ডেঙ্গু আতঙ্কে জবি শিক্ষার্থীরা



সাগর হোসেন, জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিন শনাক্তের সংখ্যার পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এ অবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস এবং নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে পানি জমে রয়েছে বিভিন্ন স্থানে। যা থেকে সৃষ্টি হচ্ছে মশার লার্ভা। অপরিচ্ছন্ন এসব ড্রেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করলেও সেগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তেমন কোন উদ্যোগ নেয়নি এখনো।

শিক্ষার্থীদের দাবি প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতার কারণে অপরিচ্ছন্ন তাদের ক্যাম্পাস।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রধান ফটকে প্রবেশের ডান পাশের ড্রেন পরিপূর্ণ হয়ে আছে পলিথিন, কাগজ, কাপড়ের টুকরো আর প্লাস্টিক সামগ্রী দিয়ে। দ্বিতীয় ফটকের পাশে বিভিন্ন উচ্ছিষ্ট ও ময়লা-আবর্জনে স্তূপাকারে ফেলে রাখা হয়েছে এবং নতুন একাডেমিক ভবনের পাশ থেকে দ্বিতীয় ফটক ও ছাত্রী কমনরুমের পেছন পর্যন্ত ড্রেনের মধ্যে বোতল, প্লাস্টিক সামগ্রী, জুসের গ্লাস আর পলিথিন স্তূপাকারে পড়ে আছে। ছাত্রী কমনরুমের পেছনের দিকে ময়লা পানিযুক্ত ড্রেনের দুই পাশেই উচ্ছিষ্ট জিনিসপত্র পড়ে আছে ৷ যেটি দেখলে ময়লা ফেলার স্থান মনে হয়। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ চত্বরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান-অর্থনীতি বিভাগের বিল্ডিংয়ের সামনে থাকা ড্রেনে পড়ে আছে ময়লার বিন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যান্টিনের বিপরীত পাশে থাকা বেসিনের পানি যাওয়ার জন্য যে ড্রেন রয়েছে সেটি ভরাট হয়ে আছে ময়লা পানিতে। দীর্ঘদিন ধরে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ না থাকায় এখানেও ময়লা পানি জমে বুদবুদ তৈরি হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের পাশে ও পেছনে থাকা ড্রেনগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ। ড্রেনগুলোতে শ্যাওলার পাশাপাশি জন্মেছে আগাছা। বিজ্ঞান ভবনের পেছনে ও শিক্ষক ডরমিটরির পাশে থাকা ড্রেনগুলোতে ময়লা আর পানি একত্রে মিশে পানি কালো রঙ ধারণ করেছে। ভন ভন করে মশা উড়ছে সেই ড্রেনে ৷ গণিত বিভাগের সামনের ড্রেনও ময়লায় পরিপূর্ণ।

জানা যায়, ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামগ্রিক পরিবেশ উন্নয়ন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার জন্য পরিচ্ছন্নতা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেনগুলো প্রাথমিকভাবে পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিলেও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকেনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কমিটির আহবায়ক এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কাদের বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে ইতিমধ্যেই নতুন ভবনের ছাদ পরিষ্কার করা হয়েছে। ডরমিটরির সামনের ড্রেন পরিষ্কার করা হয়েছে। বাকি ড্রেনগুলোও পরিষ্কার করা হবে পর্যায়ক্রমে।

