প্রাচীন স্থাপত্য আবিষ্কার করল কুবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
কুমিল্লার বসন্তপুরে প্রাচীন স্থাপত্যের এক নিদর্শনের খোঁজ পেয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান ও তার বিভাগের একদল শিক্ষার্থী।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কুবির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হানের নেতৃত্বে প্রত্নতত্ত্বের একদল শিক্ষার্থী প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অনুসন্ধানের জন্য পাঁচথুবি ইউনিয়নে যায় এবং সেখানে বসন্তপুর গ্রামে এই প্রাচীন নিদর্শন আবিষ্কার করে।
খুঁজে পাওয়া এই প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন সম্পর্কে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান বলেন, ‘বর্তমান অনুসন্ধানে ইট নির্মিত একটি প্রাচীন স্থাপনা আবিষ্কার করেছি আমরা। সারফেস স্ক্র্যাপিংয়ে স্থাপত্যের তিনটি বাহু শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এতে ২৫ বর্গ সেন্টিমিটার আকৃতির বর্গাকৃতির ইট ব্যবহার করা হয়েছে। স্থাপত্যটির ব্যবহার ও ধরন সুনির্দিষ্টভাবে বোঝা না গেলেও এটি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, স্থাপত্যটি একটি বড় স্থাপত্য কমপ্লেক্স এর অংশ।’
তিনি আরও বলেন, প্রত্নস্থল সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের ধারণা না থাকা, ‘অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি এবং বৃক্ষ রোপণের ফলে কালের সাক্ষী এই প্রত্নস্থলগুলোর ব্যপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে। আর এর সুরক্ষায় প্রয়োজন জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা। আবিষ্কৃত এই প্রত্নস্থল এবং এর সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আমরা ইতোমধ্যে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি।’
নতুন এই আবিষ্কার নিয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল কাউসার বলেন, ‘প্রত্নতত্ত্বে পড়ার সুবাদে আমি বিভিন্ন নিদর্শন আবিষ্কারের কথা পড়েছি, শুনেছি। এই প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কারের অংশ হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। আমরা মুর্শেদ রায়হান স্যারের নেতৃত্বে পাঁচথুবি ইউনিয়নে যাই প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন অনুসন্ধানের জন্য। পরে সারফেস স্ক্র্যাপিং করে সেখানে প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন আবিষ্কার করতে সক্ষম হই।’
জানা যায়, স্থানীয়ভাবে বসন্ত রাজার বাড়ি নামে ঐ জায়গাটি পরিচিত। তার ধারণা করে কোনও বসন্ত নামক রাজার রাজত্ব থেকেই হয়ত গ্রামের নাম বসন্তপুর হয়েছে। এছাড়া শালবন বিহারে প্রাপ্ত আনন্দদেবের তাম্রশাসনে বসন্তপুর নামক জায়গায় অস্থায়ী রাজধানী স্থাপনেরও উল্লেখ রয়েছে। তবে এটা নিশ্চিত নয় যে এখনকার বসন্তপুরই সেই বসন্তপুর কি না। এর জন্য আরও বিস্তৃত পরিসরে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা প্রয়োজন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।