শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প তৈরি হয়নি: জবি উপাচার্য
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেছেন, শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প তৈরি হয়নি। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু কন্যা, উনি কোনো কিছুতেই ভয় পান না। উনি মার্কিন রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশের সম্পদ রক্ষা করতে পারেন তার দূরদর্শী ও কূটনৈতিক নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জবি উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ের কয়েকটি দর্শন রয়েছে; যা অনুধাবন করলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। ছাত্রলীগকে অবশ্যই সেই দর্শন ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে সৌজন্যতা, সহমর্মিতা, ধৈর্য্য, ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা লালন করতে হবে।
ছাত্রলীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা নারীদের সম্মান করবে। নারীর অধিকার বাস্তবায়নে লড়াই করবে। কেননা, আমাদের জাতির পিতা নারীদের অনেক সম্মান করতেন। মুক্তিযুদ্ধের নির্যাতিতা নারীদের তিনি 'বীরাঙ্গনা' উপাধি দিয়েছেন যার অর্থ 'ওয়্যার হিরোইনস'। কাজেই নারীর অধিকার আদায় ও সম্মান রক্ষা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের অংশ। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বীরাঙ্গনাদের পরিবার যখন তাদের গ্রহণ করতে রাজি হয়নি তখন জাতির পিতা তাদের গ্রহণ করেছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছাকে নিয়ে একটি রিহ্যাব সেন্টার খুলে সেই বীরাঙ্গনাদের নতুন জীবন দিয়েছেন, তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করেছেন। তাদের বাবার পরিচয়ের জায়গায় লিখতে বলেছেন বঙ্গবন্ধুর নাম এবং ঠিকানা দিতে বলেছেন ধানমন্ডি ৩২।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্য বলেন, ভূ-রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ চীন, রাশিয়া, ভারত ও আমেরিকার কাছে। আমেরিকা আমাদের থেকে সেন্টমার্টিন চেয়েছিল কিন্তু শেখ হাসিনা সেটি না করে কূটনৈতিকভাবে নেগোসিয়েট করেছেন। উনি সবসময়ই বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, আমি ভয় পাই না।
তিনি বলেন, আমি ছাত্রলীগকে অনেক পছন্দ করি। ছাত্রলীগ আমার দুর্বলতার জায়গা তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আমার দুর্বলতা। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে হেনস্তা করলে সেই ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে আমি কঠোর ব্যবস্থা নিবো।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার শিক্ষার্থীদের হতদরিদ্র বলবো না। আমি বলবো, তারা আমার সন্তান। আমার সন্তানদের পাশে থাকার দায়িত্ব আমার। যারা নীডি ফ্যামিলি থেকে এসেছে তাদেরকে একত্র করে বিশেষ শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছি যেন আমার সন্তানরা অনুপ্রাণিত হয়৷
শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিয়ে তিনি বলেন, মেয়েদের একটা হল করা হয়েছে, সেখানে ৭০০ শিক্ষার্থীর জায়গায় ১২০০ শিক্ষার্থী থাকছে। এবার ছেলেদের জন্য কয়েকটি হল করতে চাই যেন আমার সন্তানরা একটু আরামে থাকতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের হল নেই, খেলার মাঠ নেই। কিন্তু আমার সন্তানদের প্রতিভা আছে। আমরা সেই প্রতিভার পরিচর্যা করতে চাই।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফরাজির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী। এছাড়াও উক্ত কর্মশালায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।