রাবির ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে আবাসন ব্যবসা বন্ধের দাবি



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে আবাসন ব্যবসা ও মেস মালিক সমিতির দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।

রোববার (৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত এক মানববন্ধন এই দাবি জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন 'স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন'।

মানববন্ধনে সংগঠনটির সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, আবাসন ব্যাবসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একেবারে গেঁড়ে বসেছে। অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হয়, এই আবাসন ব্যবসার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় শিক্ষার্থী জড়িত। আবাসন ব্যবসা দূর করার জন্য অবিলম্বে আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে ও সামাজিকভাবে এই আবাসন ব্যবসায়ীদের বয়কট করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় মেস মালিকদের একটি দৌরাত্ম্য লক্ষ্য করা যায়। তারা এক রাতের জন্য ২০০ থেকে ৫০০ টাকা দাবি করে থাকেন, যেটি খুবই অমানবিক। আমরা চাই অবিলম্বে মেস মালিক সমিতির সাথে বিষয়টি সুরাহা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষার্থীদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করবেন।

অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ও আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহীন জোহরা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে এখানে ভর্তি হওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে তারা ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসে। কিন্তু মেস মালিকদের অসহযোগিতা এবং আবাসন ব্যবসার কারণে পরীক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। মধ্যবিত্ত বা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের পরীক্ষার্থীদের জন্য এই আবাসন খরচটা বহন করা সম্ভব হয় না। ফলে তাদের স্টেশন বা বিভিন্ন জায়গায় মানবেতরভাবে রাত কাটাতে হয়। এই দুর্ভোগ থেকে তাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাছে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান করছি।

মানববন্ধনে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

   

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগে শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্রীড়া বিভাগকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে ক্যাম্পাসের ক্রীড়া বিষয়ক নানা সমস্যা দূরীকরণ এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৬ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ।

সোমবার (২০ মে) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শাহ্ আলম বরাবর স্মারকলিপির মাধ্যমে এসব দাবি জানান তারা।

শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মৃদুল হাসান রাব্বির উপস্থিতিতে ক্রীড়া সম্পাদক বিজন কৃষ্ণ রায় ও উপ ক্রীড়া সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে উল্লেখিত ৬ দফা দাবিগুলো হলো- ফুটবল মাঠে স্থাপিত দুইটি সুপেয় পানির কল সংস্কার এবং ক্রিকেট মাঠে অনতিবিলম্বে দুটি পানির কল স্থাপন করতে হবে, ক্রিকেট মাঠে স্থায়ী দুইটি প্লেয়ার ডগআউট স্থাপন করতে হবে, জিমনেশিয়াম এবং ইনডোর সপ্তাহে ৭ দিন খোলা রাখতে হবে, ক্রিকেটারদের সুবিধার্থে নতুনভাবে কংক্রিট পিচ স্থাপন করতে হবে, ফুটবল ও ক্রিকেট মাঠ যথাযথভাবে সংরক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহ করতে হবে, সকল ইনডোর এবং আউটডোর গেমস সমূহ যথাযথভাবে আয়োজন করতে হবে।

এসময় শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) শাহ্ আলম বলেন, আমি স্মরকলিপিটি জমা নিয়েছি। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যৌক্তিক ছিলো। আমি দাবিগুলো প্রশাসনের কাছে উত্থাপন করবো। আশা করি প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নিবে।

;

সর্বজনীন পেনশন বাতিল চান শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিল না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন শিক্ষকরা এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।

সোমবার (২০মে) সকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্লাবে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিজামুল হক ভূঁইয়া। লিখিত বক্তব্যে পেনশন স্কিম বাতিল না করা হলে প্রথমে তিন দফায় আন্দোলন ও পরবর্তীতে বড় ধরনের আন্দোলনের কথা জানান তিনি।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক নিজামুল হক ভুঁইয়া আরও বলেন, এই ব্যবস্থা পহেলা জুলাইয়ের আগে যোগদানকৃত এবং তার পরে যোগদানকৃতদের মধ্যে দুটি শ্রেণির জন্ম দেবে। একই কর্মক্ষেত্রে অবস্থানরত সহকর্মীদের মধ্যে এই বিভাজন শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রতিটি ধাপেই নতুন নিয়োগ হয়। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অন্য প্রভাব ফেলবে।

এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করলে সেটিও নতুন নিয়োগের ভিত্তিতে হয়। এই ব্যবস্থা সরকারি অন্যান্য চাকরিজীবী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্য তৈরি করবে, যা সংবিধানের সমতার নীতির পরিপন্থি। বর্তমান ব্যবস্থায় পেনশন বাবদ কোনো অর্থ কর্তন করা হয় না। 'প্রত্যয়' স্কিমে মূল বেতনের ১০ শতাংশ বা ৫০০০ টাকা (যেটি সর্বনিম্ন) হারে টাকা কর্তন করার বিধান রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় এককালীন আনুতোষিক প্রাপ্য হন। 'প্রত্যয়' স্কিমে আনুতোষিক শূন্য। বিদ্যমান পেনশনার ও নমিনি আজীবন পেনশন প্রাপ্ত হন। 'প্রত্যয়' স্কিমে পেনশনারের মৃত্যু হলে নমিনি পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পূর্তি হওয়া পর্যন্ত পেনশন প্রাপ্ত হবেন। বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় পেনশনের ওপর বৎসরিক ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা হয়। সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিষয়টি সুস্পষ্ট নয়। বিদ্যমান ব্যবস্থায় অর্জিত ছুটি নগদায়নের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রস্তাবিত স্কিমে সে সুবিধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদকাল ৬৫ বছর। প্রত্যয় স্কিমে অবসরকালীন বয়স স্থির করা হয়েছে ৬০ বছর।

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালে ৮ম জাতীয় বেতন স্কেলে শিক্ষকদের অবনমন করা হয়েছিল। সে সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিষয়টির সুরাহা হয়। সেই আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের তৎকালীন নেতৃবৃন্দকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুপারগ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছিল।

অদ্যাবধি সে বিষয়টি কার্যকর করা হয়নি। সেটি অবিলম্বে কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রদানের দাবি দীর্ঘদিনের। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশা মেধাবীদের কাছে আকর্ষণীয় করতে পেশাগত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তনের দাবি জানাচ্ছি।

এসময় ৪ জুনের পর কেমন আন্দোলন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, সেটা সময় আসলেই জানা যাবে। পলিসি মেইনটেইন যারা করছেন তার সাথে তো আমরা জড়িত না তবে একটা মহল তো আছেই যারা এ ধরনের কাজ করছে। একটি চক্র কি আসলে শিক্ষকদেরকে নিয়ে কোনো অপচেষ্টা চালাচ্ছে কি না সেটা গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা পলিসি যারা মেইনটেইন করে তাদেরকে নোটিশ করতে চাই।

সম্মেলনে ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

;

ঢাবিতে বিবিএ পড়াকালেই সিএ ভর্তির সুযোগ



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিবিএ পড়াকালেই ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস এ ভর্তির সুযোগ পাবে। এ ছাড়াও, সিএ পড়ার ক্ষেত্রে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩টি কোর্স মওকুফ করা হবে।

রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশে সিএ শিক্ষা ও গবেষণার প্রসার এবং এবিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগ এবং দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং আইসিএবি'র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিন এফসিএ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, এ সমঝোতা স্মারকের আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসব সুবিধা পাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. হাসিনা শেখ, আইসিএবি'র সিইও শুভাশিস বোস এফসিএ, ভাইস-প্রেসিডেন্ট এমবিএম লুৎফুল হাদী এফসিএ, ভাইস- প্রেসিডেন্ট মারিয়া হাওলাদার এফসিএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাংকিং এন্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের বিবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

;

উপাচার্য-শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা



অনন মজুমদার, কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি

উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি দ্বন্দ্বে অর্ধমাস অচল কুবি

