জাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে সিনেট নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আসন্ন সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুটি প্যানেলে নির্বাচন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের প্যানেল বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ। অপরদিকে বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সাথে আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের আরেকটি দল ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’ যুক্ত হয়ে সম্মিলিতভাবে ‘শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। তবে, বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বেলা আড়াইটায় বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আলমগীর কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপকদের সাথে একটি সভার আয়োজন করেছেন। সভা আহ্বানের একটি স্ক্রিনশট প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। যেখানে সেই সভায় উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ নূরুল আলম উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।
বেলা আড়াইটায় প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত সে সভায় উপাচার্য উপস্থিত ছিলেন বলে একাধিক সহযোগী অধ্যাপক প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি নির্দিষ্ট দলের সভায় উপাচার্যের উপস্থিত থাকাকে ভালো চোখে দেখছেন না অন্যরা। তাদের অভিযোগ, এমন সভায় সহযোগী অধ্যাপক কিংবা জুনিয়র শিক্ষকদের পরোক্ষভাবে বিভিন্ন ‘হুমকি’ কিংবা পদের ‘লোভ’ দেখানো হয়ে থাকে৷ জুনিয়র শিক্ষকরা উপাচার্যের এমন আহ্বানকে না করতে পারেন না।
বিরোধী প্যানেলের অভিযোগ, নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে একটি নির্দিষ্ট ব্যানারের অনুষ্ঠিত সভায় অংশ নিয়ে উপাচার্য নিজের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক মোঃ আলমগীর কবির বলেন, আমি সিনেট সদস্য থাকা অবস্থায় অনেক উপাচার্যকে এর চাইতেও আরো বেশি ইনভলব হতে দেখেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে অতীতে অনেক উপাচার্যের তুলনায় বর্তমান উপাচার্য অনেক নীতি-নৈতিকতার মধ্যে আছেন। ফলে যেটুকু না করলেই নয়, শুধু শুভেচ্ছা বিনিময় ও স্বাগত জানাচ্ছেন, আর কিছু নয়।
এ বিষয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোঃ শামসুল আলম বলেন, আমাদের যে নির্বাচন বিধি সেখানে এরকমভাবে সরাসরি কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু আমীরুল ইসলাম খান স্যার যখন উপাচার্য ছিলেন তখন এই অবস্থায় কখনোই কাউকে ডেকে পাঠাতেন না। উপাচার্য তার নৈতিক অবস্থান থেকে এটা করতে পারেন না। এটা আসলে অগ্রহণযোগ্য। এবং তিনি তো তার বিরোধী দলের কোনো সহযোগী অধ্যাপকদের সাথে বসেবেন না। আর তিনি যেহেতু সিনেট থেকে নির্বাচিত তাই তিনি এটা না করলেও পারতেন।
আওয়ামীপন্থি শিক্ষক ও শিক্ষক ঐক্য পরিষদ থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া অধ্যাপক মোতাহার হোসেন বলেন, এরকম সভার আয়োজন বা অংশ নেয়ায় নির্বাচন বিধিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে নীতি-নৈতিকতার একটা ব্যাপার আছে যে কোনোটা করলে শোভন আর কোনোটা অশোভন। কিন্তু এখানে তিনি অংশগ্রহণ না করলে ভালো হতো। আর যদি করে থাকে তাহলে কিছু বলার নেই।