না থেকেও চিরদিনের জন্য রয়ে গেলেন তারা!

  • নূর ই আলম, ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সব বিদায়ই বেদনার! আর এই বেদনার মধ্যে আরেকটু বেদনা যুক্ত হলে তা বহন করা আরো কঠিন হয়ে যায়! ঠিক তেমনই ভারাক্রান্ত মুহূর্তের সৃষ্টি হয়েছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ল' অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম ব্যাচের বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে।

২০২৩ সালে বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী নওরীন নুসরাত এবং দু'বছর আগে একই ব্যাচের ফাবিহা সুহার অকাল মৃত্যুতে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বিদায় ক্ষণে!

বিজ্ঞাপন

বিভাগের প্রতিষ্ঠার পর প্রথম ব্যাচ ছিল ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্নের পর বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের।

এসময় সব শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা গেলেও তাদের সবার কথার মধ্যেই যেন একটা বেদনা বিরাজ করছিল। গ্রাজুয়েশন শেষে আনন্দে বিভোর থাকলেও দিনশেষে তাদের থেকে চিরবিদায় নেওয়া দুই সহপাঠীকে স্মরণ করেছেন বার বার!

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১ জুন) ল' অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নওরীন এবং সুহার স্মরণে ‘এত আনন্দ আয়োজন সবই বৃথা আমায় ছাড়া’ নামে বিশেষ কর্নারের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে সহপাঠীরা ‘স্টিকি নোটস’ দিয়ে স্মৃতিচারণ করেন দুই সহপাঠীকে।

রওজা নামে এক সহপাঠী লেখেন- ‘নওরীন তুমি আমার প্রথম দিনের বন্ধু। তোমায় খুব মিস করি। আল্লাহ তোমাকে মাফ করে দিক’।

উর্মি নামে আরেক সহপাঠী লেখেন, ‘এমন কোনোদিন নেই যেদিন তোদেরকে মনে করি না আমরা। তোরা ছাড়া নন্দিনী অপূর্ণ। অনেক অনেক দোয়া সোহা এবং নওরীনের জন্য’!

এছাড়াও নাম-পরিচয় ছাড়া তাদের সহপাঠী, জুনিয়ররা ক্ষুদ্র চিরকুট লাগিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তাদের।

কথাগুলো ছিল এমন- ‘হৃদয়ের কাতারে ওঠে ব্যথা, খুঁজে বেড়ায় নওরীন আপুর আভা’, ‘ওপারে ভালো থাকুন আপনারা’, ‘আপনারা এখানে থাকলে পরিবেশটা ভিন্ন হতো’, ‘আপু আপনি ফিনিক্স পাখি হতে চেয়েছিলেন, উড়ে গেলেন দিগন্তে’!

এমন আরো অনেক কথায় তাদের স্মরণ করেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি, মায়ের ওপর অভিমান করে সন্ধ্যা সাতটার দিকে নিজবাড়িতে গলায় ফাঁস দেন ফাবিহা সুহা। পরে পরিবারের লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এছাড়াও ২০২৩ সালে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে বিয়ের ১৯ দিনের মাথায় সাভারের আশুলিয়ায় নওরিন নুসরাত ছয়তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।