সমস্যায় জর্জরিত শেকৃবির কৃষি অনুষদ

  • শেকৃবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকা ক্লাস রুমগুলোর অবস্থা শোচনীয়। প্রায় ১০০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্লাস রুমগুলোর কোনোটিতেই নেই সাউন্ড সিস্টেম। এছাড়াও অনুষদটিতে নেই পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা, নেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসম্মত ওয়াশরুম। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১২ শতাধিক শিক্ষার্থীর কৃষি অনুষদে এত অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

তবে এসব সমস্যার সমাধান প্রশাসন পরিকল্পনায় রেখেছে এবং দ্রুতই তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় শেকৃবি প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীনতম অনুষদ ভবন কৃষি অনুষদ। ভবনটিতে শিক্ষার্থীদের তাত্ত্বিক ক্লাসের জন্য রয়েছে ৭টি শ্রেণিকক্ষ। এছাড়াও প্রতিটি বিভাগের ব্যবহারিক ক্লাস পরিচালনার জন্য রয়েছে ১৬ এর অধিক শ্রেণিকক্ষ। তবে ভবন পুরাতন হওয়ায় অনেক ক্লাসরুমের সিলিং থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। এর ভেতরেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়েই ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

তাত্ত্বিক ক্লাস পরিচালনার জন্য প্রায় ১০০ জন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্লাস সংখ্যা ৭টি। যার একটিতেও নেই কোনো সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা। এছাড়াও শ্রেণিকক্ষে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ বৈদ্যুতিক বাতি।

বিজ্ঞাপন

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকগণ কতটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড আবুল ফয়েজ মো জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের ক্লাসরুম গুলো একটু বড় এবং বেশি শিক্ষার্থী থাকে। এজন্য ক্লাস রুমগুলোতে সাউন্ড সিস্টেম থাকাটা খুব প্রয়োজন। আমরা যে বিষয়গুলো পাঠদান করে থাকি, অনেকসময়ই পেছনে থাকা শিক্ষার্থীরা মনোযোগ দিতে পারে না। আমাদের দীর্ঘসময় উচ্চস্বরে লেকচার দিতে হয়। এতে শিক্ষকদেরও অসুবিধা হয়। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ না করে দিতে পারলে পাঠদান ফলপ্রসূ করা কঠিন। ক্লাসরুম গুলোতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টেরেও অনেকসময় সমস্যা করে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অনুষদ ভবনে ৭টি শ্রেণিকক্ষের জন্য রয়েছে একটি খাবার পানির ব্যবস্থা। মাঝে মাঝে সেটিও নষ্ট থাকে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ছোট্ট একটি কমন রুম ও একটি ওয়াশরুম। অন্যদিকে ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে মাত্র দুইটি ওয়াশরুম। ১২ শতাধিক শিক্ষার্থীর জন্য ভবনে মাত্র একটি খাবার পানির ব্যবস্থা ও তিনটি ওয়াশরুম কিভাবে যথেষ্ট হয় সে নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল আহমেদ বলেন, সম্প্রতি খুব গরমের ভেতরে অস্বস্তিকর পরিবেশ এ আমাদের ক্লাস করতে হয়েছে। পানির জন্য একটা ফিল্টার আছে সেটিও মাঝে মাঝে নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়াও ওয়াশরুমের ব্যবস্থা খুবই শোচনীয়। প্রয়োজন হলে যেতে হয় তৃতীয় তলায় আবার তা যদি মোটামুটি স্বাস্থ্যসম্মত হত তাহলেও ভালো হত।

কৃষি অনুষদের কোনো তাত্ত্বিক শ্রেণিকক্ষে নেই শীততাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। ফলে অতিরিক্ত গরমের মাঝেও অস্বস্তিকর পরিবেশেই নিয়মিত ৯টা থেকে ৪টা অবধি ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের।

এ নিয়ে শেকৃবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড অলোক কুমার পাল বলেন, আমরা দ্রুতই ক্লাস রুমে সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে ৩ বা ৪টি ক্লাসে তা করা হবে। এছাড়াও আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য পানির ব্যবস্থা করার চিন্তাও রেখেছে। কৃষি অনুষদ এ ওয়াশরুম বৃদ্ধিরও চেষ্টা করছি। এজন্য কয়েকটি বিভাগের সাথে দ্রুতই বসবো আমরা।