চলছে বাংলা নববর্ষের শেষ সময়ের প্রস্তুতি

  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট ফুটে উঠেছে এক গ্রামীণ আবহে। ‘নির্মল করো, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে’ প্রতিপাদ্যে দু’বছর পর আড়ম্বরের সঙ্গে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ অনুষ্ঠিত হবে।

অন্যদিকে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ণাঢ্য আয়োজন সেরে নিতে শেষ দিকের প্রস্তুতি চলছে, সঙ্গে চলছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিভিন্ন পয়েন্ট সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার কাজ চলছে।

বিজ্ঞাপন
রঙ-তুলির আঁচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাবি চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা

বুধবার (১৩ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র চোখে পড়ে। আজ বাদে কাল পহেলা বৈশাখ -১৪২৯, শেষ সনয়ে শিক্ষার্থী ও আয়োজকদের যেন হাই ফেলার সময়টুক নেই। শেষ সময়েও রঙ-তুলির আঁচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাবি চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। কারণ একদিন পরেই বাংলার প্রকৃতিতে আসছে বাংলা নববর্ষ।

প্রতিবছর মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে থাকে অনুষদের সিনিয়র ব্যাচ। তাই এবার এসব কর্মযজ্ঞের দায়িত্বে রয়েছেন চারুকলার ২২ ও ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, এবারের শোভাযাত্রায় ঘোড়া ও টেপা পুতুলসহ মোট পাঁচটি বড় মোটিফ থাকবে ৷

বিজ্ঞাপন
প্রদর্শনীতে মুখোশ

এদিকে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণে পরিস্থিতি বিবেচনা করে মঞ্চের মহড়া এবার বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে মাসখানেক ধরে নিয়মিত মহড়া চলছে। গান, আবৃত্তি, পাঠ নিয়ে অনুষ্ঠানসূচি প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। আয়োজনে প্রায় দেড়শ শিল্পী অংশ নেন, এবার সংখ্যা কমিয়ে ৮৫ জন করা হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাবির চারুকলার বাইরের সীমানা প্রাচীরে বাঙালির লোকজ সংস্কৃতির চিত্রে সেজে উঠেছে। সেই সঙ্গে ভেতরের বাচ্চাদের স্কুল ঘরটি নকশিকাঁথার লোকজ সংস্কৃতির চিত্রতে ফুটে উঠেছে। পহেলা বৈশাখ রমজান মাসে হওয়ায় সাধারণ মানুষের আনাগোনা একটু কমে যাওয়ায় বিভিন্ন চিত্রকর্ম কম বিক্রি হচ্ছে। তবে এতে মঙ্গল শোভাযাত্রায় খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে জানান শিল্পীরা। তারপরেও মঙ্গল শোভাযাত্রা উপলক্ষে চারুকলার জয়নুল আর্টস গ্যালারিতে বিভিন্ন ধরনের মুখোশ বিক্রির জন্য প্রদর্শনী করা হয়েছে, ক্রেতা আসছে সঙ্গে করে কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন।

শেষ মুহূর্তের রঙের কাজ চলছে

চারুকলা অনুষদ সূত্রে জানা যায়, নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের কারণে চলাচলের পথ সরু থাকায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে এবছর মঙ্গল শোভাযাত্রা টিএসসি সড়কদ্বীপ থেকে বের করা হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রা স্মৃতি চিরন্তন হয়ে পুনরায় টিএসসিতে গিয়ে শেষ হবে। কোভিড-১৯ বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নির্মাণাধীন মেট্রোরেলের জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় জনসমাগম সীমিত রাখতে সকলের প্রতি অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

নববর্ষ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা:

এবারের বর্ষবরণ করতে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে।

মুখোশে তুলির আঁচড়

নববর্ষের আগের দিন ১৩ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধু নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেট ব্যবহার করতে পারবেন।

ক্যাম্পাসে নববর্ষের দিন সব ধরনের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে।মেট্রোরেলের কাজ চলার কারণে এবারের শোভাযাত্রা টিএসসি থেকে ঘুরে স্মৃতি চিরন্তন হয়ে আবার টিএসসি এসে শেষ হবে।

উল্লেখ্য, অন্য বছরগুলোতে চারুকলা আয়োজিত মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলা থেকে শুরু হয়ে টিএসসি, বাংলা একাডেমি, হাইকোর্ট, রমনা, শাহবাগ হয়ে আবার চারুকলায় এসে শেষ হতো।