ধর্ষণের ঘটনায় জাবিতে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’ গঠন

  • জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ ও বিগত অন্যান্য নিপীড়নের বিচারের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ‘নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ’।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলি।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সংগঠকরা জানান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন, নির্যাতন, র‍্যাগিং ও নানা অন্যায়-অপকর্ম দিন দিন বেড়েই চলেছে। শিক্ষক জনির যৌন নিপীড়ন থেকে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বহিরাগত নারী ধর্ষণের দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখনই বন্ধ না করলে এসকল নিপীড়করা আরও সাহস পেয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব অন্যায় ও নিপীড়নকারীদের মূলোৎপাটন করতেই এই মঞ্চ গঠন করা হয়েছে।

কারা এই মঞ্চে যোগ দিতে পারবে এমন প্রশ্নের জবাবে সংগঠকরা জানান, সাম্প্রতিককালে যেকোনো নিপীড়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ছাড়া অন্য যে কেউ এ মঞ্চে যুক্ত হতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলন পরিচালনাকারীদের নিয়ে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের কমিটি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক পারভীন জলি বলেন, সকল নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়তে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চ গঠন করা হয়েছে। এই মঞ্চটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অংশীজনের। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সকল অন্যায়-অপকর্ম, নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে কাজ করবে।

এসময় যৌন নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিচারে গঠিত স্ট্রাকচার্ড কমিটির তীব্র সমালোচনা করে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, আপনারা জানেন বিগত দুই বছর পেরিয়ে গেলেও নৈতিক স্খলনের দায়ে অভিযুক্ত মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে কোনো বিচার করা হয়নি। এর পেছনে মূল দায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি এই দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না।

এসময় দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া ও বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বক্তব্য রাখেন। এছাড়া মঞ্চের সাথে যুক্ত অন্যান্য রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, সোমবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের নতুন ভবনের সামনে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ‘রাতের আঁধারে ধর্ষণ করে, প্রশাসন কি করে’, ‘রোয়ার অ্যাগেইনস্ট রেইপ’, ‘অপরাধীর শাস্তি চাই, জাবিতে ধর্ষকের ঠাঁই নাই’, ‘মৃত্যুদণ্ড ধর্ষকের সর্বোচ্চ নয় একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান করতে দেখা যায়।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি নতুন রেজিস্ট্রার ভবন হয়ে বটতলা হয়ে পুনরায় কলা ও মানবিক অনুষদের নতুন ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।

এর আগে, বেলা ১১টায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টারিং করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।