জাবির নতুন উপ-উপাচার্য মোস্তফা ফিরোজ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) পদটি শূন্য থাকার ১০ মাস পর এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজকে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক।
বুধবার (১২ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) পদে নিয়োগ বিষয়ক এ প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩-এর ১৩(১) ধারা অনুসারে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এ প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, যোগদানের তারিখ হতে আগামী ৪ বছরের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উপ-উপাচার্য পদে তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতাদি পাবেন এবং বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। তবে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যে কোনও সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৪ আগস্ট উপ-উপাচার্য পদে নিয়োগ পান পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। এরই মধ্যে গত বছরের ১ মার্চ উপ-উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। কিন্তু উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় গত বছরের ১৪ আগস্ট তার উপ-উপাচার্য পদের মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকে ১০ মাস পর্যন্ত শূন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি। ১০ মাস পর উপ-উপাচার্যের শূন্য পদে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজকে আজ নিয়োগ দেওয়া হয়।
তবে অধ্যাপক মোস্তফা ফিরোজের বিরুদ্ধে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে ভর্তি পরীক্ষা কমিটি গঠনে পক্ষপাতদুষ্টতা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে। এ সময়ে তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ শিক্ষক অধ্যাপক মফিজুল কবির টানা তিনবার ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান বলে জানা যায়। ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষে স্নাতক শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় মেধা ও অপেক্ষমাণ তালিকা প্রণয়নে জালিয়াতির পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রশাসন ওই বিভাগে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি স্থগিত করেন। এ ছাড়া একই সময়ে একই শিক্ষাবর্ষে তিনবার ২য়, ৩য় ও ৪র্থ স্নাতক (সম্মান) পর্বে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ নানা অভিযোগের বিভিন্ন সময় সমালোচিত হয়েছেন।
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ হতে ১৯৮৮ সালে স্নাতক ও ১৯৮৯ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯২ সালে তিনি প্রভাষক পদে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন শেষে ২০০৫ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। বন্যপ্রাণী বাস্তুশাস্ত্র, ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ নিয়ে ১৯৯০ সাল থেকে কাজ করে আসছেন এবং তিনিই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন।
এছাড়াও কর্মজীবনে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও।