সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে শেকৃবির ‘আলোকিত মানুষ’
ছিন্নমূল শিশুদের আলোর পথ দেখানোর এক উদীয়মান সূর্য, তারুণ্যনির্ভর সংগঠন ‘আলোকিত মানুষ’। শিশুদের নিয়ে অক্ষর জ্ঞানের পাশাপাশি নৈতিক বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে আসার এ কাজটি করে যাচ্ছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক মেধাবী তরুণ শিক্ষার্থীর সংগঠন ‘আলোকিত মানুষ’।
প্রতি শুক্রবার এবং শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন শহীদ মিনারে চলে পাঠদান কার্যক্রম। এই পাঠশালায় বর্তমানে ৬০ শিশু শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ থেকে ২০ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠদান করাচ্ছেন।
যেখানে অধিকার বঞ্চিত শিশুদের জন্যে বিনামূল্যে পাঠদানের পাশাপাশি বিনামূল্যে বই, খাতা-কলম, ব্যাগসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়। নিয়মিত নেওয়া হয় পরীক্ষা, মেধাক্রম অনুসারে পুরস্কার প্রদান এবং খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে করে শিশু শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে দূরে সরে না যায়। পাশাপাশি অভিভাবকদের নিয়ে শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ নানা দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। যাতে করে তাদের শিশুদের পাঠদানের উৎসাহ দেন তারা।
শিশু শিক্ষার্থী সুমন বলেন, ভাইয়া ও আপুরা আমাদের শিখিয়েছে বড়দের দেখলে সালাম দিতে হয়, বড়দের সম্মান করতে হয়, সব সময় সত্য কথা বলতে হয়। আমি প্রতি শুক্রবার ও শনিবার পড়তে আসি, ভাইয়া ও আপুরা আমাদের অনেক আদর করেন।
আরেক শিশু শিক্ষার্থী নাফিসা বলেন, এখানে অনেক সুন্দর করে আমাদের পড়ায়। আমি এখানে এসে অ, আ, ই, ঈ শিখেছি এবং ১, ২, ৩, ৪ শিখেছি। আপু ও ভাইয়ারা আমার নাম কীভাবে লিখতে হয় তা শিখেছেন।
সংগঠনটির সভাপতি কাজী নাফিস সোয়াদ জানান, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য প্রাণের সংগঠন আলোকিত মানুষ প্রশংসার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সংগঠটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতকল্পে কাজ করে আসছে। এ ছাড়া নানা ধরনের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করে থাকে সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা। তারা সর্বদা বিশ্বাস করে মানবিক সমাজ গঠনে সবার অংশগ্রহণ একান্ত প্রয়োজনীয়।
মিরপুর থেকে পড়াতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবরিনা আকতার বলেন, আমার মন খারাপ থাকলেও এখানে এসে শিশুদের পড়ালে মন ভালো হয়ে যায়। মাঝে মাঝে শিশুরা অনেক দুষ্টুমি করে এরপরও এখানে পড়াতে ভালো লাগে এবং এখানে পড়াতে এসে আমি খুব খুশি। নিজেকে ধন্য মনে করি এই ধরনের সামাজিক কাজ করার সুযোগের জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মো. নাজমুস সাকিব বলেন, ভালো লাগা ও ভালোবাসার আরেক নাম আলোকিত মানুষ। এই পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি গর্বিত। আলোকিত মানুষ এমন একটি জায়গা যেখানে গেলে মানসিক প্রশান্তি ও ভালোবাসা মিলে। পরিবারে গেলে যে প্রশান্তি পাওয়া যায় তা আসলে আর কোথাও পাওয়া যাবে না আর কোটি টাকা দিয়েও তা কেনা সম্ভব না।