ঢাবি শোক দিবস: কী ঘটেছিল সেদিন?



কানজুল কারাম কৌষিক, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বেশিরভাগই নানা গৌরবের ভূমিকা এবং উপলক্ষে পূর্ণ। কিন্তু সম্পূর্ণ অন্যরকম একটি দিন হয়ে প্রতিবছর আমাদের সামনে হাজির হয় ১৫ অক্টোবর। দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গভীর শোকের ও দুঃখের। ১৯৮৫ সালের এই দিনে কালরাতে জগন্নাথ হলের ছাদ ধসে ২৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থী এবং ১৪ জন অতিথি ও কর্মচারীর মর্মান্তিক প্রাণহানি হয়। বিভিন্নভাবে আহত হন আরও তিন শতাধিক ছাত্র, কর্মচারী, অতিথি।

এই দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবসটি পালন করা হয়। প্রতি বছর দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আজও পালিত হচ্ছে দিবসটি। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হবে।

কী ঘটেছিল সেদিন?

১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর। দিনটি ছিল মঙ্গলবার। সেদিন জগন্নাথ হলের টিভি কক্ষে ছাত্ররা জমায়েত হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) প্রচারিত ধারাবাহিক নাটক 'শুকতারা' উপভোগ করার জন্য। সেসময় আজকের দিনের মতো এতো টিভি চ্যানেল ছিল না। এই বিটিভি ছিলো চিত্তবিনোদনের প্রধান অবলম্বন। টিভি কক্ষটি ছিল একটি পুরনো ভবন। পুরনো এই ভবনটিতে সংস্কার কাজ চলমান ছিল। হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। নাটক চলাকালীন সে অবস্থায়ই হঠাৎ বিকট শব্দে মিলনায়তনের ছাদ ধসে পড়ল।

পুরো মিলনায়তন রক্তে রঞ্জিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে এসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একসাথে প্রাণহানির ঘটনা পৃথিবীতে বিরল। বলাবহুল্য এসব মেধাবী তরুণদের নিয়ে অনেক আশা-ভরসা ছিল বাবা-মা শিক্ষক-হিতৈষীদের। নিমিষেই সব আশা-ভরসা মিলিয়ে গেল সেই অভিশপ্ত রাতে।

যে ভবনটির ছাদ ধসে পড়েছিল, ১৯৮৫ সাল অবধি সেটিকে বলা হতো ‘পরিষদ ভবন এসেম্বলি হল’। বেশ পুরনো এই ভবনের মিলনায়তনটি পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশের পরিষদ বা সংসদ ভবন ছিল, তাই এটি এসেম্বলি হল হিসেবে সমধিক পরিচিত ছিল। পরবর্তী নতুন পরিষদ ভবন তৈরি হলে ওই ভবনটি ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবাসিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভবনটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করে। এরপর বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্যের নামে এ এসেম্বলি হলের নতুন নাম হয় ‘অনুদ্বৈপায়ন ভবন’।

ব্রিটিশ শাসনামলে চুন, সুরকি, লোহার রডের বিম দিয়ে নির্মিত এ ভবনটি ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং ব্যবহারের অযোগ্য। অথচ এই ভবনেই রাখা ছিল হলের একমাত্র রঙিন টিভিটি। ঘটনার দিন সংস্কার কাজ চলমান ছিল ভবনটির ছাদে। মেরামতের বহু সরঞ্জাম ছিল সেদিন ছাদে এবং একই সাথে ছিল বৃষ্টি। আর সেসময়ই ছাদটি রাতের বেলায় ধসে পড়লো। টিভি কক্ষে সেদিন ছাত্রদের ছিল ভিড়। কারণ রাত আটটার বাংলা বুলেটিনের পর যে নাটক প্রচারিত হয়েছিল তাতে অভিনয় করেছিলেন হলের ছাত্রদের পরিচিত মুখ মনন অধিকারী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষক নিরঞ্জন অধিকারীর ছোট ভাই এবং সংস্কৃত বিভাগেরই ছাত্র। ‘শুকতারা' নাটকটির রচয়িতা ছিলেন মমতাজ বেগম। তিনি উদয়ন উচ্চ বিদালয়ের তৎকালীন অধ্যক্ষ। রাত ৯ টার একটু আগে ভবনটির ছাদ ভেঙে পড়ে ছাত্রদের মাথার ওপর। সৃষ্টি হয় ভয়াবহ পরিস্থিতি।

সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছিল সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে। সবাই ছুটে গিয়েছিল জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে। কালবিলম্ব না করে সাধ্য অনুযায়ী পরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সর্বস্তরের মানুষ শতাধিক আহতদের প্রাণ বাঁচাতে।

