মেয়ে আমার বিচারক হতে চেয়েছিল কিন্তু ওরা তাকে বাঁচতে দিলো না!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মেয়ে আমার বিচারক হতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা তাকে বাঁচতে দিলো না’ বলে গগনবিদারী চিৎকার করে কাঁদছিলেন শুক্রবার রাতে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার (২৪) মা তাহমিনা শবনম।

তিনি বলেন, এক বছরের মধ্যে স্বামী ও মেয়ে আমার কাছ থেকে চলে গেল। মেয়ে আমার বিচারক হতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা তাকে বাঁচতে দিলো না। মেয়ে আমার সাহসী ছিল। বিচার না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, গত রোজায় সরকারি কলেজের অধ্যাপক স্বামীকে হারালাম। এবার মেয়েকে।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফেসবুকে এক পোস্ট করে কুমিল্লার নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। এর পর বুকফাটা আর্তনাদ করতে থাকেন তার মা তাহমিনা শবনম।

কাঁদতে কাঁদতে অবন্তিকার মা বলেন, এক বছর আগে থেকে অবন্তিকার এক সহপাঠী তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো। এঘটনার পর অবন্তিকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের কাছে নালিশও করেছিল।

কিন্তু সহকারী প্রক্টর ঘটনার বিচার তো করেননি বরং অবন্তিকাকে ডেকে নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করেন। তিনি ওই ছেলের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। এরপরই ওই ছেলে আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে পড়ে। আপত্তিকর মন্তব্য করতো, হুমকি দিতো। এ ঘটনার বিচার না পেয়ে আমার মেয়ে অবন্তিকা মনের ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছে।

তাহমিনা শবনম বলেন, আত্মহত্যা করার কয়েক মিনিট আগে রাত সাড়ে নয়টার দিকে অবন্তিকা আমাকে এক গ্লাস পানি দিয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পরে ওর রুমের ফ্যান ঘোরার শব্দ না পেয়ে ওকে ডাকাডাকি করতে থাকি। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি।

পরে আমার ছেলে নিচে গিয়ে বাড়ির দারোয়ানকে দিয়ে মই আনিয়ে পূব পাশের জানালা খুলে দেখা যায়, অবন্তিকা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে!

এরপর পাশের ফ্ল্যাটের এক বাসিন্দা পুলিশে ফোন করেন। পুলিশ এলে তাদের নিয়ে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

তিনি আরো বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই অবন্তিকাকে খুব বিষণ্ণ দেখেছি। তার কাছ জানতে চাইলে বললো, তেমন কিছু না, এমনি। ও যে আত্মহত্যা করবে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত সাড়ে নয়টার দিকে কুমিল্লা সদরের নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ফাইরুজ অবন্তিকা। পরে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবন্তিকা তার শেয়ার করা পোস্টে বলেন, আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই, তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। আম্মান যে আমাকে অফলাইন অনলাইনে থ্রেটের উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করে ও আমার লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানান ভাবে ভয় দেখায় আম্মানের হয়ে যে আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার। আমি জানি, এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না।

কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতাম ও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়। আর দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারীজাতিয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে এখনো আমাকে নানাভাবে মানহানি করছে, বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে। আর এই লোক কুমিল্লার হয়ে কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্ট দের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায়, সেটা কুমিল্লার কারো সৎসাহস থাকলে সে স্বীকার করবে। এই লোক আমাকে আম্মানের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে গালি দিয়ে বলে 'তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলসস কেন? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে তোর ছাল তুলি, তোরে এখন কে বাঁচাবে?'

আফসোস এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিল। একবার জেল খেটেও সে এখন জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিক্যাল আর নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এতো কুকীর্তির পরও এভাবে বহাল তবিয়তে থাকে না এমন পোস্টে। কোথায় এই লোকের কাজ ছিল গার্ডিয়ান হওয়া আর সে কিনা শেষমেশ আমার জীবনটারেই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিলো না।

আমি উপাচার্য সাদেকা হালিম ম্যামের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে বিচার চাইলাম।

আর আমি ফাঁসি দিয়ে মরতেসি। আমার উপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ, সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে। আমি জানি এটা কোনো সলিউশন না, কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিতেসে না, বিশ্বাস করেন। আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইসিলাম! আর পোস্ট মর্টেম করে আমার পরিবারকে ঝামেলায় ফেলবেন না। এমনিতেই বাবা এক বছর হয় নাই মারা গেছেন, আমার মা একা। ওনাকে বিব্রত করবেন না। এটা সুইসাইড না এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার। আর আম্মান নামক আমার ক্লাসমেট ইভটিজারটা আমাকে এটাই বলছিল যে আমার জীবনের এমন অবস্থা করবে যাতে আমি মরা ছাড়া কোনো গতি না পাই। তাও আমি ফাইট করার চেষ্টা করসি। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সহ্য ক্ষমতার।

   

ভর্তিচ্ছুদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানালো জবি ছাত্রদল



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ২৪টি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের ফলের শুভেচ্ছা জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার (৩ মে) সকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে শিক্ষার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জবি শাখা ছাত্রদলের সহ সভাপতি শামিম হোসেন, রুবেল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম মাসুম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন সর্দার, জাফর আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক ( যুগ্ম সম্পাদক পদমর্যাদা) সাখাওয়াতুল ইসলাম খান পরাগ, যুগ্ম সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রায়হান হোসেন, সহ সাংগঠনিক মাসফিক রাইয়ানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।

;

তীব্র দাবদাহে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পশুপাখিদের জন্য 'বিহঙ্গের জল'



গণ বিশ্ববিদ্যালয় করেসপন্ডেন্ট, সাভার
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশব্যাপী চলমান তীব্র দাবদাহে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানো পশুপাখিদের জন্য খাবার পানির ব্যবস্থা করেছে, গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস)। এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে, পশুপাখিদের জন্য 'বিহঙ্গের জল'!

বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকেলে গবিসাসের সভাপতি আখলাক ই রাসূলের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাদামতলা থেকে এ কর্মসূচি শুরু করা হয়।

এরপর বাদামতলা, আমতলা, তালতলা, ট্রান্সপোর্ট ইয়ার্ডসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গাছে প্লাস্টিকের বোতল ঝুলিয়ে এবং মাটির হাড়ি স্থাপন করে পাখি, কুকুর, বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীদের জন্য খাবার পানির ব্যবস্থা করে গবিসাস।

পশুপাখিদের জন্য এমন উদ্যোগ গ্রহণ করায় গবিসাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. ফুয়াদ হোসেন বলেন, সাংবাদিক মাত্রই যে মানবিক, তা গবিসাসের এই উদ্যোগ থেকেই বোঝা যায়। বিরূপ আবহাওয়ায় প্রাণীকুলের জন্য পানির ব্যবস্থা করার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের সাধুবাদ জানাই।

'বিহঙ্গের জল' কর্মসূচিতে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। ছবি- বার্তা২৪.কম

গবিসাসের সাধারণ সম্পাদক সানজিদা জান্নাত পিংকি বলেন, বিগত কয়েকদিনের দাবদাহে ও তাপপ্রবাহে জনজীবনের সঙ্গে ওষ্ঠাগত প্রাণীকুলও। এর পাশাপাশি পানি সংকটও লক্ষণীয়। তীব্র গরমে ক্যাম্পাসের কুকুর, বিড়াল ও পাখিদের পানির পিপাসা মেটাতেই এবং ফেলনা প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহারের প্রচেষ্টায় গাছে গাছে মাটির হাড়ি এবং পানির বোতল কেটে ঝোলানো হয়েছে।

এসময় উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষক এ কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। পরবর্তীতে এই ধারা অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেন তারা।

পানির সংকট দূর না হওয়া পর্যন্ত রোজ পাত্রগুলোতে পানির ব্যবস্থা করা হবে বলে নিশ্চিত করেন গবিসাসের সদস্যরা।

কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবিসাসের সদস্যরা।

 

;

নারী নিপীড়নের অভিযোগে জাবি থিয়েটার সম্পাদককে অব্যাহতি



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নারী নিপীড়নের অভিযোগে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংস্কৃতিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) সাধারণ সম্পাদক চন্দন সমাদ্দার সোম হিমাদ্রীকে সংগঠনের পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের দপ্তর সম্পাদক জায়েদ হোসেন আলিফ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৮ এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) সাধারণ সম্পাদক চন্দন সমাদ্দার সোম হিমাদ্রীর বিরুদ্ধে একটি নিপীড়নের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। এক জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়া হলো।