পরিচ্ছন্নতা কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (এস্টেট) মোহাম্মদ কামাল হোসেন সরকার বলেন, সিটি করপোরেশনের সহায়তায় ক্যাম্পাসে মশার লার্ভার ঔষধ দিচ্ছি এবং ধোঁয়া স্প্রে করছি। এছাড়াও ক্যাম্পাস পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিনের বেলায় ক্যাম্পাসে মশার কামড়ে বসা যায় না। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মশার উপদ্রবে ক্যাম্পাসের শান্ত চত্বর, গুচ্ছ ভাস্কর্য, বটতলা, কাঁঠাল তলা, মুজিব মঞ্চসহ সকল স্থানেই বসার আর কোন পরিবেশ থাকে না। তাই ডেঙ্গু আতঙ্কে সন্ধ্যার আগে সবাই ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর রহমান বলেন, আমরা ক্লাস শেষে বন্ধুরা মিলে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বসে গ্রুপ স্টাডি এবং আড্ডা দিয়ে থাকি। কিন্ত অপরিচ্ছন্নতার কারণে ক্যাম্পাসে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় তা ব্যাহত হচ্ছে। ডেঙ্গু আতঙ্কে যত দ্রুত সম্ভব সবাই ক্যাম্পাস ত্যাগ করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, কয়েকদিন আগেই দেখেছি ক্যাম্পাসে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান হয়েছে। অথচ ক্যাম্পাসে বেশিরভাগ অংশ এখনো ময়লা-আবর্জনার স্তুপ জমে আছে। ক্যাম্পাস পুরোপুরি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করে ঢালাওভাবে এমন প্রচার-প্রচারণা করে লাভ কি। প্রত্যেকটা ড্রেনে পানি জমে আছে যা থেকে এডিস মশা উৎপন্ন হবে এবং আমাদের ডেঙ্গু আক্রান্তের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করছি দ্রুততম সময়ে এ বিষয়ের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী বেলাল হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ এমন হতে পারেনা। ড্রেনগুলো ময়লায় আবদ্ধ। এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে। সে সময় ড্রেনগুলোতে মশার উপদ্রব সৃষ্টি হচ্ছে। ক্যাম্পাসে আবার ময়লার স্তূপও দেখা যায়। এগুলো পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব পরিচ্ছন্নতা কমিটির। প্রকৌশল দফতর থেকেও কয়েকটি ড্রেন পরিষ্কার রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

   

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীদের অবস্থান



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

অনির্দিষ্টকালের জন্য হল বন্ধের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান হলে অবস্থান করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এদিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে হলের প্রাধ্যক্ষরা জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে থাকতে কোন বাধা নেই।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জরুরি এক সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের আজ বিকেল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

হলে থাকার প্রসঙ্গে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জয় রায় বলেন, আমরা হল ছাড়ছি না। প্রাধ্যক্ষ স্যারও থাকার পক্ষে। তাছাড়া হলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখানে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। এক্ষেত্রে আমাদের দাবি, পরিবহন ব্যবস্থা যেন অবিলম্বে চালু করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফরহাদ কাউসার জানান, প্রশাসন থেকে হল ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, গতকাল হল বন্ধের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যদি হলে থাকতে চায়, মনে হয় না কোন সমস্যা হবে। আমি শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের সাথে কথা বলে এই বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিব।

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ জিয়া উদ্দিন বলেন, হল কেন্দ্রিক কোন ঝামেলা না হলে প্রশাসন হলের শিক্ষার্থীদের বের করে দিবে না। তাই শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে অবস্থান করতে পারবে।

;

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান কুবি শিক্ষার্থীদের



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা হল চালু রাখার ও ক্লাসে ফেরার দাবি জানান। এছাড়া এই মানববন্ধনের একাত্মতা পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ নাসির হোসাইন ও শেখ হাসিনা হলের হাউজ টিউটর আল-আমিন হোসেন।

বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর সংলগ্ন রাস্তায় এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম পড়াশোনা করার জন্য, তবে বিগত কয়েক মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। কখনো শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করছে, তো এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে, হল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছে। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রশ্ন শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা শিক্ষার্থীরা কিভাবে দোষী? আমরা কেন ভুক্তভোগী? এখানে অনেক শিক্ষার্থী অর্থাভাবে হলে থাকে টিউশন করিয়ে নিজের আর পরিবারের ভরণপোষণ সামলায়, তারা কোথায় যাবে?

