নিয়মের বেড়াজালে অনিশ্চিত শেকৃবির দশ শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় জীবন

  • শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আট শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। উপস্থিতি জনিত সমস্যার কারণে পুনঃভর্তির ক্ষেত্রে এই জটিলতার সৃষ্টি হয় বলে উল্লেখ করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মূলত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের কৃষি অনুষদের ৬ জন শিক্ষার্থী, এগ্রি বিজনেস ও এগ্রি ইকোনমিকস অনুষদের ৩ জন শিক্ষার্থী এবং এএসভিএম অনুষদের ১ শিক্ষার্থী নিয়মিত ব্যাচের সাথে ক্লাস করতে অক্ষমতার কারণে ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সঙ্গে ভর্তি হওয়ার আবেদন করে।এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তিত নিয়মের উল্লেখ করে বিভিন্ন মহল থেকে তাদের ভর্তি নেওয়া হবে না বলে জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

নিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম বার্তা২৪.কম-কে বলেন,'লেভেল-১,সেমিস্টার-১ এ শিক্ষার্থীদের পুনঃভর্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৯তম একাডেমিক কাউন্সিলে একটা কমিটি গঠন করা হয়। ৭১তম একাডেমিক কাউন্সিলে এই বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। যেসকল শিক্ষার্থী ৭০ শতাংশের কম উপস্থিত থাকবে তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না এবং তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে।তবে এই শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ২০ তারিখে মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে।

এবিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা যায় বিগত বছরসহ আগের বছর গুলোতেও প্রথমবর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে কিছু জটিল পরিস্থিতির তৈরি হয়ে আসছে।তবে প্রথম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে উপস্থিতি জনিত জটিলতার কারণে ছাত্রত্ব বাতিলের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।

বিজ্ঞাপন

এবছরে আবেদন করা শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হবে কিনা জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন,আসলে এই নিয়মের বিষয়ে তখনকার ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা অনেকেই অবগত ছিল না। নিয়ম করে সবাইকে সেটা জানানোর ব্যবস্থা তো করতে হবে। তবে এবছর ওরিয়েন্টেশনে সবাইকে অবগত করা হয়েছে।আমি মনে করি এবছর অন্তত সুযোগ দিয়ে আগামী বছর থেকে কঠোর নীতিতে যাওয়া উচিত।

কৃষি অনুষদে ভর্তির জন্য আবেদন করা শিক্ষার্থীদের বিষয়ে কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস বলেন, এরকম কিছু শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। তবে প্রথমবর্ষে ভর্তি হওয়ার পরে ক্লাস না করে অন্যত্র চলে যাওয়া এবং পরবর্তীতে আবার নতুন ব্যাচের সাথে ভর্তি হতে চাওয়ার এই প্রবণতা নতুন নয়।এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু আইন রয়েছে। অবশ্যই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে কোর্সে অন্তর্ভুক্ত সব ডিপার্টমেন্ট মিলে ৭০ শতাংশ ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে এবং ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এই শর্তগুলো যেসকল শিক্ষার্থী মেনেছে তাদের ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো জটিলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না। এছাড়া বাকিদের বিষয়ে কিছুই বলা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমরা আইনের বাইরে গিয়ে কারো জন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। তবে ভর্তি হওয়ার জন্য তাদের করা আবেদন পত্র আমরা জমা নিয়েছি। এখন সিদ্ধান্ত একাডেমিক কাউন্সিলের পরবর্তী মিটিং অনুযায়ী নেওয়া হবে। আমি ডিন হিসেবে তাদেরকে আশ্বস্ত করতে পারছি না। আসলে সিদ্ধান্ত পক্ষে-বিপক্ষে যেকোনো ভাবেই হতে পারে, তবে এর আগের সিদ্ধান্ত গুলো বিপক্ষে ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি অনুষদে ভর্তিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, অনেকটা জটিল অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমাদেরকে সামান্য আশ্বস্ত করার মতো কেউ নেই। আমি অসুস্থ ছিলাম। আমার অসুস্থতার রিপোর্ট রয়েছে এবং সেগুলো আমি জমা দিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার অসুস্থতার প্রমাণ থাকার পরেও আমার কথা শোনার কারো সময় নেই বলেই মনে হয়। সিটি পরীক্ষা শুরু হবে আমরা এনরোলমেন্ট করতে পারছি না। দীর্ঘ শিক্ষা জীবন এভাবে নিয়মের বেড়াজালে আটকে যাবে তা মেনে নেওয়া সম্ভব না।আর অসুস্থতা তো আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না।আশাকরি প্রসাশন আমাদের বিষয়ে মানবিক সিদ্ধান্ত নিবে।