তদন্ত চলাকালে চন্দন সংগঠনের কোন কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকবে না। তদন্ত শেষে রিপোর্ট প্রকাশের পর জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার (অডিটোরিয়াম) তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। ততদিন পর্যন্ত সংগঠনের যাবতীয় সাংগঠনিক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া জাহানকে মনোনীত করা হলো। তদন্তকাজে প্রশাসনকে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার যেকোনো ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা করতে সবসময় প্রস্তুত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত কিছুদিন যাবত অনলাইন মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারকে জড়িয়ে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার, গুজব ও মিথ্যাচার আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নামে যে-সব তথ্য দেয়া হয়েছে, তা নিতান্তই মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত। এর পেছনে অন্তর্নিহিত কোন অসাধু উদ্দেশ্য আছে বলে মনে হচ্ছে। পাশাপাশি, নিপীড়নের তদন্ত প্রমাণের পূর্বেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ, নানা মাধ্যমে ধর্মীয় উসকানিমূলক এবং হয়রানিমূলক আচরণ দেখা যাচ্ছে, তা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। এর প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের উপর ভয়াবহভাবে পড়বে। এ ধরনের মিথ্যাচার, গুজব ও অপপ্রচারের কারণে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার (অডিটোরিয়াম) এসব অপপ্রচারকারী ও তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এহেন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার সকলকে আহ্বান জানাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) সাধারণ সম্পাদক চন্দন সমাদ্দার সোম হিমাদ্রীর বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী। অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী ও হিমাদ্রীর মধ্যে ২০২২ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রেমের সম্পর্ক থাকাকালীন হিমাদ্রীর দ্বারা ৪ বার গুরুতরভাবে আহত হন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগীর কানের পর্দা ফাটিয়ে দেওয়া, আঙুল ভেঙ্গে দেওয়া, মাটিতে ফেলে বুকের উপর বসে গলা চেপে ধরাসহ কথায় কথায় গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী। পাশাপাশি ভুক্তভোগীকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টাও করা হয়ে বলে অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়।

আনিত অভিযোগের বিষয়ে চন্দন সমাদ্দার সোম হিমাদ্রী বলেন, এতদিন পরে এসে এইধরনের অভিযোগে আমি বিব্রত এবং বিরক্ত। এতদিন পরে এসে এধরনের কথা আমার জন্য মানহানিকর এবং আমিও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং আমার মনে হয় উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মিথ্যামিশ্রিত। তারপরেও যেহেতু আমার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ এসেছে, আমিও চাই এই অভিযোগ যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তদন্ত হোক।

এদিকে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির জানান, আমরা লিখিত অভিযোগপত্র পেয়েছি। ইতিমধ্যে দু'জন সহকারি প্রক্টরকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া এবং গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক প্রকৃতি বিশ্বাস। প্রতিবেদন দাখিলের পর প্রয়োজনে নিপীড়নবিরোধী সেলে এ অভিযোগ পাঠানো হতে পারে।

;

ছাত্রলীগের হল সভাপতির কক্ষ দখল, হত্যার হুমকি



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে কক্ষ দখল ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন একটি আবাসিক হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি।

বুধবার (১ মে) রাত ১০টায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে এই অভিযোগ তুলেন তিনি। এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে দল থেকে পদত্যাগ করবেন বলেও ওই পোস্টে উল্লেখ করেন তিনি।

ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা তাজবিউল হাসান অপূর্ব ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি শাহ মাখদুম হলের ২০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন।

অভিযুক্তরা হলেন, শহীদ হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মিনহাজুল ইসলাম, শাহ মাখদুম হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মিঠু মোহন্ত ও কর্মী ইমন। অভিযুক্তরা রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী।

ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা তাজবিউল হাসান অপূর্ব বলেন, আমার স্নাতকোত্তরের দুটি পরীক্ষা হয়েছে। এখনো তিনটা বাকি আছে। বাকি পরীক্ষাগুলো ১২ মে এর পরে হবে। আমি মঙ্গলবার আমার জিনিসপত্র নিয়ে ঢাকা চলে এসেছি। ওরা ভেবেছে, আমি হল ছেড়ে চলে এসেছি। এই ভেবে ওরা আমার রুমমেটের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকেও রুম ছেড়ে চলে যেতে বলেছে। আমার রুমমেট বলেছে, অপূর্ব ভাইতো হলে আসবে। উনি যেদিন হল ছেড়ে চলে যাবে, আমিও সেদিন চলে যাবো।

তিনি বলেন, এসব জানতে পেরে আমি মিনহাজ ভাইকে কল দিই। তখন উনি আমাকে গালাগালি দিয়ে তর্কাতর্কি করেন। আমি বলি, আমি হলের সভাপতি ভাই। আমার রুমে দশজনও থাকতে পারে। আপনাকে কৈফিয়ত দেবো কেনো? আমি কি বাবু ভাইয়ের কনসার্ন ছাড়া ননপলিটিক্যাল ব্লকে একটা ছেলেকেও তুলেছি? পলিটিক্যাল ব্লকে একটা ছেলেকেও তুলিনি আমি। কমিটি হওয়ার পর থেকে আমি নিষ্ক্রিয়। অভিমান করে আমি আর যাইনা রাজনীতির সাথে।