আমরা যে পড়াশোনায় পিছিয়ে যাচ্ছি এর দায়ভার কে নিবে। আমি একটাই দাবি করতে চাই, আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা হোক, হলগুলো বন্ধ না করা হোক।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম আবর্তনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা সুলতানা বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সার্কাস চলছে। প্রথমে প্রশাসন সিদ্ধান্ত দিল ২রা মে পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, অনলাইনে ক্লাস চলবে। প্রশাসনের সিদ্ধান্তঃকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শিক্ষক সমিতি আবার এই মগজ গলা গরমে সিদ্ধান্ত দিল ২৮ এপ্রিল থেকে স্বশরীরে ক্লাসে ফিরবে, এর আগে তারা আবার ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন করেছিলো। এখন আবার প্রশাসন আমাদেরকে হল থেকে বের করে দিচ্ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে। এমনিতে বেশ কিছু বিভাগ করোনার কারণে পিছিয়ে আছে তার ওপর তাদের এ ধরণের সিদ্ধান্ত কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষক সমিতি আর উপাচার্যের দ্বন্দ্বে আমরা বলির পাঠা হয়ে আছি। এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান আশা করছি।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আনাস আহমেদ বলেন, 'আজকে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখানে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি নিজেদের কিছু ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য। আমাদের ক্লাস, পরীক্ষা চালু করতে হবে, হলগুলো খোলা রাখতে হবে। শিক্ষকদের ওপর বহিরাগতদের হামলার তদন্ত করে সঠিক বিচার করতে হবে দোষীদের। চলমান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করতে হবে, অন্যথায় আমরা আমাদের কর্যক্রম চালিয়ে যাব।'

শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে নাসির হোসাইন বলেন, ‘বর্তমানে চলমান সংকট সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে। শিক্ষার্থীদের সংকটের মুখেই এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমার মনে হয় না, এমন কিছু ঘটেছে। আর কাজী নজরুল হলে কোনরকম অবৈধ অস্ত্র বা টাকা ঢুকেনি। আমার হল খোলা থাকবে। আমার হলের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।'

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক আল-আমিন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমার হলে কোনপ্রকার অবৈধ অস্ত্র নেই। আমার হল স্বাভাবিক আছে। আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, তারা তাদের মতো করে হলে থাকতে পারবে। শিক্ষার্থীদের কেউ জোরপূর্বক হল থেকে বের করতে পারবে না।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, 'প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত একটি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন হল প্রভোস্টদের সাথে কথা বলেছি তারা বলেছে হল খুব সুন্দরভাবেই চলছে। আর একাডেমিক কার্যক্রম চলুক সেটাও আমি চাই। আমি মনে করি এই উপাচার্য একজন অদক্ষ প্রশাসক। তার পদত্যাগই সবকিছুর সমাধান।'

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই আছি। যখন কোন একটা ছুটি হয় তখন কিন্তু প্রতিবার একই নোটিশ যায় যে হল ছাড়তে হবে। অনেক সময় হল সিলগালা করে দেয়া হয় সেক্ষেত্রে সবাইকে সেটা মানতে হবে। যেহেতু এই নোটিশে সিলগালার কথা বলা নাই সেক্ষেত্রে কেউ যদি বিকাল চারটার মধ্যে হল ত্যাগ না করে তাহলে নিশ্চই হল প্রসাশন শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিবে।'

;

'ফিলিস্তিনের ২০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানসহ ঢাবিতে ভর্তি করা হবে'



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও আবাসিক সুবিধাসহ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। 

বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অধিদপ্তর হতে জানা যায়, মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত মি. ইউসুফ এস, ওয়াই, রামাদান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় ঢাবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি, বৃত্তি এবং আবাসিক সুবিধা প্রদানের বিষয় নিয়ে তারা দীর্ঘ আলোচনা করেন। এসময় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নে আগ্রহী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও বৃত্তি প্রদানের জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ১৯৭১ সালে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে জোড়ালো অবস্থান নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও আবাসিক সুবিধাসহ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। ঢাবিতে অধ্যয়নকালে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে বলে তিনি রাষ্ট্রদূতকে জানান।

উপাচার্য ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজা'র অধিবাসীদের উপর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বর্বর ও নির্মম হামলা, গণহত্যা ও অমানবিক অত্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সকল জনগণ ফিলিস্তিনি বন্ধুদের প্রতি সবসময় সহানুভূতিশীল বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং ঢাবিতে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ভর্তির বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, এ সময় আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসাদ মুর্তুজা এবং জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

;

ইবির দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞা না মেনে কন্ট্রোলরুমে প্রবেশ



