নির্বাচন না হওয়ার পরও ব্যয় বেড়েছে ডাকসুর

  • ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

২৮ বছর পর ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সবশেষ নির্বাচন হয়। কয়েক বছর গড়ালেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কোন লক্ষণ নেই। এদিকে পরবর্তী নির্বাচন কবে হবে, তা সুস্পষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফি নেওয়া হচ্ছে। ছাত্র সংসদটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। জানা যায়, ডাকসু ও হল সংসদের ফি বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ১২০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়টির অধ্যাদেশ অনুযায়ী, ডাকসু কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন শিক্ষার্থী-প্রতিনিধি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেটের সদস্য হিসেবে নিয়োজিত হয়ে থাকেন। এ ফোরামে নিয়োজিতরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরার সুযোগ পান। যেখানে সর্বশেষ ডাকসুর ভিপি নুরুল হক, জিএস গোলাম রাব্বানী ও এজিএস সাদ্দাম হোসেনসহ পাঁচজন সিনেটে প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে এই প্রতিনিধিত্বও এখন বন্ধ হওয়ার পথে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ডাকসুর কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। ভবনের কক্ষগুলো পরিষ্কার এবং সংগ্রহশালা ও কার্যালয় খোলা রাখছেন, এভাবেই সময় পার করছেন।

বিজ্ঞাপন

গত ১৬ জুন বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। গত অর্থবছরে ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল এ খাতটি ৷ চলতি অর্থবছরে বেতন-ভাতাবাবদ খরচ ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা বেড়েছে।

এদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ ব্যয় অপচয় হিসেবে দেখছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ডাকসু নির্বাচন থাকলে প্রতিটি ছাত্র সংগঠনই এক প্রকারের ভয়ে থাকে। কারণ কেউ কারোই অপ্রিয় হতে চায় না।

ওই শিক্ষার্থী আরও জানান, ডাকসু না হওয়ায় হলগুলোতে গেস্টরুমে নির্যাতন, সিট দখল এগুলো যেন নির্বাচন না হওয়ার সেই পূর্বের চিত্রে ফিরে এসেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন বলেন, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্ব। নির্বাচন না হওয়ায় ডাকসু ও হল সংসদের কার্যক্রম সেভাবে নেই। তবে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাকে কেন্দ্র করেই রাজনীতি করে।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক এই খাতে ব্যয়কে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থের অপচয়’ বলে গণমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, অচল ডাকসুর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় এভাবে অর্থ খরচ করা সংগতিপূর্ণ কাজ নয়।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ডাকসুর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগে থেকেই নিয়োগপ্রাপ্ত। তাই তাদের বেতন-ভাতা দিতেই হয়।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২৮ বছর অপেক্ষার সকল সমীকরণের সমাধান শেষে ২০১৯ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকসু ও ১৮টি হল সংসদ সচল হয়। সেই নির্বাচনে ভিপি পদে নুরুল হক, জিএস পদে গোলাম রাব্বানী ও এজিএস পদে সাদ্দাম হোসেন নির্বাচিত হন। ডাকসুর সেই কমিটি ও হল সংসদের মেয়াদ ২০২০ সালে শেষ হয়।