যেমন জাতীয় দুর্যোগে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে, গণঅভ্যুত্থানে, তেমনই কোনোকিছুর অপেক্ষা না করে এমনকি সাধারণ রিকশাওয়ালারাও আহতদের রিকশায় তুলে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন, আহতদের জন্য রক্ত দিয়েছেন। রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হলের ছাত্রীরাও আহতদের জন্য রক্ত দিয়েছেন নির্দ্বিধায়। সেদিন সর্বস্তরের মানুষের যে সংহতি, সম্প্রীতি, সহমর্মিতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টা লক্ষ করা গেছে বলে জানান প্রত্যক্ষ দর্শীগণ। সেদিনের সেই দুর্ঘটনার পর আমাদের জাতীয় চেতনার সৃষ্টি হয়েছিল। জাতি যে সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে সেকথা আরেকবার প্রমাণিত হয়েছিল। সেদিন ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক, শিল্পী, কবি, সাংস্কৃতিক কর্মী, পুলিশ, বিডিআর, সেনাবাহিনীর সদস্য, ডাক্তার, নার্স- সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে আহতদের সেবা করতে চলে এসেছিলেন।

সেদিনের ট্রাজেডিতে আহত হয়েছিলেন জগন্নাথ হলের তৎকালীন ছাত্র, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার। তিনি সেদিনের স্মৃতিচারণায় লিখেছেন, নাটক শুরুর প্রাক্কালে ছাদ থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল গায়ে পড়ছিল। ভাবছিলাম নাটক না দেখে বরং বেড়িয়ে যাই। আমার একজন রুমমেটকে বেরিয়েও যেতে দেখলাম। একই সাথে রঞ্জিতদাকে ঢুকতে দেখে যথাস্থানে বসে পড়লাম। তখনও বুঝিনি এটাই রঞ্জিতদার সঙ্গে আমার শেষ দেখা। যাহোক তন্ময় হয়ে নাটক দেখছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ। তাকিয়ে দেখলাম পুরো ছাদটাই যেন ধসে পড়ছে। পরবর্তীতে কতক্ষণ সংজ্ঞাহীন ছিলাম মনে নেই, কিছুটা জ্ঞান ফিরলে মনে হচ্ছিল যেন বেশিক্ষণ বেঁচে থাকতে পারব না। কারণ তখন আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। বাবা-মায়ের মুখ আর প্রিয়জনদের কথা মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল চারদিকে শুধু বাঁচাও বলে হৈ-চৈ চিৎকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে সে রাতটি অক্টোবরের ট্রাজেডি হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে আজীবন। ঘটনাস্থলে ‘অক্টোবর স্মৃতি ভবন’ নির্মাণ করায় সেদিনের স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে ভবনটি।

   

ইবিতে ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষায় উপস্থিতি ৯৩ শতাংশ



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সমন্বিত গুচ্ছভুক্ত ২৪টি বিজ্ঞান ও সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ সম্মান প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটের (মানবিক) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন ৬ হাজার ৭৮১ জন পরীক্ষার্থী। যা মোট আবেদনকারীর ৯৩.৫৮ শতাংশ।

শুক্রবার (৩ মে) পরীক্ষা শেষে ইউনিট সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। দুপুর ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত (এক ঘণ্টা) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি একাডেমিক ভবনে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এবার ইবি কেন্দ্রে পছন্দক্রম দিয়েছিলেন ৭ হাজার ২৪৬ জন পরীক্ষার্থী। যার মধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেন ৬ হাজার ৭৮১ জন।

পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কেন্দ্র পরিদর্শন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও সমস্যা মনে হয়নি। শিক্ষকরা সবাই আন্তরিক ছিলেন। উৎসবমুখর পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উল্লেখ্য, পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতায় নিয়োজিত ছিল বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) ও রোভার স্কাউটস গ্রুপের সদস্যরা। নিরাপত্তার স্বার্থে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও নিয়োজিত ছিলেন। যেকোনো ধরনের অপরাধ দমনে মনিটরিংয়ে ছিলেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এবং অসুস্থ পরীক্ষার্থীদের জন্য মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা ছিল।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভিন্ন সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনের হেল্প ডেস্ক ও অভিভাবক কর্নার ছিল। যেখান থেকে পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা সংক্রান্ত সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছেন।

;

ভর্তিচ্ছুদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানালো জবি ছাত্রদল



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ২৪টি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের ফলের শুভেচ্ছা জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার (৩ মে) সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জবি শাখা ছাত্রদলের সহ সভাপতি শামিম হোসেন, রুবেল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম মাসুম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন সর্দার, জাফর আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক ( যুগ্ম সম্পাদক পদমর্যাদা) সাখাওয়াতুল ইসলাম খান পরাগ, যুগ্ম সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রায়হান হোসেন, সহ সাংগঠনিক মাসফিক রাইয়ানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।

;

তীব্র দাবদাহে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পশুপাখিদের জন্য 'বিহঙ্গের জল'



গণ বিশ্ববিদ্যালয় করেসপন্ডেন্ট, সাভার
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশব্যাপী চলমান তীব্র দাবদাহে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানো পশুপাখিদের জন্য খাবার পানির ব্যবস্থা করেছে, গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস)। এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে, পশুপাখিদের জন্য 'বিহঙ্গের জল'!

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে গবিসাসের সভাপতি আখলাক ই রাসূলের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদামতলা থেকে এ কর্মসূচি শুরু করা হয়।

এরপর বাদামতলা, আমতলা, তালতলা, ট্রান্সপোর্ট ইয়ার্ডসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গাছে প্লাস্টিকের বোতল ঝুলিয়ে এবং মাটির হাড়ি স্থাপন করে পাখি, কুকুর, বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীদের জন্য খাবার পানির ব্যবস্থা করে গবিসাস।

পশুপাখিদের জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ করায় গবিসাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফুয়াদ হোসেন বলেন, সাংবাদিক মাত্রই যে মানবিক, তা গবিসাসের এই উদ্যোগ থেকেই বোঝা যায়। বিরূপ আবহাওয়ায় প্রাণীকুলের জন্য পানির ব্যবস্থা করার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের সাধুবাদ জানাই।

'বিহঙ্গের জল' কর্মসূচিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। ছবি- বার্তা২৪.কম

গবিসাসের সাধারণ সম্পাদক সানজিদা জান্নাত পিংকি বলেন, বিগত কয়েকদিনের দাবদাহে ও তাপপ্রবাহে জনজীবনের সঙ্গে ওষ্ঠাগত প্রাণীকুলও। এর পাশাপাশি পানি সংকটও লক্ষণীয়। তীব্র গরমে ক্যাম্পাসের কুকুর, বিড়াল ও পাখিদের পানির পিপাসা মেটাতেই এবং ফেলনা প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহারের প্রচেষ্টায় গাছে গাছে মাটির হাড়ি এবং পানির বোতল কেটে ঝোলানো হয়েছে।

এসময় উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষক এ কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। পরবর্তীতে এই ধারা অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন তারা।

পানির সংকট দূর না হওয়া পর্যন্ত রোজ পাত্রগুলোতে পানির ব্যবস্থা করা হবে বলে নিশ্চিত করেন গবিসাসের সদস্যরা।

কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবিসাসের সদস্যরা।

 

;

নারী নিপীড়নের অভিযোগে জাবি থিয়েটার সম্পাদককে অব্যাহতি



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নারী নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংস্কৃতিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) সাধারণ সম্পাদক চন্দন সমাদ্দার সোম হিমাদ্রীকে সংগঠনের পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের দপ্তর সম্পাদক জায়েদ হোসেন আলিফ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৮ এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) সাধারণ সম্পাদক চন্দন সমাদ্দার সোম হিমাদ্রীর বিরুদ্ধে একটি নিপীড়নের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এক জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়া হলো।

তদন্ত চলাকালে চন্দন সংগঠনের কোন কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকবে না। তদন্ত শেষে রিপোর্ট প্রকাশের পর জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার (অডিটোরিয়াম) তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। ততদিন পর্যন্ত সংগঠনের যাবতীয় সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া জাহানকে মনোনীত করা হলো। তদন্তকাজে প্রশাসনকে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার যেকোনো ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা করতে সবসময় প্রস্তুত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত কিছুদিন যাবত অনলাইন মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার, গুজব ও মিথ্যাচার আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নামে যে-সব তথ্য দেয়া হয়েছে, তা নিতান্তই মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত। এর পেছনে অন্তর্নিহিত কোন অসাধু উদ্দেশ্য আছে বলে মনে হচ্ছে। পাশাপাশি, নিপীড়নের তদন্ত প্রমাণের পূর্বেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ, নানা মাধ্যমে ধর্মীয় উসকানিমূলক এবং হয়রানিমূলক আচরণ দেখা যাচ্ছে, তা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। এর প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের উপর ভয়াবহভাবে পড়বে। এ ধরনের মিথ্যাচার, গুজব ও অপপ্রচারের কারণে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার (অডিটোরিয়াম) এসব অপপ্রচারকারী ও তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এহেন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার সকলকে আহ্বান জানাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) সাধারণ সম্পাদক চন্দন সমাদ্দার সোম হিমাদ্রীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী। অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী ও হিমাদ্রীর মধ্যে ২০২২ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রেমের সম্পর্ক থাকাকালীন হিমাদ্রীর দ্বারা ৪ বার গুরুতরভাবে আহত হন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগীর কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়া, আঙুল ভেঙ্গে দেওয়া, মাটিতে ফেলে বুকের উপর বসে গলা চেপে ধরাসহ কথায় কথায় গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী। পাশাপাশি ভুক্তভোগীকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টাও করা হয়ে বলে অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়।

আনিত অভিযোগের বিষয়ে চন্দন সমাদ্দার সোম হিমাদ্রী বলেন, এতদিন পরে এসে এইধরনের অভিযোগে আমি বিব্রত এবং বিরক্ত। এতদিন পরে এসে এধরনের কথা আমার জন্য মানহানিকর এবং আমিও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং আমার মনে হয় উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মিথ্যামিশ্রিত। তারপরেও যেহেতু আমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এসেছে, আমিও চাই এই অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্ত হোক।

এদিকে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির জানান, আমরা লিখিত অভিযোগপত্র পেয়েছি। ইতিমধ্যে দু'জন সহকারি প্রক্টরকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া এবং গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রকৃতি বিশ্বাস। প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রয়োজনে নিপীড়নবিরোধী সেলে এ অভিযোগ পাঠানো হতে পারে।

;