  • Font increase
  • Font Decrease

উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির মধ্যকার দ্বন্দ্বে ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সকল অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। গত ২৯ এপ্রিলে শিক্ষক সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ৩০ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত স্থগিত হয়েছে সাতটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রস্তাবিত রুটিন প্রকাশ এবং পাঁচটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার পর থেকে অর্থনীতি বিভাগ, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ এবং মার্কেটিং বিভাগের আটটি পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। যে সাতটি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার লক্ষে রুটিন হাতে এসেছিল, সেগুলোও ইতোমধ্যেই শুরু হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে অনির্দিষ্টকালের ক্লাস-পরীক্ষা ও হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলেই থেকে যায়। কেউ কেউ আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া বাসে করে ফিরে যান বাড়ি। দফায় দফায় সাধারণ শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য - শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। তারা চান, দ্রুত সময়ের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরে আসুক।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহীদ হোসেন সানি বলেন, ‘করোনা মহামারির কারণে আমাদের শিক্ষা জীবন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার উপর শিক্ষকদের ক্লাস পরীক্ষা বয়কটের সিদ্ধান্ত আর এরপর প্রশাসনের অনির্দিষ্টকালের বন্ধ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। ঈদের পর আমাদের স্নাতকোত্তর ১ম সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের ইনকোর্সই শেষ হয়নি। কবে নাগাদ সবকিছু স্বাভাবিক হবে, এসবের কিছুই জানি না। আমরা খুবই হতাশ। শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা সাত হাজার শিক্ষার্থী কেন ভুক্তভোগী হবো?'

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এমন ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কুবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচনের দিনই। ঐদিন বিকালে উপাচার্যকে ঘেরাও করে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এছাড়া উপাচার্যকে ‘নব্য আলী জিন্নাহ’ বলেন সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান৷ ৬ মার্চ উপাচার্যকে সবার সামনে পদত্যাগ করতে বলেন ও ‘ডাস্টবিন’ বলেও সম্বোধন করেন।

গত ১৩ মার্চ শিক্ষক সমিতি সাত দফা দাবি জানিয়ে কর্মসূচি শুরু করে। এরপর ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়ার পর ২৫ এপ্রিল উপাচার্য, ট্রেজারার ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাদের কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়। ২৮ এপ্রিল দুপুরে উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের সময় উপাচার্য, শিক্ষক সমিতি ও শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মধ্যে ত্রিমুখী ধাক্কাধাক্কির পর শিক্ষক সমিতি তাদের সাত দফা দাবি থেকে সরে এসে উপাচার্য ও ট্রেজারারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর ২৯ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরেরদিনই সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক কার্যক্রম ও হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

২৮ এপ্রিলের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে কুবি শিক্ষক সমিতি ও প্রশাসন৷ শিক্ষক সমিতি উপাচার্য, ট্রেজারারসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে এবং প্রশাসন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ শিক্ষক সমিতির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ জানায়।

এদিকে কুবি শিক্ষক সমিতির সাত দফা দাবির পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন ১৯ জন শিক্ষক। তবে বর্তমান এই অচলাবস্থা নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি উপাচার্য কিংবা শিক্ষক সমিতিকে। বরং সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছে কুবি শিক্ষক সমিতি। ২৪ এপ্রিল ৯২তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং সিন্ডিকেট থেকে চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিদ্ধান্ত চারটি হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি অবিহিত করে দিক নির্দেশনা চাইবে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য দফতরে হওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়, আগামী ১৬ মে অধ্যাপক গ্রেড-১ ও অধ্যাপক গ্রেড-২ পর্যায়ে উন্নীতকরণের জন্য সভা আহ্বান করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. সাদেকা হালিমকে শিক্ষক সমিতির দাবিগুলো নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাথে আলোচনা করে দাবিসমূহ নিষ্পত্তির জন্য দায়িত্ব প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে সিন্ডিকেটের চার সিদ্ধান্তকে উপাচার্যের 'সমস্যা সমাধানের দৃশ্যমান উদ্যোগ নয়' দাবি করে শিক্ষক সমিতির সভাপতি এবং তারা তাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানায়।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষক সমিতি সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা শিক্ষকদের উপর যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিলো তার প্রতিবাদে আমরা ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু উপাচার্য সে সমস্যার সমাধান না করে যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন আমরা শিক্ষক সমিতি সেটার সাথে একমত নই। আমরা চাই দ্রুত ভিসির অপসারণ হোক এবং এই সমস্যার সমাধান হোক। আমরা শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হোক চাই না। পাশাপাশি, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে ক্লাস পরীক্ষা দিতে পারুক।’

সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধ করার আগেই ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আসছিল শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বিবেচনায় সিন্ডিকেটের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়- ক্যাম্পাস ও হল বন্ধের। আশা করছি খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।’

;