কর্মচারীদের হাতে অবরুদ্ধ বুয়েট উপাচার্য, লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুক্তি
২০১৫ সালের পদোন্নতি নীতিমালা বহালের দাবিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদারকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কর্মচারীদের প্রতিনিধি দলকে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন কর্মচারীগণ।
সোমবার (২৪ জুন) বিকেল থেকেই উপচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছেন ৩ শতাধিক কর্মচারী। আন্দোলনের এক পর্যায়ে রাত সাড়ে আটটায় কর্মচারীদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সাতজে আলোচনায় বসেন বুয়েট উপাচার্য। কর্মচারীদের দাবি বাস্তবায়নের পক্ষে উপাচার্য নিজে সুপারিশ করে পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় প্রস্তাবনা তুলবেন বলে আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করেন কর্মচারীগণ।
আন্দোলনরত কর্মচারীরা জানান, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বুয়েট সিন্ডিকেটের ৫৪০তম সভায় ২৭-১২-২০২৩ তারিখের পরবর্তী সময়ে নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রাপ্যতার জন্য বিবেচিত হবেন না বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিষয়টি জানিয়ে গতকাল রোববার বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি অফিস আদেশ জারি করে। এ আদেশে উল্লেখ করা হয়, নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে যাদেরকে পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রদান করা হয়েছে তা অপরিবর্তিত থাকবে। নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে যাদেরকে পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রদান করা হয়েছে, তাদের চাকুরি শেষ হলে/পদত্যাগ করলে/অপসারণ/পদচ্যুত করা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের অর্গানোগ্রাম বহির্ভূত পদ বিলুপ্ত হবে এবং অর্গানোগ্রামভূক্ত মূল পদ শূন্য হবে।
এছাড়াও, ২৭-১২-২০২৩ তারিখের পরবর্তী সময়ে প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রদানে সরকারি নীতিমালা এবং ইউজিসি অনুমোদিত অর্গানোগ্রাম প্রযোজ্য হবে। কোনো কর্মকর্তা ও কর্মচারী যদি সরকারি নীতিমালায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় প্রণীত নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে প্রাপ্ত গ্রেডের চেয়ে উচ্চতর গ্রেড অথবা পদপ্রাপ্ত হন তাহলে তা প্রদান করা হবে। সব সিদ্ধান্ত উল্লেখপূর্বক অনুমোদনের জন্য ইউজিসিতে প্রেরণ করা হবে বলেও ওই অফিস আদেশে জানানো হয়।
তাই তারা দাবি উপস্থাপন করে বলেন, আমরা আগের নীতিমালা বহাল চাই। এই দাবিতে উপচার্যকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। তিনি যেন আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করেন সেই দাবি জানাই। তিনি বহুবার আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু আজকে তার শেষ কার্যদিবসে আমরা এমন একটি প্রজ্ঞাপন দেখলাম যেটি মোটেও কাম্য নয়। আমরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বুয়েটেও ন্যায্য সুবিধাদি চাই।
উল্লেখ্য, অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উপাচার্য বের হয়ে নিজ বাসভবনে যাওয়ার সময় আন্দোলনরত কর্মচারিগণ তাকে উদ্দেশ্য করে 'ভুয়া,ভুয়া' স্লোগান দিয়ে ঘিরে রাখেন। এ সময় সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করলে তিনি জবাব দেন নি।