যৌতুকের জন্য ঢাবি ছাত্রীকে নির্যাতন, প্রতিবাদে মানববন্ধন
যৌতুকের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংস্কৃতি বিভাগের ছাত্রী কানিজ ফাতেমাকে নির্যাতনের ঘটনায় করা মামলায় পুলিশের অসহযোগিতার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ও বন্ধুসভার সদস্যরা অংশ নেন।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দুপুর ১২টায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে, কানিজ ফাতেমা তার ওপর অসহনীয় নির্যাতনের অভিযোগ আনেন তার স্বামী সহকারী জজ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ১০ লাখ টাকা না দেওয়ায় নিয়মিত অসহনীয় মারধরের শিকার হতেন কানিজ। এছাড়াও ওই টাকা না দিতে পারলে তাকে তালাক দেবেন বলে অভিযোগ আনেন ঢাবির সংস্কৃতি বিভাগের ওই প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
‘১৩ দিন শাহবাগ থানা ঘুরে ঘুরে আমার মামলা নেয়া হয় না। সবাই শুধু আপসের কথা বলে! এত মারধরের পরও আপস করি কিভাবে?’ অনেক সময় দীর্ঘায়িত হওয়ার পর মামলা রুজু হলে তদন্ত কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে তাকে ঘুরানোর অভিযোগ আনেন, কানিজ। কানিজ তার মারধরের ঘটনায় মেডিকেল রিপোর্ট দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা কে সহায়তা করতে চাইলেও তা নেয়নি বলে জানান তিনি। সব শেষ রাষ্ট্রের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন, কানিজ ফাতেমা।
সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. প্রমথ মিস্ত্রী বলেন, স্বাধীন দেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের এ অবস্থা হলে তাহলে অন্যান্যদের কি অবস্থা তা অনুধাবনের বিষয়! প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে কানিজের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
ওই বিভাগের আরেক সহকারী অধ্যাপক ড. কালিদাস ভক্ত বলেন, কানিজকে নির্যাতনের ঘটনায় অনেক তথ্য-উপাত্ত আছে। বিচারক অপরাধ করলে অবশ্যই তাকে বিচারের আওতায় আসতে হবে। এজন্য মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।
সহযোগী অধ্যাপক ড. চন্দনা রানি বিশ্বাস বলেন, তিনি (কানিজ ফাতেমার স্বামী) বিচারক বলে কি ক্ষমা পাবেন? তিনি কি ক্ষমার যোগ্য? প্রতিনিয়ত যে স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য অত্যাচার করেছেন, সেসব ঘৃণ্য অপরাধের জন্য তীব্র নিন্দা জানাই। এ বিচার যদি না হয়, তাহলে আরও অনেকেই এমন অপরাধ করার সাহস দেখাবে। অনেক কানিজ ফাতেমা এমন নির্যাতনের শিকার হবে।
সংস্কৃত বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. ময়না তালুকদার বলেন, ‘সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তাকে যথাযথ বিচারের আওতায় এনে তাকে বিচারক পদ অব্যাহতি দেওয়া হোক। যে ঘরের স্ত্রীকে সম্মান দিতে পারে না। এমন জাজের আমাদের সমাজে, আমাদের এ দেশে দরকার নেই।’
ওই মানববন্ধনে সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিভিন্ন হলের বিতর্কিক ও বন্ধু সভার সদস্য ছাড়াও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।