চবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ

  • চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিজ্ঞান অনুষদের একটি বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীন আখতারের কাছে ওই শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেওয়া অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, থিসিস চলাকালীন সময়ে আমার সুপারভাইজার কর্তৃক যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হই। থিসিস শুরুর পর থেকে তিনি আমার সঙ্গে বিভিন্ন যৌন হয়রানিমূলক যেমন- জোর করে হাত চেপে ধরা, শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিত ও জোরপূর্বক স্পর্শ করা, অসংগত ও অনুপযুক্ত শব্দের ব্যবহার করেছেন। কেমিকেল আনাসহ আরও বিভিন্ন বাহানায় তিনি আমাকে তার রুমে ঢেকে নিয়ে জোরপূর্বক জাপটে ধরতেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৬ জানুয়ারি আনুমানিক সকাল ১০টা ১০ মিনিটে আমি ল্যাবে একা কাজ করা অবস্থায় তিনি (শিক্ষক) প্রবেশ করেন এবং তার অনেক ঠান্ডা লাগছে এই কথা বলে আমাকে জোর করে জাপটে ধরেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে ধাক্কা মেরে নিজেকে ছাড়িয়ে নেই এবং তৎক্ষণাৎ আমার ল্যাবমেট এসে উপস্থিত হওয়ায় আমি কোনোরকম বেঁচে যাই। তারপর আমি ও ল্যাবের বাকি মেয়েরা মিলে ল্যাবে আর একা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

বিজ্ঞাপন

গত ১৩ জানুয়ারি আনুমানিক দুপুর ১২টা নাগাদ ওই শিক্ষক কেমিকেল দেওয়ার বাহানা করে রুমে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ তোলেন ওই ছাত্রী। তিনি বলেন, আমাকে ফ্রিজ থেকে কেমিকেল বের করারত অবস্থায় পিছন থেকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরেন। এবং তার হাত ও ঠোঁট দিয়ে আমার গোপনাঙ্গে স্পর্শ করেন। আমি তাকে ধাক্কা মেরে রুম থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তিনি দরজা বন্ধ করে আমাকে ধর্ষণ চেষ্টা করেন। আমি ধস্তাধস্তি করে উনার রুম থেকে আত্মরক্ষা করে পালিয়ে বাঁচতে সক্ষম হই। তৎক্ষণাৎ বিষয়টি আমি ল্যাবের বাকি দুজন মেয়েকে অবগত করি। উল্লেখ্য, ইতোপূর্বেও এমন অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের শিকার হয়েছে তারা।

অভিযোগে আরও লেখেন, পরবর্তী দিন থেকে তিনি আমাকে ও আমার ল্যাবমেট বাকি দুজনকে রুমে ডেকে নিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন বিষয়টি কাউকে প্রকাশ না করার জন্য এবং তার সঙ্গে মধ্যস্থতায় আসার জন্য আমাদের ৩ জনকে প্রায় ২৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে জোরপূর্বক তার রুমে আটকে রাখেন। আমরা বের হতে চাইলে তিনি রুমের দরজা-আগলে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং বলেন কোনো ধরণের মধ্যস্থতা ছাড়া তিনি আমাদের তার রুম থেকে বের হতে দিবেন না। আমি খুব অসুস্থবোধ করায় আমার ল্যাবমেটরা উনাকে বারবার রুম হতে বের হতে দেওয়ার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি আমাদের বের হতে দেননি।

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই জঘন্যতম ঘটনার কারণে আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রচন্ড বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। তাই আমার দৈনন্দিন প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় থিসিস কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে অভিযোগে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, আমি আমার থিসিস ল্যাবে অনিরাপত্তায় ভুগছি এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে থিসিস কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।

অভিযুক্ত অধ্যাপকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমি জানি না এটা আমার কোন পাপের ফল কিনা।

তিনি বলেন, আজ দুপুরের দিকে একজন সাংবাদিকের ফোন পেয়ে অভিযোগের বিষয়ে প্রথমে জানতে পারি। আমার ৩১ বছরের শিক্ষকতা জীবন পার করছি কিন্তু এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়নি। তারা আমার বিরুদ্ধে ভয়ংকর একটা অভিযোগ তুলেছে। যার সঙ্গে আমার নূন্যতম সম্পর্ক নেই।

এদিকে ওই ছাত্রীর অভিযোগ গ্রহণ করেছেন উপাচার্য শিরীন আখতার। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, অভিযোগ পেয়েছেন। খতিয়ে দেখে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।