রা শুরু করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম ব্যাচ বের হওয়ার তিন দশক পর গঠন করা হলো এই কমিটি।


অনুষ্ঠানের শুরুতে সাবেক শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করা হয়। পরে আহ্বায়ক কমিটি তাদের কার্যক্রম এবং আয়-ব্যয়ের বিবরণ তুলে ধরেন। একইসঙ্গে গঠন করা হয় নির্বাচন কমিশন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বিভাগীয় প্রধান ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক। সাবেক শিক্ষার্থীদের এই সংগঠন নিয়ে উচ্চাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই যে একটি সূতিকাগার হলো, এই যে একটু সেতু হলো, এটা নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং গবেষণায় ভূমিকা রাখবে বলেই আমার বিশ্বাস। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন দশকের বেশি সময়ের পথ চলার সঙ্গী হলো আজকের এই মঞ্চ। বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার জন্য সাবেক শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানন তিনি।


প্রফেসর নাজিয়া চৌধুরী অ্যাসোসিয়েশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা আমাদের এই অ্যাসোসিয়েশনকে পদার্থবিদদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের একটি সংগঠনে রূপ দিতে চাই। পদার্থ বিজ্ঞান শুধু বিজ্ঞানের ভিত্তিই নয়, প্রযুক্তির উন্নয়নেও পদার্থবিদরা অগ্রণী ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। নানা প্রান্তে কর্মরত আমাদের পদার্থবিদরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। এবার আমাদের দেওয়ার পালা। আমরা আমাদের উত্তরসূরিদের সহযোগিতায় তাদের পাশে থাকতে চাই। বাংলাদেশে গবেষণা খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি যার যার অবস্থান থেকে দেশের স্বার্থে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

জসির আহমেদের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর ড. বদিউজ্জামান ফারুকসহ বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষকরা।

;