তখন উনি আমাকে বাবু ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। এবং বলেন, তুই বাকি তিনটা পরীক্ষা বাড়ি থেকে দিবি। বিষয়টি বাবু ভাইকে জানালে তিনি বলেন, ঠিক আছে। আমি মিনহাজকে বলে দিচ্ছি। মিনহাজ ভাইকে কল দিলে তিনি বলেন, বাবু ভাই রুম লক করে দিতে বলেছে। তখন আমি বলি, আমার রুমমেটরা কোথায় থাকবে ভাই?’ উনি বলেন, সেটা আমি জানি না। তুই রাজশাহী এসে আমার সঙ্গে দেখা করবি। তারপর সমাধান করবো। আবার বাবু ভাইকে কল দিয়ে বিস্তারিত জানালে তিনি বলেন, ঠিক আছে দেখছি।

এরপরে আমার হলের মিঠু আমাকে কল দিয়ে বলে, ভাই, আপনি নাকি বলেছেন যে, আমার রুমে যে কয়জন গিয়েছে, রাজশাহী গিয়ে তাদের ব্যবস্থা করবো। আমি বললাম, হ্যা, বলেছি। আমার রুমে যাবি কেনো? তখন বলে, ঠিক আছে ভাই। রাজশাহী আসেন। আপনার বাকি তিনটা পরীক্ষা কিভাবে দেন, দেখছি।সবকিছু বাবু ভাইকে জানালেও তিনি ডিরেক্ট কোনো পদক্ষেপ নেননি। এরপরেই আমি ফেসবুকে পোস্ট করেছি। পোস্ট করার পরে বাবু ভাই আমাকে কল দিয়ে পোস্ট ডিলিট করার কথা বলেছেন। ডিলিট করতে না চাওয়ায় তিনি বলেন, পোস্ট ডিলিট না করলে তোর মত তুই থাক। আর সমাধান করতে পারলে, কর। আমি ঢাকাতেই আছি। সাদ্দাম ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করে কথা বলবো এ বিষয়ে।

রুমমেট দুইজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ও আবাসিক শিক্ষার্থী কিনা জানতে চাইলে তাজবিউল হাসান অপূর্ব বলেন, আমি আবাসিক। আর ওরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিন্তু আবাসিক না।

অনাবাসিক শিক্ষার্থীকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনীতি করতে গেলে এরকম দুয়েকজনকে রাখা লাগে ভাই। বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতিরতো ছাত্রত্বই নাই! সে হলে থাকে না? আর আমিতো হলের ভাড়া দিয়ে পাঁচবছর রয়েছি। রাজনৈতিক প্রয়োজনে অন্য হলের ছেলেপেলেও নিয়ে এসে রাখা লাগে। আমার একজন রুমমেটের বাড়ি বিনোদপুরে। নতুন কমিটি হওয়ার পরে এক বড় ভাইয়ের পরামর্শেই আমি ওকে লোকাল ছেলে হিসেবে আমার রুমে রাখছি।

সব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে অভিযুক্ত মিঠু মোহন্ত বলেন, আমি না বরং উনিই (অপূর্ব) আমাকে গালাগালি করেছেন এবং হুমকি দিয়েছেন। আমরা ওনার রুম দখল করতে যাবো কেনো? বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটি সিট বাণিজ্য বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। অপূর্ব ভাইয়ের বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্যের অনেক অভিযোগ আছে। মূলত আমাদের কাছে তথ্য ছিলো যে, উনি দশ হাজার টাকার বিনিময়ে একটা ছেলেকে ওনার রুমে রেখেছেন। তাই, আমরা ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলেছি যে, সে টাকার বিনিময়ে হলে আছে কিনা বা আবাসিক কিনা।

তিনি আরও বলেন, ওই ছেলেকে যে উনি হলে তুলেছেন, সেটা হলের বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারাও জানেনা। ওই ছেলে পলিটিক্সও করে না, সে অনাবাসিক। উনি (অপূর্ব) সভাপতি বলেতো যা ইচ্ছা, তা করতে পারেন না। এটা পলিটিক্যাল ঝামেলা। উনি ঢাকায় শিফট হওয়ার আগে একটা ঝামেলা করতে চাচ্ছেন।
আরেক অভিযুক্ত মিনহাজুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি, তবে পুরোপুরি অবগত না। আমি ক্যাম্পাসের বাইরে আছি। ক্যাম্পাসে ফিরে এটা সমাধানের চেষ্টা করবো।

শাহ মাখদুম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, দুই পক্ষের কেউই আমাকে কিছু বলেনি। রাতে ফেসবুকে অপূর্বের পোস্টটা আমি দেখেছি। এখানে পরস্পর বিরোধী বিষয় আছে। এজন্য আমি আজ সকালে হলে গিয়ে বিষয়টা জানার চেষ্টা করেছি। পুরো বিষয়টা এখনও ক্লিয়ার হতে পারিনি। অপূর্ব নিজেও কিছু ঝামেলা করে রেখে গিয়েছে। এখন ও যেভাবে দোষারোপ করছে, সেটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত, সেটাও একটা বিষয়।

;