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) গুচ্ছভুক্ত স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর 'এ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা ও আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে সমন্বয়কারীর অফিস ও ভর্তির কার্যাদি সম্পাদনের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট ভবনে প্রবেশ করেছেন দুই শিক্ষক। উক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা।

অভিযুক্ত দুই শিক্ষক হচ্ছেন আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ও ইবি শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এবং ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী। ঘটনার পরদিনই প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ঝিনাইদহ আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার ফজলুল হক এবং কুষ্টিয়া আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার আলতাফ হোসেন।

অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষার আগের রাতে আনুমানিক রাত সাড়ে ১১টার দিকে ড. পরেশ চন্দ্র বর্মন এ ইউনিটের সমন্বয়কারী অফিস ও ভর্তির সকল কার্যাদি সম্পাদনের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে এবং আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী বি ইউনিটের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট তালাবদ্ধ অনুষদ ভবনে প্রবেশ করেন। তবে উক্ত ভবন দুটিতে দুই ইউনিটের কন্ট্রোল রুম থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাত ৮টার পরে উক্ত ইউনিটে কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক/কর্মকর্তা ব্যতিরেকে অন্য কাউকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে আনসারদের বাধা উপেক্ষা করে জোর করেই উক্ত দুই শিক্ষক ওই দুটি ভবনে প্রবেশ করেন। এমতাবস্থায় জরুরী নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা তাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ঝুকিপূর্ণ বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন আনসার সদস্যরা।

পরীক্ষার আগের রাতে ভবনে ঢোকার নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানতেন না উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, অফিস কক্ষে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গিয়েছিলাম। সেসময় আনসারদের কাছে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রথমে শুনতে পাই। পরে কাগজপত্রগুলো নিয়ে চলে আসি। বিষয়টি প্রক্টরকে ফোন করে অবহিত করেছিলাম।

ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী বলেন, বিভাগে কিছু কাজ ছিল সেজন্য রাত ৮টার দিকে অফিসে গিয়েছিলাম। তাছাড়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের লিখিতভাবে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রবেশের সময় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরাও কিছুই বলেনি। পরে আমার রুমে একজন আনসার এসে বলে যে, প্রক্টর স্যার অনুষদ ভবনে কাউকে ঢুকতে নিষেধ করেছেন। এসময় প্রক্টরকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনি যেহেতু বিভাগের কাজ করছেন। আপনি থাকেন, কোনো সমস্যা নেই।’

কর্মকর্তা সেলিম বলেন, স্যার প্রবেশ করার সময় আনসার সদস্যরা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টা শেয়ার করেন। পরে নিষেধাজ্ঞা না মেনে প্রবেশ করলে আমারে জানান আনসাররা। তাৎক্ষণিক প্রক্টর স্যারকে কল দিয়ে বিষয়টা অবহিত করি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে স্যারদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকতেও পারে কিন্তু স্যার প্রবেশের পর আরও দুজন কেন প্রবেশ করলো বোধগম্য হয় না। জবাবদিহি আমাদের করা লাগবে বলে নিরাপত্তার স্বার্থে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টা খুব সেনসিটিভ। বাকিটা প্রশাসন দেখবেন।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ঘটনাটি ২৬ তারিখে অর্থাৎ ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতের। আমার কাছে গত ২৭ তারিখে নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম তার বরাবর দেয়া আনসার পিসিদের ২টি লিখিত আবেদনের উপর নোট উপস্থাপন করেন। পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যস্ত থাকায় আমি সেই নোটটি ২৯ তারিখে ফরওয়ার্ড করেছি।

ঐ দুই শিক্ষক তাকে সেসময় বিষয়টি অবহিত করেছেন, এবিষয়ে প্রক্টর বলেন, বিষয়টি সত্য নয়। তারা একেক সময়ে একেক কথা বলছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। আনসার সদস্যরা অভিযোগ দিয়েছেন। তবে আমার কাছে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগটি আসেনি। আগে অভিযোগ পত্রে কি আছে সে বিষয়টি বুঝতে হবে। তাহলে এ সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। এক্ষেত্রে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। যেহেতু পরীক্ষার আগের রাত গুরুত্বপূর্ণ সময়। সেক্ষেত্রে সবার উচিত সংযত ও যুক্তিসংগত আচরণ করা।

;