রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি, জড়িতদের ফল বাতিল

  • রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শহীদ সৈয়দ নজুরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন

শহীদ সৈয়দ নজুরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সির সঙ্গে জড়িত সকলের ফলাফল বাতিল করা হয়েছে।

বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায় এক জরুরি সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত কমিটি ।

বিজ্ঞাপন

সভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ সেশনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ায় এসকল শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল বলে গণ্য হয়েছে। ফলে প্রক্সির সঙ্গে জড়িত সকলের ফল বাতিল করা হয়েছে।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, 'এ' ইউনিটের গ্রুপ-২ এ প্রথম হয়েছেন ৩৯৫৩৪ রোলের পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদ। যার হয়ে পরীক্ষা দিতে এসে ধরা পরে একবছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন প্রক্সিদাতা বায়জিদ খান। এছাড়া গ্রুপ-৩ এ মেধাতালিকায় ৬ হাজার ৯২১ তম হয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬২৮২৮ রোলের পরীক্ষার্থী মোছা. ইশরাত জাহান। যার হয়ে পরীক্ষা দিতে এসে ধরা পরে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন প্রক্সিদাতা জান্নাতুল মেহজাবিন। এছাড়া বাকি দুজন প্রক্সি পরীক্ষার্থীকে ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলে এক্সপেলড দেখানো হয়।

বিজ্ঞাপন

পরে বিষয়টি অবগত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি সংক্রান্ত কমিটি জরুরি সভায় বসেন । সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ও এ ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত হয়ে জরুরি সভায় বসি। সেখানে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের ফলাফল বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।

জালিয়াতি প্রমাণের পরেও ফল প্রকাশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় যেসকল ভর্তিচ্ছুর হয়ে প্রক্সি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল, তাদের তথ্য আমাদের দেওয়া হয়নি। সেজন্য এসকল শিক্ষার্থীর নাম থেকে গেছে এবং স্বাভাবিক নিয়মে ফল প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু আমরা আজ এ সম্পর্কে অবিহিত হয়ে প্রক্সির সঙ্গে জড়িত সকল শিক্ষার্থীর ফলাফল বাতিল করা ঘোষণা করেছি।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, প্রক্সিকাণ্ডে জড়িত সকলের ফলাফল বাতিল করা হয়েছে। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ডিন ও অন্যান্যদের সাথে আলোচনা হয়েছে। তারা ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করা সকলের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে, গত ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৪ প্রক্সিদাতাসহ একজন প্রক্সি পরীক্ষার্থী ধরা পরে। এঘটনায় ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়োজিত ভ্রাম্যমান আদালতের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এখলাছুর রহমান ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবনে রোল ১৭২২৮-এর পরীক্ষার্থী লিমনের হয়ে, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মেহজাবিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনে রোল ৬২৮২৮-এর পরীক্ষার্থী মোছা. ইশরাত জাহান হয়ে, রাবির ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী বায়জিদ খান সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনে রোল ৩৯৫৩৪-এর পরীক্ষার্থী তানভির আহমেদ হয়ে এবং খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রভাষক ডা. সমীর রায় শেখ রাসেল মডেল স্কুলে রোল ৮৪৬৪৮-এর পরীক্ষার্থী এস এম রাহাত আমীন রিয়াদের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

এ ঘটনায় জান্নাতুল মেহজাবিনকে দুইবছর, এখলাছুর রহমান, বায়জিদ খান ও ডা. সমের রায়কে ১ বছর এবং ডা. সমেরকে নিজের পরীক্ষার আসনে বসানো শিক্ষার্থী এস এম রাহাত আমীনকে ক্যাম্পাসে পাওয়ার পর আটক করে তাকে ১ বছরের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমান আদালত।