কুবিতে তিন ক্লাসেই সেমিস্টার শেষ!

  • কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

একটি সেমিস্টারের মাত্র তিনটি অনলাইন ক্লাস করিয়েই ফাইনাল পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) আইন অনুষদের প্রভাষক সাদিয়া তাবাসসুমের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এ নিয়ে অভিযোগ করায় হুমকি দেন বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দেয়া তথ্যমতে, বিভাগটিতে ১০ম ব্যাচের স্নাতোকোত্তরের ‘ইন্টারন্যাশানাল অরগানাইজেশান’ নামের একটি কোর্সে মোট চারটি অনলাইন ক্লাস নিয়েছিলেন। যার একটি ছিল পরিচয়পর্ব ও বাকি তিনটি ছিল কোর্স সম্পর্কিত ক্লাস। ওই তিনটি ক্লাসের সর্বোচ্চ সময়কাল ছিল ৪০ মিনিট। এছাড়া এর নিচের ব্যাচগুলোতেও অর্ধেকেরও কম সংখ্যক ক্লাস নেয়া, ক্লাসে হুমকি দেয়াসহ নানা অভিযোগ জানায় শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, এই ধরনের অভিযোগের কারণে এই বিভাগের ১১তম ব্যাচ সাদিয়া তাবাসসুমের বদলে অন্য শিক্ষককে কোর্স দেয়ার আবেদন করলে ওই শিক্ষককে পরিবর্তন করা হয়। তবে অন্যান্য কিছু ব্যাচও একই সমস্যার কারণে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে পরিবর্তন করার কথা বললে তা আর আমলে নেননি বলে জানান শিক্ষার্থীরা। এই বিষয়ে বিভাগের দায়িত্বশীলরা চিন্তিত নন বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ওই শিক্ষক নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় এখনও মানিয়ে উঠতে পারছেন না বলে মনে করেন কিছু শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইন বিভাগের ১০ম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, ম্যাম আমাদের 'ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশান' কোর্সের ক্লাস পেয়েছিলেন। এই কোর্সটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এই কোর্স থেকে অনেক কিছু শেখার ছিলো যা আমাদের ভবিষ্যতে কাজে লাগতো। ম্যাম পর্যাপ্ত ক্লাস না নেয়াতে আমরা কিছুই বুঝতে পারি নাই। আমরা চেয়ারম্যান স্যারের কাছে বলেছিলাম ব্যাপারটা। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।

বিজ্ঞাপন

এবিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সাদিয়া তাবাসসুম বলেন, আসলে ওই সময় আমি প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতির কারণে মানসিকভাবে বেশ ট্রমায় ছিলাম। তাই কিছুদিন ক্লাস নেয়া বা ফোন ধরে কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলাম না।

অন্য কোনো শিক্ষককে দিয়ে ওই কোর্সটি নেয়া হয়নি কেন- এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওই সময় করোনার কারণে কিছু অনলাইন ক্লাস হচ্ছিল। আর বাকি শিক্ষকদেরও ওয়ার্কলোড অনেক বেশি ছিল। আমার কোর্সটা কেউ নিবে এমন পাওয়া যায়নি।

শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এই শিক্ষার্থীদের সাথে আমার বয়সের ব্যবধান বেশি না। আর তাদেরকে আমি হুমকি কেন দেব। শিক্ষকতা করতে এসেছি, হুমকি দিতে আসিনি। তারা হয়তো কোনো কথা বুঝতে ভুল করেছে।

এ বিষয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি গত ফেব্রুয়ারি-মার্চের ঘটনা। তখন একাডেমিক মিটিংয়ে বসে বিষয়টি মিটমাট হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ম্যামের সাথে কথা বলেছি। উনি বলেছেন এমনটি আর হবে না। শিক্ষার্থীরাও সেটা মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এখন কেন আবার এটা নিয়ে কথা হচ্ছে বুঝতেছি না।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আইন ও নীতিমালা রয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষকের তা মেনে চলা উচিত। আমরা বিষয়টা খতিয়ে দেখবো। যদি দেখি কোন শিক্ষক এর ব্যত্যয় ঘটিয়েছে এবং এর কারণে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে তাহলে যথাযোগ্য ব্যাবস্থা নিবো।