ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষাই কি যুদ্ধ? এনএসইউ ওয়েবিনারে নোবেল বিজয়ীদের বক্তব্য

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: এনএসইউ

ছবি: এনএসইউ

সম্প্রতি দুই নোবেল বিজয়ী, জোডি উইলিয়ামস (শান্তি) এবং রিচার্ড জে রবার্টস (মেডিসিন) চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে বক্তৃতা করেন। গত ১ এপ্রিল ২০২২, “যুদ্ধ কি অনিবার্য? আমরা কি দৃষ্টান্ত পরিবর্তন করতে পারিনা?” শীর্ষক এই আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইন্সিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি)’র অধীন সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) এবং দৈনিক প্রথম আলো।

এই অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী জোডি উইলিয়ামস। তিনি ১৯৯৭ সালে ল্যান্ডমাইনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচারণার মাধ্যমে মাইন নিষিদ্ধ এবং এর সাথে জনগণকে সম্পৃক্ত করার ফলে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।

বিজ্ঞাপন

জোডি উইলিয়ামস ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের মানবিক দিকগুলো বিশদভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা যদি প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কে কিছু না বলি তাহলে অদূর ভবিষ্যতে পুরো বিশ্ব কঠিন বিপদে পড়বে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে পারস্পরিক ধ্বংস জনগণকে মেনে নেওয়া উচিত নয় বলেও মত দেন তিনি। তাই বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত যেকোনো যুদ্ধ, বিশেষ করে ভবিষ্যত পারমাণবিক যুদ্ধ বন্ধে সচেষ্ট হওয়া। পরিশেষে, তিনি আবারো জোর দিয়ে বলেন যে আমরা মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীকে, তা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করতে দিতে পারি না। এবং তিনি আহ্বান জানান, চলমান যুদ্ধগুলোই হোক এই পৃথিবীর শেষ যুদ্ধ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নোবেল বিজয়ী রিচার্ড জে. রবার্টস, যিনি ১৯৯৩ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞান বা মেডিসিনে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি বৈজ্ঞানিক এবং মানবতা প্রচারের বিষয়ে বেশ কয়েকটি উদ্যোগের সাথে জড়িত রয়েছেন। সম্প্রতি তিনি ইউক্রেনে শান্তির জন্য নোবেল বিজয়ীদের সম্মিলিত আবেদনে সাক্ষর গ্রহনে সকলকে সংগঠিত করেছেন। তিনি জাতিসংঘের অকার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন কারণ এটি রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধে দেশগুলিকে একত্রিত করতে পারেনি। তিনি এই যুদ্ধে সাহসী ভূমিকার জন্য ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রশংসা করেন এবং বলেন যে আমাদের তার মতো আরও সাহসী নেতা দরকার।

ওয়েবিনারে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনএসইউ’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব আজিম উদ্দিন আহমেদ এবং এনএসইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম। উপাচার্য বলেন যে কিছু দেশে সত্যিকারের উদ্বেগ রয়েছে যে বড় দেশগুলি তাদের ছোট প্রতিবেশী দেশগুলিকে আক্রমণ করে সহজেই পার পেয়ে যেতে পারে এবং তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘের কাছ থেকে আরও সক্রিয় ভূমিকা আশা করেছিলেন।

প্রথম আলোর সম্পাদক জনাব মতিউর রহমান সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন এবং আশা করেন যে, সম্মিলিত পদক্ষেপের মাধ্যমে আমরা যুদ্ধ এড়িয়ে একটি শান্তিময় বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি এবং এ ক্ষেত্রে তরুণদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

এনএসইউ’র রাষ্ট্র ও সমাজবিজ্ঞান (পিএসএস) বিভাগের অধ্যাপক এবং সিপিএস-এর সদস্য হেলাল মহিউদ্দিনের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। ওয়েবিনারের সঞ্চালক ছিলেন সিপিএস-এর সদস্য এবং পিএসএস-এর সহকারী অধ্যাপক ড. ইশরাত জাকিয়া সুলতানা। ওয়েবিনারে শিক্ষাবিদ, গবেষক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, কূটনীতিক, সাংবাদিক, এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন