জবিতে উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ পদ ফাঁকা, সার্বিক কার্যক্রমে স্থবিরতা



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দুইটি পদ (উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ) ফাঁকা থাকায় এর প্রভাব পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমে। কবে নাগাদ এই দুই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে সেটিও অনিশ্চিত। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে কোন উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন হয়নি। তাই সংকট নিরসনে অতি দ্রুত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের।

গত ১১ নভেম্বর রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। চিকিৎসাজনিত কারণে গত আগস্ট মাস থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মিত ছিলেন তিনি৷ অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ।

তবে গত ২৬ নভেম্বর তার মেয়াদও শেষ হয়। ফলে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি৷ যার প্রভাব পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক সহ সকল কার্যক্রমেই।

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১১ এর (১) ধারা অনুযায়ী ভাইস-চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক প্রধান একাডেমিক ও প্রশাসনিক নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পদাধিকারবলে সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল, অর্থ কমিটি ও পরিকল্পনা-উন্নয়ন কমিটির চেয়ারম্যান থাকবেন। ১৭ এর (১) ধারা অনুযায়ী ভাইস চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সভাপতি এবং ১৮ এর (২) ধারা অনুযায়ী সিন্ডিকেট সভা ভাইস চ্যান্সেলর কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ, স্থান ও সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে শর্ত থাকে প্রতি দুই মাসে সিন্ডিকেটের কমপক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে।

তবে গত জুনের পর আর কোন সিন্ডিকেট সভা আয়োজন হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ অর্থাৎ প্রতি দুই মাসে একটি সভা আয়োজনের কথা থাকলেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ছয় মাস ধরে কোন সিন্ডিকেট সভা হচ্ছেনা।

এতে করে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পদোন্নতি, গবেষণার জন্য শিক্ষকদের বিদেশ যাওয়ার অনুমতি, শিক্ষার্থীদের পুনঃভর্তি, পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ সম্ভব হচ্ছেনা এমনকি সার্টিফিকেটও তুলতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা৷ পাশাপাশি আটকে আছে বেশ কিছু বিষয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০ এর (১) ধারা অনুযায়ী ভাইস চ্যান্সেলর একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি এবং ২১ এর (১) ধারা অনুযায়ী একাডেমিক কাউন্সিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষা বিষয়ক সংস্থা৷ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় সাত মাস ধরে একাডেমিক কাউন্সিলের কোন সভাও হচ্ছেনা৷ এতে করে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সিলেবাস নবায়ন করা সম্ভব হচ্ছেনা। সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সংক্রান্ত সকল বিষয় থমকে আছে৷

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১২ এর (৪) ধারা অনুযায়ী ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের সার্বিক তত্ত্বাবধান করবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ সংক্রান্ত নীতি সম্পর্কে ভাইস চ্যান্সেলর, সংশ্লিষ্ট কমিটি, ইনস্টিটিউট ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে পরামর্শ প্রদান করবেন। কোষাধ্যক্ষ সকল প্রকল্পের আর্থিক অনুমোদন দেন। তবে বর্তমানে কোষাধ্যক্ষ না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক বিষয়াদিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, গত জুনে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪তম সিন্ডিকেট সভায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস করা হয়। তবে উপাচার্যের অসুস্থতাজনিত কারণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের কোন উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন হয়নি। নতুন ক্যাম্পাসের বালু ভরাটের টেন্ডার হলেও উপাচার্যের অনুমোদন না পাওয়ায় বন্ধ হয়ে আছে সংশ্লিষ্ট কাজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, কোষাধ্যক্ষ না থাকায় টেন্ডার কমিটির সমন্বয়ের কোন মিটিং আয়োজন সম্ভব হচ্ছেনা৷ পাশাপাশি কোন প্রকল্পের আর্থিক অনুমোদনও আপাতত হচ্ছেনা। উপাচার্যের অনুমোদন ছাড়া কাজ শুরুর সুযোগ না থাকায় তৈরী হয়েছে জটিলতা। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা বিদ্যমান থাকায় প্রকৌশল দপ্তরেও নেমে এসেছে স্থবিরতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রার বলেন, আমরা ফাইল অনুমোদনের জন্য ভিসি-ট্রেজারার স্যারের কাছে পাঠাই৷ এখনো দুই দপ্তরে ফাইল পাঠানো হচ্ছে৷ তবে যেহেতু পদ দুটি ফাঁকা তাই এসব ফাইল অনুমোদনের এক্ষেত্রে জটিলতা তৈরীর পাশাপাশি লম্বা সময় লেগে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন বলেন, উপাচার্য না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেট সভা ও একাডেমিক কাউন্সিলের সভা হয়না। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক গতি নষ্ট হচ্ছে। সবার আগে প্রয়োজন উপাচার্য নিয়োগ।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিকভাবে চলার জন্য উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ দুইটা পদই গুরুত্বপূর্ণ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন দুটি পদই ফাঁকা। এতে করে বেশ কিছু সংকট তৈরী হয়েছে৷ আমরা আশা করব সরকার অতি দ্রুতই
বিশ্ববিদ্যালয়ে-কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে সংকট নিরসনের দৃষ্টান্ত রাখবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সংকট তৈরী হয়েছে তাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ থেকে আরম্ভ করে গবেষণার জন্য ছুটি প্রদান সবকিছুই বন্ধ হয়ে আছে৷ এর সংকট সমাধানের একমাত্র উপায় হলো উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেওয়া।

কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে

কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ঢাবির রোকেয়া হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষদ্বয় উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হলসমূহের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিকট হতে আর্থিক বরাদ্ধ পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নের মাধ্যমে হলসমূহ সংস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

;

আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন রাবি শিক্ষার্থীরা



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা

রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্টিমেটাম দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সকল প্রকার কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে রাবি শিক্ষার্থী মোকাররম হোসেন বলেন, আমরা সারাদেশের ন্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আন্দোলন করে বর্তমানে একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। আমাদের একদফা দাবিটির সন্তোষজনক সমাধান হয়েছে। এতে সারা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ সন্তুষ্ট। তবে আন্দোলনের মধ্যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮দ ফা দাবি ছিলো। ৮ দফা দাবির মধ্যে কোটা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মামলার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। কারফিউও শিথিল করা হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে ইন্টারনেট সেবাও চালু হচ্ছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাবি থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এই শিক্ষার্থী বলেন, এসবের বাইরে আমাদের দাবি হল- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রশাসন কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারে অবস্থান করতে হবে। আবাসিক হলগুলোতে শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের পরিবারে ক্ষতিপূরণ ও তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের নিয়ে অতি দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা দেখতেছি সরকার ধীরে ধীরে আমাদের সকল দাবি মেনে নিচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, আজ থেকে সকল ধরণের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো তৃতীয় পক্ষ এসে আমাদের অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করবে, এই সুযোগ আমরা আর দেব না। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ৮দফা দাবি পরিপূর্ণ করে সারা বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করবে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা আবারও মাঠে নামব।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুজন ভৌমিক, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষাথী তোফায়েল আহমেদ ও মনিমুল হক এবং আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান গাজী মহারাজ উপস্থিত ছিলেন।

;

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ

জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি সকল চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম।

বুধবার (২৫ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার এর মাধ্যমে উপচার্য্য বরারর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তিনি এই স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দেন।

জাবির এই সহযোগী অধ্যাপক পদত্যাগ লিখেন, জনাব, আমি বিগত প্রায় ১৪ বছর ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করছি। দেশের সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদাসীনতা এবং শিক্ষকদের দলীয় মনোভাব আমাকে অনেক ব্যথিত করেছে। আমি সব সময় সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছি এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সর্বদা পাশে থেকেছি।

তিনি আরও লিখেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের একটি ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর মূল্যবান জীবন দিতে হয়েছে। সরকার চাইলে দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে পারতো, তাহলে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো না।

যে সকল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন, তাদেরকে নিয়ে তাদের পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল। সন্তান হারানোর বেদনায় তারা আজ দিশেহারা। তাদের সাথে সাথে সমগ্র জাতি আজ শোকাহত। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ, পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবি যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তা এই জাতির জন্য একটি কালো অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে হত্যা এবং কিছু সংখ্যক প্রতিবাদী শিক্ষকদের রক্তাক্ত করার মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড দেখেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষকদের আমি নির্লিপ্ত থাকতে দেখেছি। শিক্ষকদের ভূমিকা আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। রাজনৈতিক দলীয় করণের কারণে শিক্ষক সমাজের বিবেক লোপ পেয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক ভুলুষ্ঠিত হয়েছে। শহীদ সকল শিক্ষার্থী এবং আহত সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা প্রকাশ করছি এবং তাদের জন্য দোয়া করছি। সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মূল্যবোধ এবং নৈতিকতাবোধ কে জাগ্রত করতে আমি সহযোগী অধ্যাপক, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চাকুরী হতে স্বেচ্ছায় অব্যহতি ঘোষণা করছি।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য্য অধ্যাপক ড. নরুল আমীন বার্তা২৪. কমকে বলেন, শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম সেচ্চায় পদত্যাগ করার জন্য একটি আবেদন জানিয়েছে। সেটি আমাদের রেজিস্ট্রার গ্রহণ করেছে। আমি এখনো পদত্যাগপত্র দেখি নাই। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত পরে বলবো।

;

মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ/বার্তা২৪.কম

ছবি: মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ/বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ছাত্র-ছাত্রী নির্যাতন এবং হত্যার প্রতিবাদে নিজেদের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) বিবেকবান সাধারণ শিক্ষক উল্লেখ করে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন। বিজয় একাত্তর ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কিছু শিক্ষক। বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষকগণ ওই মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কৃষি অনুষদের করিডোর থেকে মৌন মিছিল শুরু হয়ে বিজয় একাত্তর ভাস্কর্যের চত্তরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান করে নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা দোআ করা হয়।

এসময় শিক্ষকরা বলেন ছাত্ররা আমাদের আন্দোলনে সহযোগিতা করছিলো কিন্তু আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করতে পারিনি। এজন্য আমরা দুঃখিত। আমরা সাধারণ শিক্ষকরা ক্লাস শুরু হওয়ার পরে যাতে আবার শিরদাঁড়া শক্ত করে দাঁড়াতে পারি তার জন্য আজকে আমরা এই রোদের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছি।সবাই শিরদাঁড়া সোজা করেন বুলেট চলবেই তার মধ্যে লড়াই থাকবেই। মনে রাখবেন ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমরা আজ বেঁচে আছি।

;