মানসিক রোগের ডাক্তার থাকার কথা জানেনই না শিক্ষার্থীরা
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গত একবছরে যার সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে, যার ৩৯ শতাংশই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। এর পেছনে মানসিক চাপ ও হতাশাকে বেশি দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ থেকে পরিত্রাণে মানসিক কাউন্সিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের দরকার বলে মনে করেন তারা।
২০০৯ সাল থেকে শুরু করা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে আছেন একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। অথচ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানেনই না। অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীর সাথে এ বিষয়ে কথা বললে ১৪ জনই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ থাকার বিষয়ে কোন কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন কি না- এমন প্রশ্নে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সুপন সূত্রধর বলেন, 'সম্ভবত নেই।' তিনি আরও বলেন, মেডিকেল সেন্টারে কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আছে কি না সেটা আমার জানা নেই। যদি থেকে থাকে, অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে সেমিনার করে সচেতন করা।
কুবি মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. বেলায়েত হোসেন ভূঁইয়া বলেন, প্রত্যেক বিভাগ ও দফতরে শুরুতেই এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটা নতুন করে জানানোর কিছু নেই। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষকরা যদি শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপারে ধারণা দেয় তাহলে সেবাগ্রহীতার সংখ্যা আরও বাড়বে। প্রচারণা করার চেয়ে বড় জায়গা আর হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে শিক্ষার্থীরা কোনো মানসিক চিকিৎসা নিতে আসলে তারা সম্পূর্ণ চিকিৎসাই নিতে পারবে। অন্য কোনো ডাক্তারের দ্বারস্থ হতে হবে না।
এদিকে কুবির মেডিকেল সেন্টারে নেই পর্যাপ্ত লোকবল, রুম, যন্ত্রপাতি, ঔষধ। একটি রুমকে কাঁচের দেয়াল দিয়ে ভাগ করে বানানো হয়েছে ডাক্তার বসার রুম, ঔষধ রাখার রুম ও রোগী দেখার রুম। দুইটি অ্যাম্বুলেন্সের একটি নষ্ট, আরেকটিতে নেই নির্দিষ্ট চালক।
এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান খান বলেন, নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা যতটুকু সম্ভব শিক্ষার্থীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের চাহিদা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ইউজিসি থেকে মেডিকেল সেন্টারের জন্য ৫টি পদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল আগে। সামনে আমরা নতুন পদ চাইব ইউজিসির কাছে।
এছাড়া বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা খুবই কম। তবুও আমরা জায়গা বাড়ানোর চেষ্টা করবো। সামনের প্লানিং কমিটির মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।