রাবিতে গবেষণার মাছ চুরি!
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) একটি গবেষণা পুকুর থেকে মাছ চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (০৯ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে কৃষি অনুষদ ভবন সংলগ্ন মৎস গবেষণা পুকুরে এই চুরির ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী গবেষকের নাম মাহাবুবুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক।
জানতে চাইলে অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান বলেন, আজ (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৯টায় আমার শিক্ষার্থীরা গবেষণা পুকুরে খাবার দিতে গেলে দেখে তিনটা খাঁচার মাছ চুরি হয়ে গেছে। পরে শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানালে আমি রাতে দায়িত্বে থাকা গার্ডের সঙ্গে কথা বলি। কথা বলে জানতে পারি, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার সময় মোটরসাইকেল নিয়ে ১৫ থেকে ২০ জন এসে গার্ডকে ভীতি প্রদর্শন করে ১৬টি খাঁচার মধ্যে তিনটি খাঁচার মাছ নিয়ে চলে যায়।
তিনি বলেন, মাছ চুরি হওয়াতে আমার তেমন আর্থিক ক্ষতি হয়নি, তবে আমার গবেষণা পিছিয়ে গেল। ফের চুরি হওয়ার আশঙ্কায় সামনে যে আবার নতুন মাছ নিয়ে গবেষণা শুরু করব এটা নিয়েও শঙ্কিত আমি। আশা করি, যে বা যারাই এই ঘৃণিত কাজটা করুক না কেন, এরপর যেন তারা এমন কাজ করার সুযোগ না পায়, আর এমন কাজের পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
গবেষণার কাজে নিয়জিত শিক্ষার্থী তহমিনা ইসলাম শিখা বলেন, আমরা মূলত সিলভার কার্প মাছ নিয়ে গবেষণা করছি। প্রতিটা খাঁচায় ৮টি করে মাছ আছে। অর্গানিক খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে মাছগুলোর সুন্দর রঙ আনার পাশাপাশি, আকার বৃদ্ধি নিয়ে আমাদের গবেষণা চালাচ্ছিলাম। কিন্তু মাছগুলো চুরি হয়ে যাওয়ায় আমাদের গবেষণা এক ধাপ পিছিয়ে গেলো।
শিখা বলেন, এই গবেষণা পুকুরগুলো দিনের বেলায় নিরাপদ না। আর রাতের বেলা তো আরও নিরাপদ না। গার্ড থাকা সত্বেও মাছ চুরি হয়ে যাচ্ছে। আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এ বিষয়ে আরও পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
মাছগুলোর দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা সেই বিভাগের পিয়ন দেলোয়ার হোসাইন বলেন, এই পুকুরগুলোতে প্রায়ই মাছ চুরির ঘটনা ঘটে। গত দুই মাস আগেও এমন ঘটনা ঘটেছিলো। এখানে মাছ চুরির পাশাপাশি মাছের খাঁচা চুরির মতো ঘটনাও ঘটেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এ বিষয়ে কথা বলার মানসিকতা আমার নেই। কারা এর সঙ্গে জড়িত এটা খুঁজে দেখো। এগুলো লজ্জার ছাড়া আর কিছুই না। এখানে প্রশাসন কি করবে! সবকিছু যদি প্রশাসন করে, তাহলে এখানে বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষ বসবাস করে কেন!
নিরাপত্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, নিরাপত্তা আছে তো। গার্ড দেওয়া আছে, কিন্তু গার্ডকে কেউ যদি ভয় দেখায়। আমরা তো মিলিটারিও না পুলিশ না! এটা যারা করছে তারা সচেতন না হলে কিছুই করার নেই। এটা খুবই নোংরা জিনিস। আর সেখানে ১০ গার্ড দেওয়ার মতো তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা নেই। সেই গবেষকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এখন দেখি কি করা যায়।