আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে জাবি, হল ছাড়ছে ছাত্রলীগ

  • জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

আন্দোলনকারীদের নিয়ন্ত্রণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

কোটা সংস্কারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় ছাত্রলীগ ও পুলিশের সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে রাগে-ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রায় ৭-৮ হাজার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীর বাঁশ, রড, লাঠির মহড়ায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে ক্যাম্পাসের সামগ্রিক পরিস্থিতি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয় সাভারের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছাত্রলীগের নেত-কর্মীদের হল ত্যাগ করতে দেখা যায়।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বহিরাগত ও ছাত্রলীগের হামলা ঠেকাতে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল থেকে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থী লাঠিসোঁটা নিয়ে বের হয়ে মহড়া দিতে থাকে। এতে পিছু হটতে থাকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকা বহিরাগত ও স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ক্ষুব্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদগুলোর মাইকে মাইকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের 'যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে বের হন' এমন ঘোষণায় শিক্ষার্থীরা লাঠি-সোঁটা নিয়ে বের হতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা মহড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ-মিছিল শুরু করে বিশমাইল হয়ে ডেইরি গেইট দিয়ে প্রবেশ করে। এরপর তারা ক্যাম্পাস জুড়ে লাঠি-সোঁটা নিয়ে শোডাউন দিতে থাকে।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীর বাঁশ, রড, লাঠি নিয়ে মহড়া দিচ্ছে

গতকাল রাত ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত ৪ দফায় পুলিশের উপস্থিতিতে ভিসি ভবনের অভ্যন্তরে আন্দোলনকারী ও উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এরপর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রলীগ ও ভাড়াটে বহিরাগতদের ধাওয়া করলে তার পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশ্রিত শিক্ষার্থীদের কোনো প্রকার সাহায্য না করার অভিযোগ এনে উপাচার্য বাসভবনে এসে ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

একপর্যায়ে পুলিশ বাধা দিতে আসলে তাদের ওপরও চড়াও হয় শিক্ষার্থীরা। এতে তারা কিছুটা পিছু হটলেও মুহূর্তের মধ্যেই টিয়ারশেল, ছররা গুলি ও রাবার বুলেট ছুঁড়তে থাকে শিক্ষার্থীদের ওপর। এসময় একজন শিক্ষক ও অন্তত ৭ জন সাংবাদিক মারাত্মক আহত হন। এছাড়া প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর হতাহতের ঘটনা ঘটে।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, মধ্যরাতে হামলার প্রতিবাদ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র আক্রমণের প্রতিবাদে মিছিলটি বের করেছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের গুন্ডা বাহিনী কিভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে পারে সেই প্রশ্নের জবাব দিবে কে? শিক্ষার্থীরা চান এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন ছাত্রলীগের অস্তিত্ব থাকতে পারবে না। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি উচ্ছেদ করার জোর দাবি জানান তারা।