ত্রুটিপূর্ণ লিফটে ৩ ঘণ্টা আটকা জাবি শিক্ষার্থী, বের হলেন যেভাবে

  • জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের লিফটে বিদ্যুৎ চলে যাওয়া ও যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে তিন ঘণ্টা যাবৎ আটকে থাকার ঘটনা ঘটেছে এক শিক্ষার্থীর সাথে। এ ঘটনাকে হলের অব্যবস্থাপনা ও হল প্রশাসনের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী মনে করছেন ভুক্তভোগী সেই শিক্ষার্থী।

সোমবার (৩ জুন) দুপুর দেড়টায় হঠাৎ লোডশেডিংয়ের কারণে হলের লিফটে এই ঘটনা ঘটে বলা জানা যায়। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ আসলে তারও দুই ঘণ্টা পর বিকাল সাড়ে ৪টায় একজন কর্মচারী ঘটনা আঁচ করতে পেরে লিফট খুলে তাকে উদ্ধার করে।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী নয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে তিনি জানান, সোমবার দুপুর দেড়টায় বেজমেন্ট থেকে সপ্তম ফ্লোরে লিফটে উঠার পথে বিদ্যুৎ চলে যায়। সে মুহুর্তে আমার কাছে ফোন না থাকায় কাউকে ফোন দিতে পারিনি। তাই আমি লিফটের ভেতরে থাকা ইন্টারকমে প্রেস করি। ইন্টারকম প্রায় ৫-৭ মিনিট বাজলেও হল অফিস থেকে কেউ লিফট খুলতে আসেনি। পরে কোনো এক শিক্ষার্থী হয়তো ইন্টারকম বাজতে দেখে রিসিভ করতে গিয়ে রিসিভ করতে পারেনি। কিন্তু সে হয়তো ইন্টারকমটা নিয়ে ভুল জায়গায় রেখে চলে গেছে। পরে আমি ইন্টারকমে কল করলেও সেটা আর বাজে না। প্রায় ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর বিদ্যুৎ আসে। কিন্তু লিফট আবার হ্যাং হয়ে গেলে তখন লিফট আর খোলে না। পরে প্রায় ৩ ঘণ্টা পর সাড়ে ৪টার সময় হল অফিস থেকে কেউ একজন এসে লিফট খুলে দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, এসময় আমি কর্মকচারীকে যখন জিজ্ঞাসা করলাম তারা হল অফিসে থাকেন কিনা? উত্তরে তিনি আমাকে বললেন, এখন সবার ছুটি চলছে তাই হল অফিসে কেউ নেই। আমার প্রশ্ন হচ্ছে হল অফিসের কি সবাইকে একসাথে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়?

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী নয়ন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হল প্রভোস্ট আর হলের যে সমস্ত ওয়ার্ডেন রয়েছে তাদের কর্মতৎপরতা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই আজ হলের এই অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছে। হলের যেসব কর্মচারী আছে তারাও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করে না। দিনে ৪-৫ বার লোডশেডিং হয় প্রতিবার কারেন্ট গেলেই এক ঘণ্টা পর আসে। এই এক ঘণ্টা যারা উপরতলায় থাকে তাদের বিদ্যুৎ আসা পযন্ত অপেক্ষা করতে হয়। শতকোটি টাকা দিয়ে পরিকল্পনাবিহীন মূর্তির মতো হল বানিয়ে রেখেছে কিন্তু বিদ্যুৎ চলে গেলে স্টুডেন্টরা কিভাবে চলাফেরা করবে তার ব্যবস্থা করা হয়নি। আমি হল অফিসে দুইবার গিয়েছিলাম কিন্তু কারোর দেখাই পাইনি। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান চাই।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও শহীদ তাজউদ্দন আহমেদ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আলমগীর কবির বলেন, আমাদের হলে মাত্র একজন লিফটম্যান আছে, ঈদের পর পরই আমরা আর একজন লিফটম্যান পাব এবং ঈদের পর জেনারেটর চালু করার ব্যবস্থা করব। তখন আশা করি এসব সমস্যার সমাধান হবে।

তবে হলের অন্যন্য সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের প্রধান সংকটের জায়গা হচ্ছে কর্মচারী। যেখানে অন্যন্য হলে ৫০ জনের অধিক কর্মচারী রয়েছে, সেখানে এই হলে মাত্র ২৯ জন কর্মচারী। হলে নেই কোনো সুইপার, সুইপার ছাড়া একটা হল কিভাবে চলতে পারে! প্রশাসনকে বার বার এসব কথা বলার পরও কোনো কাজ হচ্ছে না। হলের আরেকটি সমস্যা হচ্ছে ডাইনিং, গ্যাস সংযোগ ছাড়া কোনোভাবেই ডাইনিং চালু করা সম্ভব না। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এসব সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করব৷