কুবি শিক্ষক সমিতি গঠনের লক্ষ্যে স্বাক্ষর কর্মসূচি
এক বছরের বেশি সময় ধরে অস্তিত্ব নেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষক সমিতির। ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোকাদ্দেস-উল-ইসলামের কমিটি নির্বাচন দিলেও শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে সেই নির্বাচন স্থগিত হয়। এরপর আর আলোর মুখ দেখেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। তবে, নতুন করে আবারও শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম শুরু করতে উদ্যোগ নিয়েছেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। সেই প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের কাছ থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৯ জানুয়ারি শিক্ষক নেতারা একটি মিটিং ডাকেন। তবে, সেই মিটিংয়ে সব গ্রুপের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন না বলে জানা যায়। পরবর্তীতে শিক্ষকদের চিঠি দিয়ে শিক্ষক সমিতি গঠনের পক্ষে মতামত দিয়ে স্বাক্ষর প্রদানের কথা বলা হয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৬ জন শিক্ষকের মধ্যে ১৯০ জনের অধিক শিক্ষক শিক্ষক সমিতির পক্ষে মতামত দিয়ে স্বাক্ষর দিয়েছেন বলে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের জন্য আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি একটি সাধারণ সভা আহ্বান করেছেন শিক্ষক নেতারা।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ১৯০ জনের অধিক শিক্ষক শিক্ষক সমিতির পক্ষে মতামত দিয়ে স্বাক্ষর পাঠিয়েছেন৷ কয়েকজন আগামীকাল পাঠাবেন বলেছেন। আগামী ৭ তারিখ একটি সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে শিক্ষকদের মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনে তারিখ নির্ধারন করা হবে। আশাকরি, শিক্ষকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা শিক্ষক সমিতি আবারও কার্যক্রম শুরু করবে।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, একটি সংগঠন ধারাবাহিকভাবে চলে। শিক্ষকরা চলে গেলেও সংগঠন থেকে যাবে। শিক্ষকদের যে অধিকারের জায়গা তা শিক্ষক সমিতি দেখে। শিক্ষা, গবেষণা সম্প্রসারণের যে সুবিধাগুলো তা শিক্ষক সমিতি দেখে থাকে। শিক্ষক সমিতি একটি বড় স্টেক হোল্ডার। এখানে যদি শিক্ষক সমিতিতে অকার্যকর করে রাখা হয় তাহলে এটি খুবই হতাশাজনক। যারা সচেতন শিক্ষক তারা সকলেই ঐক্যবদ্ধ। আমি শুনেছি যে প্রায় দুইশোয়ের মত শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন এ বিষয়ে। আমার মনে হয় না কোনো শিক্ষককে এ বিষয়ে অনাগ্রহ থাকার কথা যদি তিনি নিজেকে শিক্ষক মনে করেন।
ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমি একজন শিক্ষক। তাই শিক্ষক সমিতি হোক আমিও চাই।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, 'সবাই চাচ্ছে শিক্ষক সমিতিটি হোক। শিক্ষকরা সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যাপারে কথা বলতে পারে। এই সংগঠনটি না থাকায় সকলেরই ক্ষতি হচ্ছে, সমস্যা হচ্ছে। এখন সকল শিক্ষকরা অনুভব করছে শিক্ষক সমিতি দরকার।'
তিনি আরো বলেন, 'একটি প্ল্যাটফর্ম থাকলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বলতে পারবে। শিক্ষক সমিতি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে শিক্ষকরা তার ন্যায্য অধিকার কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো গঠনমূলক কর্মকান্ডে এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে যদি তার কোনো সাজেশন থাকে বা মতামত থাকে তাহলে সে শিক্ষক সমিতির মাধ্যমে বলতে পারে। শিক্ষক সমিতিও সেই মোতাবেক কাজ করতে পারে। টোটাল কমিউনিটির যেন স্বার্থ রক্ষা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে অংশীদার হতে পারে সেই লক্ষ্যেই শিক্ষক সমিতি কাজ করে থাকে। বর্তমানে শিক্ষক সমিতি না থাকায় শিক্ষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই অধিকাংশ শিক্ষকরা মনে করছেন যে শিক্ষক সমিতিটি হওয়া দরকার।