স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রধান জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়: জাবি উপাচার্য
আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন 'বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ' এর উদ্যোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে 'একুশ শতকের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে স্ট্যাটিসটিকস এন্ড ডাটা সায়েন্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কবীরের সঞ্চালনায় এই আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়।
আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সদস্য সচিব এবং সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমাদের নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। মানবাধিকার দিবস রাজনৈতিক উপাখ্যানে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে অনেকেই অপেক্ষায় ছিলেন বাংলাদেশের উপর কীভাবে স্যাংশন আসে। কিন্তু স্যাংশন না আসায় তাদের মন খারাপ। তারা মানবাধিকারের কথা বলে। কিন্তু প্যালেস্টাইনে কোথায় তাদের সেই মানবাধিকার ও গণতন্ত্র?
তিনি আরো বলেন, হেনরি কিসিঞ্জার যখন বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিলেন, তখন আমাদের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯০ ডলার। আজকে আমাদের মাথাপিছু আয় প্রায় ৩ হাজার ডলার। ২০৪১ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় হবে সাড়ে ১২ হাজার ডলার। ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশেকে আবারও সেই তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করতে চায়। আমরা সেই তলাবিহীন বাংলাদেশ চাই না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে যে বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন, আমরা সেই বাংলাদেশ চাই। আজ দেশে-বিদেশে বাংলাদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আপনাদেরকে সেই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সোচ্চার থাকতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলম বলেন, উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন তিনটি বিষয়ই এক এবং অভিন্ন। একটিকে বাদ দিয়ে অপরটি চিন্তা করা যায় না। স্বাধীনতার প্রথম দিকে এদেশে কিছুই ছিল না। বঙ্গবন্ধু শূন্য হাতে এ দেশ বিনির্মাণে আত্মনিয়োগ করেন৷ মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে স্কুল প্রতিষ্ঠা ও অন্যান্য অবকাঠামো শক্তিশালী করেন। প্রথম থেকেই তিনি সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বেশিদিন সময় পাননি৷ ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে উন্নয়নকে থামিয়ে দেয়। উন্নয়নের চাকা পেছনে ঘুরিয়ে দেয়। তবে তা আবার শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে অনেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রত্যয়টি বুঝতে পারেনি। কিন্তু এখন আমরা সেই সুফল সবাই ভোগ করছি৷ ১২ লক্ষ রোহিঙ্গাকে পৃথিবীর কোনো দেশ স্থান দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী সেই কাজ করে মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মাদার অব হিউম্যানিটি খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট নির্মাণে তিনি সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। নিজ অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মত বিশাল প্রজেক্ট শেষ হয়েছে শুধু প্রধানমন্ত্রীর অবদানে। এখন দেশের এক প্রান্ত থেকে খুব অল্প সময়ে অন্য প্রান্তে পৌঁছানো যায়। যোগাযোগ ও অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বিপ্লব ঘটিয়েছেন। মেট্রোরেলসহ অন্যান্য প্রজেক্টের কারণে শতশত কর্মঘণ্টা বেঁচে যাচ্ছে যা দেশের উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করছে। আগামী নির্বাচনে আপনারা শান্তির পক্ষে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। আমি মনে করি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রধান জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়। তাই আপনারা সবাই স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সহযোগী হবেন সেই প্রত্যাশা রাখছি।
সভাপতির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ এ মামুন বলেন, অনেক দেশ ও সংগঠনই মানবতার কথা বলে। কিন্তু, মানবতা ভূলুণ্ঠিত হওয়া দেখার দুর্ভাগ্য প্রধানমন্ত্রীর মতো আর কারও হয়নি। ১৫ আগস্ট এর চেয়ে ঘৃণ্য কাজ পৃথিবীতে আর কোথাও ঘটেনি৷ তখন জাতিসংঘ বা আমেরিকার মানবিকতা কোথায় ছিল? প্রধানমন্ত্রী বেঁচে আছেন শুধু দেশ ও জনগণের জন্য। প্রধানমন্ত্রী যে উন্নয়ন করেছে তা অতীতে কখনো হয়নি৷ ভবিষ্যতে যদি হয় তবে তা শুধু বঙ্গবন্ধু কন্যার দ্বারাই হবে। এর কিছুই প্রধানমন্ত্রী নিজের জন্য করেনি। যা করেছে সব জনগণের জন্য। তাই উন্নয়নের স্বার্থে আমাদের দায়িত্ব হলো ভোট দিয়ে আওয়ামীলীগকে আবারও জয়যুক্ত করা।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মোঃ মনজুরুল হক, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. রাশেদা আখতার, প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান, শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হল প্রভোস্ট, রেজিস্ট্রার আবু হাসান, বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রমুখ।